ঢাকা: অর্থনৈতিক সঙ্কট ভয়াবহ প্রভাব ফেলেছে যুক্তরাষ্ট্র ও আমেরিকার অর্থনীতিতে। তার বড় প্রমাণ, গত বছর দেশটিতে লাখপতির সংখ্যা কমেছে এক লাখ ২৯ হাজার।
দ্য বোস্টন কসালটিং গ্রুপের (বিসিজি) বিশ্ব সম্পদ জরিপে দেখা গেছে, ২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে লাখপতির সংখ্যা ৫২ লাখ ৬৩ হাজার থেকে কমে ৫১ লাখ ৩৪ হাজারে নেমে গেছে। বিনিয়োগযোগ্য সম্পদসহ স্থাবর সম্পদ মিলিয়ে অর্থমূল্য ১০ লাখ ডলার হলেই তাকে লাখপতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।
অন্য দিকে উত্তর আমেরিকার ব্যক্তিগত সম্পদের মোট পরিমাণ শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ কমে ৩৮ লাখ কোটিতে নেমে এসেছে।
জরিপে আরো দেখা গেছে, সবচে ধনীরাই সবচে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উত্তর আমেরিকায় যাদের বিনিয়োগযোগ্য ব্যক্তিগত সম্পদ ১০ কোটি ডলারের বেশি তাদের সম্পদ কমেছে ২ দশমিক ৪ শতাংশ। আর এ ধরনের লাখপতির সংখ্যা গত বছরে কমেছে খুব কম। ২ হাজার ৯শ’ ৮৯ থেকে সামান্য কমে এখন ২ হাজার ৯শ’ ২৮ জনে নেমেছে।
ব্যক্তিগত সম্পদ এতো কমে যাওয়ার বড় কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে শেয়ার বাজারের মন্দা।
আজকালের ধনীরা বেশিরভাগই পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ওপর নির্ভরশীল। আর এ নির্ভরশীলতা দিন দিন বাড়ছে। গত বছর পুঁজিবাজারে মন্দার কারণে অনেক লাখপতিরা লোকসান দিয়ে স্ট্যাটাস হারিয়েছেন। যারা এখনো টিকে আছেন তাদের অবস্থাও বেশ নাজুক। বিসিজির হিসাবে ২০১১ সালে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকৃত অর্থ ৩ দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে।
বর্তমানে বিশ্বজুড়ে লাখপতির সংখ্যার চিত্রটা একটু বড় তবে আমেরিকার মতো অতোটা দ্রুত হ্রাসমান নয়। গত বছর যুক্তরাষ্ট্র এক লাখ ৩০ হাজারের মতো লাখপতি হারিয়েছে আর বাকি বিশ্ব থেকে লাখপতি হারিয়ে গেছে এক লাখ ৭৫ হাজার জন। যেখানে বিসিজির হিসাবে, বর্তমানে সারা বিশ্বে পারিবারিক সম্পদের হিসাবে লাখপতির সংখ্যা এক কোটি ২৬ লাখ জন।
বিসিজির প্রতিবেদনে আরো জানা যায়, জনসংখ্যার অনুপাতে সবচে বেশি লাখপতি রয়েছে সিংগাপুরে। এ নগর রাষ্ট্রের ১৭ শতাংশ পরিবারই লাখপতি।
২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে লাখপতির সংখ্যা কমলেও বিশ্বের আগামী ভবিষ্যৎ অনেক উজ্জল দেখতে পাচ্ছে বিসিজি। তারা ধারণা করছে, এশিয়া প্রশান্তমাহসাগরীয় অঞ্চলে প্রতি বছর লাখপতির সংখ্যা ৬ শতাংশ করে বাড়বে। আর বিশেষ করে বিশ্বের উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোতেই লাখপতি পরিবার সবচে দ্রুত বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩২ ঘণ্টা, জুন ০১, ২০১২
সম্পাদনা: জাহাঙ্গীর আলম, নিউজরুম এডিটর