যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইরান তাদের পারমাণবিক কর্মসূচির ওপর পরিদর্শনের অনুমতি দেয়নি কিংবা ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ত্যাগ করতেও রাজি হয়নি।
শুক্রবার এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি বলেন, তার বিশ্বাস (যুক্তরাষ্ট্রের হামলা) তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে স্থায়ীভাবে পিছিয়ে দিতে পরেছে, যদিও তিনি স্বীকার করেন ইরান অন্য কোনো স্থানে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি আবার শুরু করতে পারে।
হোয়াইট হাউসে স্বাধীনতা দিবসের উদযাপনের পর নিউ জার্সির উদ্দেশে রওনা দেওয়ার পথে ট্রাম্প বলেন, আমার মনে হয় তারা (ইরান) অন্য কোনো স্থানে শুরু করতে বাধ্য হবে। আর যদি তারা সত্যিই আবার শুরু করে, তবে সেটা একটা বড় সমস্যা হবে।
ট্রাম্প আরও জানান, ইরানি কর্মকর্তারা তার সঙ্গে বৈঠক করতে চান এবং তিনি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে আসন্ন বৈঠকে ইরান ও সম্ভাব্য গাজা যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করবেন।
এদিকে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের বোমাবর্ষণের পর ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে পরিদর্শনের সুযোগ না থাকায় তারা তাদের পরিদর্শক দল সরিয়ে নিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল দাবি করছে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে। তবে ইরান বারবার বলেছে, তাদের কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ, বেসামরিক উদ্দেশ্যে। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এবং আইএইএ প্রধান রাফায়েল গ্রোসি কেউই এমন কোনো প্রমাণ পাননি যে ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে। গ্রোসি ইরানে আবারও পরিদর্শন ও নজরদারির কার্যক্রম শুরু করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের হামলার পরও ইরান পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ সংক্রান্ত চুক্তিতে (এনপিটি) থেকে বেরিয়ে আসেনি। এর প্রতি গভীর অবিশ্বাস প্রকাশ করেছে। ইরানি কর্মকর্তারা আইএইএর কঠোর সমালোচনা করেছেন, কারণ সংস্থাটি ওই হামলাগুলো নিন্দা না করার পাশাপাশি ১২ জুন একটি প্রস্তাব পাস করেছিল, যেখানে তেহরানকে পরমাণু দায়বদ্ধতা লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয় ইসরায়েলের হামলার মাত্র এক দিন আগে।
এর জবাবে, বুধবার ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান আইএইএ'র সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার নির্দেশ দেন। এর আগেই ইরানের পার্লামেন্ট এ সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করার একটি বিল পাস করেছিল, যা পরে গার্ডিয়ান কাউন্সিল অনুমোদন দেয়।
কাউন্সিলের মুখপাত্র হাদি তাহান নাজিফ বলেন, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি পূর্ণ সম্মান জানাতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এমএম