আফগানিস্তান পুনর্দখলের পর দেশটির জাতীয় পতাকার পরিবর্তে নিজেদের সাদা পতাকা ওড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে তালেবান। পতাকাটিতে শাহাদাতের বাণী ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’ অর্থাৎ আল্লাহ ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই, মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসুল লেখা আছে।
২০ বছর আফগানিস্তানকে নিজেদের কুক্ষিগত করে রেখেছিল যুক্তরাষ্ট্র। তারা চলে যাওয়ার পর দেশটির নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান। গত রোববার (১২ অক্টোবর) তালেবান সরকার জানায়, তারা পতাকা পরিবর্তনের পদক্ষেপ শুরু করেছে।
দেশটির পতাকা পরিবর্তনের ইতিহাস নতুন নয়। মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার সংযোগস্থলে অবস্থিত দেশটি এক শতাব্দীরও বেশি আগে যখন ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা লাভ করে, তখন থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৮ বার পাল্টেছে আফগানিস্তানের জাতীয় পতাকা।
সরকারের এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ নাগরিকরা। তারা বলছেন, আফগান জাতীয় পতাকা তাদের স্বাধীনতা ও ঐক্যের প্রতীক, যা সরিয়ে ফেলা জনগণের মর্যাদার ওপর আঘাতের শামিল। তবে আফগান ইতিহাসবিদ ও বিশ্লেষকরা বিষয়টিকে দেশের ‘রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রতীকী ধারাবাহিকতা’ হিসেবে দেখছেন।
ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, আফগানিস্তানের পতাকার প্রতিটি পরিবর্তন একটি নতুন সরকার, আদর্শ বা রাজনৈতিক শক্তির উত্থানের পরিচয় দেয়। প্রতিবারই পতাকার নকশা, রং ও প্রতীক পরিবর্তনের মাধ্যমে নতুন শাসকের পরিচয় তুলে ধরা হয়েছে। চলুন জেনে আসা যাক, শত বছরে ১৮ বার পতাকা বদলের ইতিহাস। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমের পাঠকদের জন্য আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে তথ্যগুলো তুলে ধরেছেন সিনিয়র নিউজরুম এডিটর মো. জুবাইর।
১৯০১–১৯১৯
ব্রিটিশ শাসনামলের শুরুর দিকে আফগানিস্তানের শাসক ছিলেন আমির আব্দুর রহমান খান। তাকে ‘লৌহ আমির’ বা ‘জাতির আলো ও বিশ্বাস’ বলা হতো। তার সময়কালে আফগান পতাকার রং ছিল কালো। পতাকায় আঁকা থাকতো একটি মসজিদ, দুই পাশে দণ্ডসহ পতাকা, নিচে ছিল দুটি তরবারি। এই শৈলী ঘেরা ছিল বৃন্ত দিয়ে। ১৯০১ সালে আমির আব্দুর রহমান খানের মৃত্যু হলে ক্ষমতায় আসেন তার বড় ছেলে হাবিবুল্লাহ খান। তিনি যখন আফগানিস্তানের শাসনভার নেন, তখন দেশটি ছিল ব্রিটিশ প্রটেক্টরেটের অধীনে। আমির হাবিবুল্লাহ তার বাবার কালো পতাকায় পরিবর্তন আনেন; যেখানে মসজিদ, দুটি ছেদযুক্ত তরবারি ও একটি বৃন্ত দিয়ে সজ্জিত ছিল। ১৯১৯ সালে তার হত্যাকাণ্ডের আগ পর্যন্ত কালো বর্ণের পতাকা ব্যবহার করা হতো আফগানিস্তানে।
১৯২১
