ঢাকা, বুধবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০২ জিলকদ ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

কাশ্মীরে হামলার ‘জবাব দিতে’ সামরিক বাহিনীকে ‘সবুজ সংকেত’ মোদীর

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১:০৬, এপ্রিল ২৯, ২০২৫
কাশ্মীরে হামলার ‘জবাব দিতে’ সামরিক বাহিনীকে ‘সবুজ সংকেত’ মোদীর

কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে সাম্প্রতিক হামলার ‘জবাব দিতে’ নিজ দেশের সশস্ত্র বাহিনীকে হামলার ‘সম্পূর্ণ অভিযানিক স্বাধীনতা’ দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।  তিন বাহিনীর প্রধান, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে তিনি ‘শত্রুপক্ষের ওপর অভিযানের’ এই সংকেত দেন।

 নির্দিষ্ট করে কোথায় হামলা করা হবে, সে ব্যাপারে স্পষ্ট কোনো শব্দ ব্যবহার না করলেও প্রধানমন্ত্রীর এ অনুমতি পাকিস্তানের দিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

খবরে বলা হয়েছে, ভারতশাসিত কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার পহেলগাঁও অঞ্চলের বৈসরন উপত্যকায় বন্দুক হামলার জবাব দিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সেনাবাহিনীকে ‘সম্পূর্ণ অভিযানিক স্বাধীনতা’ দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। সূত্র অনুযায়ী, হামলার জবাবে কবে, কোথায় এবং কীভাবে পদক্ষেপ নেওয়া হবে, সে সিদ্ধান্ত এখন সেনাবাহিনীর ওপরই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে অনুষ্ঠিত উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নেন তিন বাহিনীর প্রধান, চিফ অব ডিফেন্স অনীল চৌহান, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল। তাদের সঙ্গে বৈঠকে আলোচনার মাধ্যমে হামলার জবাব দেওয়া নিয়ে সিদ্ধান্ত জানান মোদী।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছেন, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ভারতের জাতীয় প্রতিশ্রুতি অটুট এবং তিনি ভারতের সামরিক বাহিনীর ওপর ‘পূর্ণ আস্থা’ রাখেন।

প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনীর শীর্ষ নেতৃত্বকে জানিয়ে দেন, হামলার প্রতিক্রিয়ায় কখন, কোথায় এবং কীভাবে অভিযান চালানো হবে সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পূর্ণ স্বাধীনতা তাদের হাতে।

এনডিটিভিকে দেওয়া এক অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের প্রতিজ্ঞা চূড়ান্ত ও অটল।

অন্য একটি সূত্রের মতে, এই মন্তব্যের মধ্য দিয়ে তিনি পহেলগাঁও হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে সামরিক প্রতিশোধের পথ উন্মুক্ত করে দিয়েছেন।

জানা গেছে, বৈঠকের কিছুক্ষণ পরই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) প্রধান মোহন ভাগবত প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে পৌঁছেন।

এর আগে মোদী কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, সন্ত্রাসের শেষ চিহ্নও উপড়ে ফেলতে হবে। ১৪০ কোটির ইচ্ছাশক্তি সন্ত্রাসের হোতাদের মেরুদণ্ড ভেঙে দেবে। তার দৃঢ় বার্তা, যারা এই হামলার পরিকল্পনা ও সহায়তা দিয়েছে, তাদের প্রত্যেককে খুঁজে বের করে শাস্তি দেওয়া হবে।

গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে বন্দুক হামলায় ২৮ জন নিহত হন। ভারতের গোয়েন্দাদের দাবি, হামলার দায় স্বীকার করেছে 'দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট' নামে একটি সংগঠন, যারা পাকিস্তানভিত্তিক নিষিদ্ধ সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার ছায়াসংগঠন। ভারতীয় তদন্তকারীদের মতে, হামলার পেছনে পাকিস্তানেরই জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে। ভারত ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, জাপান ও ইউরোপীয় কিছু দেশের কূটনীতিকদের কাছে প্রমাণ পেশ করেছে।

ভয়াবহ এ ঘটনার পর ভারত পাকিস্তানিদের জন্য জারি করা সব ভিসা বাতিল করে। তবে, শুধুমাত্র পাক হিন্দু ও দীর্ঘমেয়াদি অনুমতিপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের ছাড় দেওয়া হয়। এ ছাড়া ১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত সিন্ধু নদীর পানি বণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। পাকিস্তান এটিকে ‘যুদ্ধের ঘোষণা’ বলে আখ্যা দিয়েছে এবং পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে ভারতীয় নাগরিকদের জন্য ভিসা বাতিল করেছে। এমনকি ভারত হামলা চালালে কড়া প্রতিরোধের ঘোষণাও দিয়েছে দেশটি।

এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।