ঢাকা: দীর্ঘ ছয় মাস পর পাকিস্তানে আবার বেশ ক’জন সামরিক প্রশিক্ষককে পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে করে ইসলামাবাদ-ওয়াশিংটন সম্পর্কে চলমান সঙ্কটের মধ্যে জঙ্গি দমন অভিযানে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার সম্পর্ক পুনস্থাপিত হচ্ছে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিশেষ বাহিনীর ১০ জনের কিছু কম সেনাকে সীমান্তবর্তী শহর পেশোয়ারে পাঠানো হয়েছে। সেখানে তারা জঙ্গি দমনে পাকিস্তানি সীমান্তরক্ষী সেনাদের প্রশিক্ষণ দেবে।
গত বছরের নভেম্বরে মার্কিন বিমান হামলায় ২৪ পাকিস্তানি সেনা নিহত হওয়ার পর পাকিস্তান সরকার মার্কিন সামরিক প্রশিক্ষককের সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে আনে।
ন্যাটো অবশ্য নভেম্বরের ঘটনাকে দুর্ঘটনা বলে বর্ণনা করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু এ ঘটনায় পাকিস্তানি জনগণের মধ্যে মার্কিন বিরোধী মনোভাব তীব্র রূপ ধারণ করে। অভ্যন্তরীণ চাপে সরকার যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর বিরুদ্ধে কিছু ব্যবস্থা নেয়। আফগানিস্তানে ন্যাটোর রসদ সরবরাহ পথ বন্ধ করে দেয় পাকিস্তান।
এতে করে পাক-মার্কিন সম্পর্কে নতুন করে টানাপোড়েন তৈরি হয়।
ন্যাটোর পথ খুলে না দেওয়ায় সম্প্রতি শিকাগোতে অনুষ্ঠিত ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা পাক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসতেও রাজি হননি।
তার পরে ওসামা বিন লাদেনকে খুঁজে বের করার কাজে সহায়তাকারী ড. শাকিল আফ্রিদিকে আদালত ৩৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়ায় অসন্তুষ্ট হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এর প্রতিবাদে মার্কিন কংগ্রেসের একটি প্যানেল পাকিস্তানের অর্থ অনুদান তিন কোটি ৩০ লাখ ডলার কমানোর প্রস্তাব করেছে।
এসবের পরও যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত মিত্র পাকিস্তান। অন্য সমস্যা থাকলেও এ দু’দেশের মধ্যকার সামরিক সহযোগিতার সম্পর্কের ফাটল সারানো খুব একটা কঠিন নয় কারণ পেন্টাগনের সঙ্গে পাকিস্তানি সেনা বাহিনীর ঘনিষ্ট সম্পর্ক রয়েছে। এর আগে অনেক সেনা কর্মকর্তা যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন।
উল্লেখ্য, পূর্বে মার্কিন বিশেষ বাহিনীর দুই থেকে তিনশ’ সদস্য পাকিস্তানে ছিলেন। তাদের বেশিরভাগই জঙ্গি দমন প্রশিক্ষণে পাকিস্তান বিশেষ বাহিনীকে সহায়তা করেন।
তবে গত বছরের ২ মে ওসামা বিন লাদেন হত্যার পর যুক্তরাষ্ট্রের এ মিশন সঙ্কুচিত করে ফেলে ইসলামাবাদ।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৩ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০১২
সম্পাদনা: জাহাঙ্গীর আলম, নিউজরুম এডিটর