ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, গাজায় তাদের চলমান অভিযান শেষে পুরো গাজা উপত্যকা ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
ডিসেম্বরের পর প্রথমবারের মতো জনসম্মুখে আসা নেতানিয়াহু যুদ্ধ শেষ করার জন্য উত্থাপন করেছেন একগুচ্ছ কঠোর শর্ত, যা বিশ্লেষকরা ‘উচ্চ বিলাসি’ হিসেবে অভিহিত করছেন।
গত কয়েক দিনে গাজাজুড়ে ইসরায়েলের লাগাতার বোমাবর্ষণে শত শত ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। শুধু বুধবার ভোর থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ৮২ জন প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানা গেছে। একদিকে এই রক্তপাত, অন্যদিকে চরম খাদ্য সংকটে ধুঁকছে গাজা; অবরোধের কারণে সীমিত সংখ্যক ত্রাণবাহী ট্রাক ঢুকতে পারছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় নগণ্য।
নেতানিয়াহু বলেছেন, যদি কোনো অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময়ের সুযোগ আসে, তবে ইসরায়েল সেটি বিবেচনা করতে পারে। তবে একইসঙ্গে তিনি যুদ্ধ থামানোর জন্য কিছু শর্ত দিয়েছেন। তার উত্থাপিত শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে: ইসরায়েলি বন্দিদের সম্পূর্ণ মুক্তি, হামাসের অস্ত্রত্যাগ, হামাস নেতৃত্বের গাজা থেকে নির্বাসন এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের উৎখাত।
ট্রাম্প এই পরিকল্পনায় গাজাকে ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভিয়েরা’ বানানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি প্রশাসনে পরিচালনার কথা বলেছিলেন। এবারই প্রথম নেতানিয়াহু এই বিতর্কিত পরিকল্পনাকে যুদ্ধবিরতির শর্ত হিসেবে উল্লেখ করলেন। উল্লেখযোগ্য, বহু দেশ ও মানবাধিকার সংগঠন এই পরিকল্পনাকে ‘জাতিগত নির্মূল’ হিসেবে নিন্দা করেছে।
নেতানিয়াহু আরও বলেন, আমাদের কৌশলগত স্বাধীনতা বজায় রাখতে হলে মানবিক সংকট এড়াতে হবে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মিলিতভাবে তৈরি করা একটি বিতর্কিত ত্রাণ বিতরণ পরিকল্পনার কথাও উল্লেখ করেন, যেখানে হামাস যেন ত্রাণ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে সে ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যদিও হামাস বরাবরই দাবি করে এসেছে, তারা কোনো ত্রাণের উপর নিয়ন্ত্রণ করে না।
এই ঘোষণার পর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উদ্বেগ আরও বেড়েছে, কারণ নেতানিয়াহুর বক্তব্য গাজায় দীর্ঘমেয়াদী দখলের ইঙ্গিত দিচ্ছেন, যা ভবিষ্যতে সংকটকে আরও গভীর করে তুলতে পারে।
সূত্র: আল জাজিরা
এমএম