দুই বছর পর প্রিন্স আমানুল্লাহ খানের নেতৃত্বে আফগানিস্তান ব্রিটিশ শাসন থেকে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা লাভ করে। প্রিন্স আমানুল্লাহ ছিলেন আমির হাবিবুল্লাহ খানের ছেলে। তিনিও তার বাবার নকশা করা পতাকায় পরিবর্তন আনেন। পতাকার সিলে মসজিদ ও তরবারি ঠিকই ছিল। তবে নকশায় ছিল পরিবর্তন। মসজিদের ওপর মাথার তাজ বা মুকুট ব্যবহার করেছিলেন প্রিন্স আমানুল্লাহ। নিচের দিকে ছিল ছোট দুটি ছেদযুক্ত তরবারি। তবে আগের মতো বৃন্ত দিয়ে নয়, আমানুল্লাহ পতাকার সিল নকশা করেছিলেন বিকিরণযুক্ত অষ্টকোণ দিয়ে।
১৯২৬
আফগানিস্তানকে রাজ্য হিসেবে ঘোষণার পর পতাকা ও সিলের নকশা আবার পরিবর্তন করেন আমানুল্লাহ খান। পতাকার অষ্টকোণকে বৃন্তে পরিবর্তন করা হয়, তরবারি সরানো হয় ও মসজিদে মিহরাবকে মক্কামুখী করা হয়। ইতিহাস বলে আমানুল্লাহ তার শাসনকালে একাধিকবার পতাকার নকশা পরিবর্তন করেছেন।
১৯২৯
প্রিন্স আমানুল্লাহ খান নিজ শাসনামলে বিপ্লবের মুখোমুখি হন; পরে দেশ থেকে পালান। তার ভাই ইনায়েতউল্লাহকে রাষ্ট্রের মুকুট পরানো হয়, কিন্তু তিনি কয়েক দিনের মধ্যে পদত্যাগ করেন। এরপর আফগানিস্তান হাবিবুল্লাহ কালাকানির অধীনে আমিরাত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। এ সময়ে পতাকা পরিবর্তিত হয়ে ত্রিবর্ণে (লাল-কালো-সাদা) রূপান্তরিত হয়, যা ১৩ শতকের মঙ্গোল আক্রমণকারীদের পতাকার অনুরূপ।
১৯২৯
আমানুল্লাহর চাচাতো ভাই মোহাম্মদ নাদির শাহ উপজাতি বিদ্রোহ নেতৃত্ব দেন এবং আবারও আফগানিস্তানকে রাজ্য হিসেবে ঘোষণা করেন। এ সময় আবার পতাকার নকশা পরিবর্তন হয়। পতাকা নকশা করা হয় কালো-লাল-সবুজ রঙে, যা আমানুল্লাহ তার শাসনামলে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য ব্যবহার করেছিলেন। পতাকার কালো রঙ অতীতের প্রতীক, লাল স্বাধীনতার জন্য ত্যাগ করা রক্ত ও সবুজ রঙকে সমৃদ্ধি হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছিল। পতাকার কেন্দ্রে আমানুল্লাহর মূল সিল রাখা হয়।
১৯৩৩
নাদির শাহকে হত্যার পর তার ছেলে মোহাম্মদ জাহির শাহ রাজা হন এবং দেশের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনেন। তিনি তার বাবার শেষ পতাকাটিই বজায় রাখেন। তবে সিলের নকশায় পরিবর্তন আনা হয়। পতাকা থাকা মসজিদটি রাজ্যের প্রথম পতাকার মতো ছিল। নাদির শাহর শাসনামলের হিজরি সাল সিলে লেখা হয়। মূল সিলের চারপাশে গমের শীষ দ্বারা সাজানো হয়।
এই সময়কাল আফগানিস্তানের পতাকা ও শাসনব্যবস্থায় রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার সূচনা হিসেবে চিহ্নিত।
১৯৭৩
মোহাম্মদ জাহির শাহকে তার চাচাতো ভাই মোহাম্মদ দাউদ খান সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে উৎখাত করেন। তিনি আফগানিস্তানকে গণতন্ত্রে রূপান্তরিত করেন। প্রায় এক বছর ধরে পতাকা মূলত অপরিবর্তিত থাকে, তবে নাদির শাহর শাসনের হিজরি সাল সরিয়ে দেওয়া হয়।
১৯৭৪
গণতন্ত্রের পতাকা পরিবর্তিত হয়। রঙগুলো একই রাখা হলেও তাদের অবস্থান পরিবর্তন করা হয়। পতাকার এক কোণে একটি বিরাজমান ঈগলকে মিহরাব প্রদর্শন করতে ওড়ানো হয় এবং এর চারপাশে গমের শীষ রাখা হয়।
১৯৭৮
