ঢাকা, রবিবার, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২, ১৩ জুলাই ২০২৫, ১৭ মহররম ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

গরম থেকে বাঁচতে অভিনব কৌশল আফগান ট্যাক্সিচালকদের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫:১০, জুলাই ১৩, ২০২৫
গরম থেকে বাঁচতে অভিনব কৌশল আফগান ট্যাক্সিচালকদের

আফগানিস্তানের প্রচণ্ড গরমে নিত্যদিনের যাত্রা যেন এক বিপর্যয়। তবে দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর কান্দাহারের কিছু ট্যাক্সিচালক নিজস্ব উদ্যোগে গরম মোকাবিলায় আবিষ্কার করেছেন অভিনব এক পদ্ধতি—হাতে তৈরি ‘এয়ার কুলার’।

শহরের রাস্তায় এখন ট্যাক্সির ছাদে দেখা যাচ্ছে পুরনো, ধুলোমাখা ড্রাম আর সেগুলোর সঙ্গে লাগানো মোটা পাইপ। দেখতে অদ্ভুত লাগলেও এগুলোই চালকদের নিজেদের বানানো ঠাণ্ডা হাওয়ার ব্যবস্থা।  

ঘনঘন ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যাওয়া তাপমাত্রার শহর কান্দাহারে এসি থাকা সত্ত্বেও তা প্রায়ই নষ্ট হয়ে যায় বলে জানান চালকরা। বার্তা সংস্থা এএফপিকে এক চালক আব্দুল বারী বলেন, এই কুলার এসির চেয়েও ভালো কাজ করে। এসি শুধু সামনের দিকটা ঠান্ডা করে, আর কুলারটা পুরো গাড়িতে বাতাস ছড়িয়ে দেয়।

এএফপির ভিডিওতে দেখা যায়, বারী একটি মোটা পাইপ আঠালো টেপ দিয়ে গাড়ির জানালায় বসাচ্ছেন, যাতে ঠান্ডা হাওয়া ভেতরে আসে। এ সময় তার এক সহকারী ছাদে উঠে কুলারের মূল অংশটি ঠিক করছেন। তবে প্রতিদিন অন্তত দুইবার পানির ট্যাংক ভরার ঝামেলা রয়েছে। তবুও বারী বলেন, আমার জন্য এটা খুব ভালো কাজ করে।

বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র ও জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ দেশ আফগানিস্তান। চলতি মৌসুমে দেশটির বেশিরভাগ অঞ্চলে তাপমাত্রা আরও বাড়বে বলে সতর্ক করেছে দেশটির আবহাওয়া কর্তৃপক্ষ।

আরেক ট্যাক্সিচালক গুল মোহাম্মদ বলেন, কয়েক বছর আগেই তিনি এ ধরনের কুলার ব্যবহার শুরু করেন। ৩২ বছর বয়সী গুল মোহাম্মদ বলেন, এসি কাজ করত না, আর মেরামতের খরচ অনেক। তাই এক টেকনিশিয়ানের কাছে গিয়ে নিজের মতো করে একটি কুলার বানিয়ে নিয়েছিলাম।

মাত্র তিন হাজার আফগানি খরচ করে বানানো সেই কুলার এখন যাত্রীদের কাছেও প্রশংসিত। যাত্রী নোরুল্লাহ বলেন, যখন কুলার থাকে না, তখন টিকে থাকাই কঠিন হয়ে পড়ে। এমনকি গরমের জন্য আমি সবসময় ওষুধ সঙ্গে রাখি। সম্প্রতি গরমজনিত অসুস্থতায় তাকে স্যালাইন নিতে হয়েছিল বলেও জানান তিনি।

চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত ছিল আফগানিস্তানের ইতিহাসের সবচেয়ে উষ্ণ বসন্তকাল। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা জানিয়েছে, দেশজুড়ে ভয়াবহ খরার কারণে কৃষিকাজ ও গ্রামীণ জীবিকা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বারবার সতর্ক করে আসছেন—জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আফগানিস্তানের মানবিক সংকট আরও গভীর হবে।

২০২১ সালের আগস্টে তালেবান ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে জাতিসংঘের জলবায়ু বিষয়ক আলোচনায় আফগানিস্তান আর অংশ নিতে পারছে না।

আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।