ঢাকা: নৌ-বাহিনীর ডুবুরি ও উদ্ধারকর্মীরা রীতিমতো যুদ্ধ করে যাচ্ছেন ভারতের সবচেয়ে আধুনিক ডুবোজাহাজ আইএনএস সিন্ধুরক্ষককে আবার পানিতে ভাসানোর জন্য। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় গভীর রাতে কড়া নিরাপত্তাবেষ্টিত মুম্বাই ডকইয়ার্ডে সাবমেরিনটিতে দুটি বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ড ঘটে।
ডুবোজাহাজটিতে থাকা ১৮ নাবিক নিহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। কেউ বেঁচে থাকলেও তাদের সাথে এখনও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। দেশটির নৌ-বাহিনী প্রধান জাতিকে সবচেয়ে খারাপ কিছুর প্রস্তুত থাকতে বলেছেন।
ডুবুরিরা এখন পর্যন্ত আংশিক নিমজ্জিত ডুবোজাহাজটির ডেকের ফাঁকের একটি দরজা খুলতে পেরেছেন। জাহাজটিকে আবার পুরোপুরি পানির উপরে ওঠানোর জন্য এর ভেতর থেকে পাম্প করে পানি বের করা হচ্ছে।
ডিজেল ও বিদ্যুত চালিত, ভারী অস্ত্রসজ্জিত ডুবোজাহাজটিতে বিস্ফোরণের কারণ এখনও জানা যায়নি। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র বুধবার জানিয়েছিল, ডুবোজাহাজটির আত্মরক্ষা কেন্দ্র অস্ত্রশস্ত্রে পরিপূর্ণ ছিল। আত্মরক্ষা কেন্দ্রের ওই কক্ষে ভারী ওজনের টর্পেডো এবং ক্ষেপণাস্ত্র ছিল। সেখান থেকেই বিস্ফোরনের সূত্রপাত। তবে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আধুনিক সাবমেরিনটিতে এ ধরণের বিস্ফোরণ ঘটার কোন সম্ভাবনা ছিল না।
বৃহস্পতিবার ভারতে স্বাধীনতা দিবস পালিত হচ্ছে। দেশটির এমন আনন্দের দিনেও ডুবোজাহাজে আটকা পড়া নাবিকদের ব্যাপারে আশাবাদী হতে পারছেন না সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বলেন, ‘আই এন এস সিন্ধুরক্ষকের এ দুর্ঘটনার জন্য আমরা গভীরভাবে ব্যাথিত। আমাদের ১৮ জন সাহসী যোদ্ধার প্রাণহানির আশঙ্কা করছি। ’
তিনি আরও বলেন, ‘ভারতীয় নৌ-বাহিনীর দেশীয় প্রুযুক্তিতে বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ ও পারমাণবিক ডুবোজাহাজ চালুর সাম্প্রতিক সাফল্যের পাশে এ দুর্ঘটনা আরও বেশি দুঃখজনক। ’
নৌ-বাহিনী প্রধান ডিকে যোশি জানিয়েছেন, ডুবোজাহাজটির এয়ার পকেটে নাবিকদের খুঁজে পাওয়ার একটা সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু এখন এয়ার পকেট ইন্ডিকেটর এ ব্যাপারে নেতিবাচক নির্দেশনা দিচ্ছে।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘যদিও আমরা ভাল কিছুর জন্য আশাবাদী, তবুও আমাদের সবচেয়ে খারাপটার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। ’
নৌ-বাহিনী জানিয়েছে, সিন্ধুরক্ষককে মাত্র তিন মাস আগে রাশিয়া থেকে ৪৮০ কোটি রুপি ব্যয়ে পরিমার্জিত করা হয়েছিল।
দুর্ঘটনার সময় এর কাছাকাছি আইএনএস সিন্ধুরত্ন নামে আরেকটি ডুবোজাহাজ থাকলেও তা দ্রুত সরে যেতে সক্ষম হয়। তবে বিস্ফোরণে এরও কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, ২৩০০ টনের আএনএস সিন্ধুরক্ষক ভারতের নৌ-বাহিনীর ১৪টি ডুবোজাহাজের মধ্যে অন্যতম। ১৯৯৭ সালে এটি রাশিয়ার কাছ থেকে কেনা হয়েছিল। আরও দশ বছর ডুবোজাহাজটি কাজ চালিয়ে যেতে সক্ষম ছিল বলে জানিয়েছে নৌ-বাহিনী।
বাংলাদেশ সময়: ১১১০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০১৩
সম্পাদনা: কামরুল হাসান কাইউম, নিউজরুম এডিটর- eic@banglanews24.com