দাউদকে কমিউনিস্ট অভ্যুত্থানে হত্যা করা হয় এবং নূর মোহাম্মদ তারাকি প্রেসিডেন্ট হন। সেবার প্রথমদিকে পতাকার সিল বাদ দেওয়া হয়। পরে পুরনো পতাকা বাদ দিয়ে লাল রঙের পতাকা ওড়ানো হয়। এই পতাকার বাঁ পাশের উপরের দিকে কোণায় একটি সিল আঁকা হয়, যার মধ্যে লেখা ছিল ‘খালক’, যার অর্থ জনগণ, এবং এর নিচে একটি ফিতায় অভ্যুত্থানের প্রশংসা লেখা হয়। তবে জনগণ তাদের শাসকের প্রতি সন্তুষ্ট ছিল না। রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে দেশটি অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে।
১৯৭৯–১৯৮০
১৯৭৯ সালের সেপ্টেম্বরে নূর মোহাম্মদ তারাকি নিহত হন। ক্ষমতা দখল করেন হাফিজুল্লাহ আমিন। ডিসেম্বরে কমিউনিস্ট সরকারকে ‘সহায়তার’ জন্য আফগানিস্তানে ঢোকে সোভিয়েত ইউনিয়ন। তখন প্রেসিডেন্ট হন বাবরক কর্মাল। ১৯৮০ সালে পতাকা ও সিলের নকশা পরিবর্তিত হয়। নতুন সিলে সবুজ মাঠের ওপর মিহরাব, তার ওপর উদিত সূর্য, একটি খোলা বই আঁকা হয়। এর উপরে কমিউনিস্ট শাসকদের প্রতীক হিসেবে লাল তারা এবং আফগানিস্তানের শিল্পকে তুলে ধরতে গমের ফুল ও চাকা দেওয়া হয়। সিলের চারপাশে গমের শীষের বৃন্তও আঁকা হয়।
১৯৮৬
কর্মালকে সরিয়ে দিয়ে সোভিয়েত-নিয়ন্ত্রিত সরকারের নেতৃত্বে নতুন প্রেসিডেন্ট হন মোহাম্মদ নাজিবুল্লাহ। দেশজুড়ে প্রায় ৯০ হাজার মুজাহিদিনের প্রতিরোধ বৃদ্ধি পায়। পতাকার সিলের নকশাতেও পরিবর্তন আনা হয়। সরিয়ে ফেলা হয় লাল তারা ও খোলা বই (যা কমিউনিস্ট ম্যানিফেস্টো হিসেবে ধরা হতো); কগহুইলকে নিচে সরানো হয়।
এই পরিবর্তনগুলোকে আফগানিস্তানের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও কমিউনিস্ট শাসনের প্রতিরোধের ইতিহাস হিসেবে গণ্য করা হয়।
এপ্রিল ১৯৯২
সোভিয়েত সেনাদের আফগানিস্তান ত্যাগের তিন বছর পর আহমদ শাহ মাসউদের মুজাহিদিন কাবুল দখল করে। জুনে বুরহানউদ্দিন রব্বানী আফগানিস্তানকে একটি ইসলামিক রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করেন। ডিসেম্বর মাসে পতাকা পরিবর্তিত হয়। নতুন পতাকার রঙগুলো অনেক মুসলিম দেশের পতাকার অনুরূপ। সিল হিসেবে রাখা হয় আমানুল্লাহ খানের মসজিদ ও নাদির শাহের গমের শীষ। সিলের চারপাশে মুজাহিদিনের বিজয় প্রকাশক তরবারি ও উপরের অংশে লেখা থাকে শাহাদা।
১৯৯৪-১৯৯৬
রব্বানীর শাসনকে নিয়ে অসন্তোষ বৃদ্ধি পায়। জানুয়ারিতে একটি অভ্যুত্থানের চেষ্টা হয়, যা তার সরকারকে দুর্বল করে। অক্টোবর মাসে শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রকাশ্যে আসে তালেবান। তারা দ্রুত দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল দখল করে ও কাবুলের দিকে অগ্রসর হয়। দুই বছরের লড়াইয়ের পর ১৯৯৬ সালে তালেবান কাবুল দখল করে আফগানিস্তানকে একটি ইসলামিক আমিরাত ঘোষণা করে। পতাকা প্রাথমিকভাবে সম্পূর্ণ সাদা রাখা হয়, এবং পরবর্তী বছর কালো রঙে শাহাদা লেখা যোগ করা হয়।
এই পরিবর্তনগুলো আফগানিস্তানের রাজনৈতিক ইতিহাসে শক্তিশালী গোষ্ঠী ও শাসনের উত্থান-পতনকে প্রতিফলিত করে।
১৯৯৭
আল-কায়েদার নেতা ওসামা বিন লাদেন আফগানিস্তানে ফিরে আসেন এবং তালেবান নেতা মোল্লা ওমারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলেন।
সেপ্টেম্বর ২০০১
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার, পেন্টাগন ও পেনসিলভানিয়ার একটি মাঠে চারটি বাণিজ্যিক বিমান আক্রমণ চালানো হয়। এই হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্র আল-কায়েদাকে দায়ী করে এবং তালেবানকে বিন লাদেন হস্তান্তর করতে নির্দেশ দেয়। তালেবান জানায় তারা বিন লাদেনকে একটি নিরপেক্ষ দেশে পাঠাবে। যুক্তরাষ্ট্র এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে এবং অক্টোবর থেকে যুক্তরাজ্যের সহায়তায় আফগানিস্তান হামলা শুরু করে।
নভেম্বর ২০০১
উত্তরাঞ্চলীয় জোট যার মধ্যে রব্বানীর সরকারও ছিল, তালেবানকে পরাজিত করে কাবুল দখল করে। এরপর রব্বানীর পতাকা ও সিল পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়। পতাকার সাদা অংশে নীল রঙে শাহাদা লেখা হয়। সে বছর তালেবান কাবুল থেকে সরে আসে এবং পশ্চিমা বাহিনী ও সরকারের বিরুদ্ধে দীর্ঘমেয়াদী অভিযান চালাতে শুরু করে।
২০০২
যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব দিতে হামিদ কারজাইকে নির্বাচন করা হয়। এক মাস পরে পতাকা ফের জাহির শাহ যুগের রঙে ফিরে আসে এবং সিল পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯২ সালের নকশার মতো। সরিয়ে ফেলা হয় তরবারি। জুন মাসে আয়োজিত লয়া জিরগা (আফগান গ্র্যান্ড অ্যাসেম্বলি) সিলকে সাদা থেকে সোনালি রঙে পরিবর্তন করে।
অক্টোবর ২০০৪
কারজাই বিরোধপূর্ণ নির্বাচনের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট হন। আফগানিস্তানকে একটি ইসলামিক প্রজাতন্ত্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়, যেখানে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি। হামিদ কারজাই ২০০৯ সালে আরও একটি বিতর্কিত নির্বাচনে জয় লাভ করেন।
অগাস্ট ২০১৩
কারজাইয়ের শাসনের শেষ দিকে একটি পরিমার্জিত পতাকা প্রকাশ করা হয়। সিলটি বড় করা হয়, কালো ও সবুজ ব্যান্ডের ওপর আংশিকভাবে ওভারল্যাপ করে এবং কিছু নতুন বিবরণ যোগ করা হয়।
সেপ্টেম্বর ২০১৪
তীব্র বিতর্কিত নির্বাচনের দুই দফা ভোটগ্রহণের পর আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট হন আশরাফ গনি। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে একই দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি ঘটে। প্রতিদ্বন্দ্বী আবদুল্লাহ আবদুল্লাহর সঙ্গে তীব্র বিতর্কের ঘটনায় দুই দফায় ভোট হয়।
২০২০-২০২১
২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবান আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। ২০২১ সালের জুলাই মাসে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো বাহিনী আফগানিস্তান থেকে সরে আসে। ফলে ক্ষমতার শূন্যস্থান তৈরি হয় এবং তালেবান অগ্রসর হতে থাকে। একই বছর আগস্টে আশরাফ গনি আফগানিস্তান থেকে পালিয়ে যান। কোনো প্রকার ভোট ছাড়াই ক্ষমতা পুনঃদখল করে তালেবান। এবার তারা তাদের আগের পতাকা যেখানে শাহাদাতের বাণী ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’ লেখা আছে, সেটি পুনঃপ্রবর্তন করে।
এমজে