ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৯ শ্রাবণ ১৪৩২, ১৪ আগস্ট ২০২৫, ১৯ সফর ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ গড়ার মিশনে নেতানিয়াহু, ঝুঁকিতে মিসর-জর্দানও

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:০২, আগস্ট ১৩, ২০২৫
‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ গড়ার মিশনে নেতানিয়াহু, ঝুঁকিতে মিসর-জর্দানও বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ পরিকল্পনায় তিনি ‘ঐতিহাসিক ও আধ্যাত্মিক’ এক মিশনে রয়েছেন।

এই পরিকল্পনায় ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের জন্য নির্ধারিত অঞ্চল ছাড়াও বর্তমান জর্দান ও মিসরের কিছু অংশ অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।

মঙ্গলবার ইসরায়েলি সম্প্রচারমাধ্যম আই২৪ নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু তার মিশনকে ‘প্রজন্মের মিশন’ হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, ‘যুগের পর যুগ ইহুদিরা এখানে আসার স্বপ্ন দেখেছে, আর আমাদের পরও বহু প্রজন্ম আসবে। ’

‘গ্রেটার ইসরায়েল’ ধারণাটি ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর প্রচলিত হয়, যেখানে দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেম, পশ্চিম তীর, গাজা, মিসরের সিনাই উপদ্বীপ এবং সিরিয়ার গোলান মালভূমি অন্তর্ভুক্ত। প্রথমদিকের জায়নিস্ট নেতা এবং লিকুদ পার্টির আদর্শিক গুরু জেভ জাবোটিনস্কি বর্তমান জর্দানকেও এই মানচিত্রে যুক্ত করেছিলেন।

সাক্ষাৎকারে সাবেক নেসেট সদস্য শ্যারন গাল তাকে ‘গ্রেটার ইসরায়েল’-এর মানচিত্র খোদাই করা একটি তাবিজ দেন। এ বিষয়ে তিনি কতটা সংযুক্ত—এমন প্রশ্নে নেতানিয়াহুর উত্তর, ‘খুবই’।  

লিকুদ পার্টির রিভিশনিস্ট জায়নিজম ভাবধারার কেন্দ্রে রয়েছে এই ‘গ্রেটার ইসরায়েল’ ধারণা। নেতানিয়াহু বরাবরই ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের বিরোধিতা করেছেন।  

সমালোচকদের অভিযোগ, অবৈধ বসতি সম্প্রসারণের মধ্য দিয়ে তিনি এমন বাস্তবতা তৈরি করছেন, যা ভবিষ্যতে স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে অসম্ভব করে তুলবে। অনেক বিশ্লেষকের মতে, গাজায় চলমান হত্যাযজ্ঞ এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের গতি বাড়িয়ে দিচ্ছে।

মঙ্গলবার নেতানিয়াহু আরও বলেন, সামরিক বাহিনী গাজায় আরও বিস্তৃত হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে, এর মধ্যেই ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের অবরুদ্ধ গাজা থেকে চলে যেতে দেবে।

তিনি এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বলেন, প্রথমে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে, পরে চাইলে পুরো এলাকা থেকেও—আমরা তাদের যেতে দেব। ‘যুদ্ধ চলাকালীন গাজার ভেতরেই এই সুযোগ থাকবে, আর আমরা চাইলে গাজা থেকেও তাদের যেতে দিতে প্রস্তুত। ’

ইসরায়েলে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় হামলা চালানো শুরু করে ২০২৩ সালের অক্টোবরে। সেই থেকে এ পর্যন্ত উপত্যকাটিতে ৬১ হাজার ৬১ হাজার ৬০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

ইসরায়েল আন্তর্জাতিকভাবে চলমান নিন্দার মুখে রয়েছে। নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা এবং গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মামলা রয়েছে।

আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।