ঢাকা : সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রশান্ত মহাসাগরীয় ক্যালিফোর্নিয়া উপকূল থেকে ধরা ব্লুফিন টুনা মাছে তেজস্ক্রিয়তার প্রভাব লক্ষ্য করেছেন বিজ্ঞানীরা। গত বছর জাপানের ফুকুশিমা পরমাণু কেন্দ্রের দুর্ঘটনার কয়েক মাস পর ক্যালিফোর্নিয়া উপকূল থেকে ধরা এসব মাছে তেজষ্ক্রিয়তার প্রমাণ পান বিজ্ঞানীরা।
প্রোসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল একাডেমী অব সায়েন্স ম্যাগাজিনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে টুনা মাছে তেজস্ক্রিয়তার এ তথ্য দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাপানের ফুকুশিমা পরমাণু কেন্দ্রে দুর্ঘটনার পর প্রশান্ত মহাসাগরে ছড়িয়ে পড়া তেজস্ক্রিয়তার দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে ব্লুফিন টুনা।
সাগর পরিভ্রমণরত এসব মাছ জাপানের সমুদ্র এলাকা অতিক্রম করার সময় তেজস্ক্রিয়তার শিকার হয়। বিজ্ঞানীরা এসব মাছের মাংসপেশী পরীক্ষা করে দেখেছেন, ফুকুশিমা দুর্ঘটনার আগে টুনা মাছগুলিতে যে পরিমাণ তেজস্ক্রিয়তা লক্ষ্য করা গেছে এখনকার টুনা মাছে তেজস্ক্রিয়তার পরিমাণ তার চেয়ে ১০ গুণ বেশি।
নিউ ইয়র্কের স্টোনি ব্রুক ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ও গবেষক নিকোলাস ফিশার বলেছেন, ‘এ ঘটনা থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত। কারণ এ গবেষণা প্রমাণ করেছে, হাজার মাইলের দুরত্ব সত্ত্বেও বাস্তু-অঞ্চলগুলি একে অপরের সাথে গভীরভাবে সম্পর্কিত। ’
পারস্পরিক এই সম্পর্কের কারণেই ব্লুফিন টুনা মাছগুলি সাগরে পরিভ্রমণরত অবস্থায় তেজস্ক্রিয়তা আক্রান্ত হয়েছে বলে মত প্রকাশ করেন ফিশার ও তার সহযোগীরা।
তারা জানান, টুনা মাছগুলিতে সিজিয়াম-১৩৪ নামের তেজস্ক্রিয় পরমাণুর উপস্থিতি প্রমাণ করে যে সাগরের পানি ফুকুশিমা কেন্দ্রের দুর্ঘটনার পর তেজস্ক্রিয় দূষণের শিকার হয়েছে। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাগরের প্রাণীসম্পদ।
ব্লুফিন টুনা এই তেজস্ক্রিয়তার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ফুকুশিমা দুর্ঘটনার আগের আর পরের ইয়েলোফিন টুনায় কোন পরিবর্তন দেখতে পাননি বিজ্ঞানীরা।
উল্লেখ্য, বিপুল চাহিদার কারণে প্রতি বছর হাজার হাজার টন ব্লুফিন টুনা সাগর থেকে ধরা হয়। ভোক্তাদের স্বাস্থ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ মাছে তেজস্ক্রিয়তা প্রভাব পরীক্ষা করেন বিজ্ঞানীরা।
তবে পরীক্ষা শেষে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত করেছেন, ব্লুফিন টুনা তেজস্ক্রিয়তা দ্বারা প্রভাবিত হলেও এসব মাছ খাওয়া সম্পূর্ণ নিরাপদ।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৯ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০১২
সম্পাদনা: শামসুন নাহার ও রাইসুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর