মার্কিন প্রশাসন বৃহস্পতিবার (২২ মে) হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তি করার অনুমোদন বাতিল করেছে। এর ফলে, নতুন কোনো বিদেশি শিক্ষার্থী আর হার্ভার্ডে ভর্তি হতে পারবে না, আর যারা বর্তমানে সেখানে পড়ছে, তাদের হয় অন্যত্র স্থানান্তরিত হতে হবে, নয়তো যুক্তরাষ্ট্রে থাকার বৈধতা হারাবে।
এই সিদ্ধান্তে হার্ভার্ডের প্রায় ৬,৮০০ শিক্ষার্থী (পুরো শিক্ষার্থী সংখ্যার ২৭ শতাংশ) সরাসরি সমস্যায় পড়তে পারে। ফলে শুধু হার্ভার্ড নয়, পুরো উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের শক্তির উৎস এখন বড় সংকটে।
এই সিদ্ধান্ত এসেছে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিভাগের একটি তদন্তের পর, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের তথ্য চাওয়া হয়। হার্ভার্ড জানিয়েছে, সরকারের এই চাহিদা আইনসঙ্গত নয় এবং শিক্ষার্থীদের গোপনীয়তা লঙ্ঘনের ঝুঁকি তৈরি করে। হার্ভার্ডের মিডিয়া পরিচালক একে "অবৈধ ও প্রতিহিংসামূলক" পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রশাসনের এ সিদ্ধান্ত আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। এর আগেও পাঠক্রম, ভর্তি নীতিমালা এবং নিয়োগ প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপের অভিযোগে হার্ভার্ড ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি নজিরবিহীন পদক্ষেপ, কারণ এত বড় প্রতিষ্ঠানের বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমোদন এভাবে কখনও বাতিল হয়নি। শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে, অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, হার্ভার্ড যদি বিশ্বের সেরা মেধাবীদের আর নিতে না পারে, তাহলে সেটি তার মূল পরিচয় হারাবে।
এই সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতিতেও বড় ধাক্কা দিতে পারে। হার্ভার্ডে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা তুলনামূলক বেশি ফি দিয়ে থাকে— বছরে একজন শিক্ষার্থীর ব্যয় প্রায় ৮৭ হাজার ডলার পর্যন্ত হতে পারে।
সবশেষে, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিভাগের চিঠিতে বিশ্ববিদ্যালয়কে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে নতুনভাবে নির্ধারিত ছয়টি মানদণ্ড অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের তথ্য দিতে বলা হয়েছে। হার্ভার্ড এখন আইনি লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এমএম