ঢাকা: সফলভাবে ৮ মাসের এক শিশুর ‘মাথা’ অপসারণ করলেন চিকিৎসকরা। এ লাইনটি পড়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেকে ঘাবড়ে যেতে পারেন, তবে ঘাবড়ে যাওয়ার বা দুশ্চিন্তা করার কোনো কারণ নেই।
ঘটনা হচ্ছে, দুই মাথাওয়ালা শিশুটির অতিরিক্ত ‘মাথা’টি অপসারণ করেছেন ভারতের কলকাতার অ্যাপোলা হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
শিশুটির নাম তোফাজ্জল। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে ৮ মাস আগে জন্ম তার। তার বাবার নাম শাহ আলম মিয়া ও মায়ের নাম সাবিহা খাতুন।
তোফাজ্জলের জন্ম হওয়ার পরে তাকে নিয়ে দুশ্চিন্ত হয়ে পড়েন বাবা-মা। পাড়া-প্রতিবেশি সবাই বলেছিল, তাদের সন্তানের আশা করে লাভ নেই, বাঁচবে না সে।
ছেলেকে সুস্থ করে তুলতে এ চিকিৎসক-ও চিকিৎসের দরজায় ধরনা দেন তারা। ভারতের মূল অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন ত্রিপুরা থেকে মূল অংশের সঙ্গে সংযুক্ত পশ্চিমবঙ্গে আসেন তোফাজ্জলের চিকিৎসা করাতে।
কলকাতার অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসা চলতে থাকে তফাজ্জলের। ২৮ জুলাই সৃষ্টিকর্তার হাতে শিশুটির প্রাণ সপে দিয়ে অস্ত্রোপচার শুরু করেন চিকিৎসকরা। ৫ ঘণ্টাব্যাপী অস্ত্রোপচার চালিয়ে সফল হন কলকাতার অ্যাপোলো হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
অ্যাপোলো হাসপাতালের নিউরো সার্জন শিশির দাস বলেন, তোফাজ্জল একটি বিরল অঙ্গ বিকৃতি নিয়ে জন্মে। তার মাথার ওপর দ্বিতীয় আরেকটি মাথা ছিল। পরজীবীয় জমজ মাথাটির ওজন প্রায় এক কিলো এবং সেটাতে ব্রেইন টিস্যু ছিল। ’
তিনি বলেন, ‘আমি কখনো এতো বড় অস্ত্রোপচার করিনি। এটি খুবই জটিল অস্ত্রোপচার ছিল। গুরুত্বপূর্ণ এ অস্ত্রোপচারের সময় সামান্যতম ত্রুটিতে শিশুটির জীবন প্রদীপ বন্ধ হয়ে যেত। ’
তোফাজ্জলের চালক বাবা শাহ আলম মিয়া বলেন, ‘ত্রিপুরার অধিকাংশ চিকিৎসক ও আমার আত্মীয় বলেছিলেন, আমাদের শিশুকে সুস্থ করে তোলা যাবে এবং সে খুব শিগগির মারা যেতে পারে, (তাই) আমরা তাকে সঙ্কটজনক অবস্থায় কলকাতায় নিয়ে আসি।
তোফাজ্জলের মা সাবিহা বলেন, কেউ বলেননি তার সন্তান বাঁচবে। কিন্তু আল্লাহর রহমতে আমি তাকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনতে পেরেছি।
ইনসেফালোমেনিংগোসেলে (encephalomeningocele) নামক রোগে আক্রান্ত। এ রোগে প্রতি প্রতি ৪০ থেকে ৪৫ হাজার জনের মধ্যে আক্রান্ত হতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০১৩
এসএফআই/আরআইএস