ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

সিরিয়া যুদ্ধে জড়াবে না রাশিয়া

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০১৩
সিরিয়া যুদ্ধে জড়াবে না রাশিয়া

ঢাকা: ‘বিশ্ব মোড়ল’ যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়া যুদ্ধে নিজেকে জড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। তার সঙ্গে সুর মিলিয়েছে তার দুই মিত্র যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স।

আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলোর বরাতে জানা যায়, কয়েকদিনের মধ্যে পশ্চিমা সামরিক হস্তক্ষেপ হবে সিরিয়ায়।

প্রস্তুতিও প্রায় এক প্রকার সেরে ফেলেছে পশ্চিমা। মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস ট্রুম্যান ওমানের দিকে অগ্রসর হচ্ছে, বাহরাইনে তো আগে থেকেই রয়েছে তাদের পঞ্চম নৌবহর। এছাড়াও সিরিয়ার আশপাশে স্থায়ী-অস্থায়ীভাবে পশ্চিমাদের সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। যুদ্ধ শুরু হলে ইসরায়েল থেকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা যে হবে না, তার নিশ্চিয়তা দেয়া যায় না।

বৃহস্পতিবার সংবাদ মাধ্যমে, খবর প্রকাশিত হয়েছে, এখনও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ওবামা সিরিয়ায় হামলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেননি। তবে তিনি নিশ্চিত, সিরিয়ার সরকার তার দেশের জনগণের বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করেছে।

২০১১ সালে আরব বসন্ত শুরু হলে তার হাওয়া লাগে সিরিয়ার গায়ে। সেই হাওয়ায় ওই বছরের মার্চ থেকে শুরু হয় সরকার বিরোধী আন্দোলন। সেই আন্দোলন আজ গৃহযুদ্ধের পর্যায়ে।

সহিংসতার শুরু থেকেই সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়াতে বলে আসছে পশ্চিমারা। সিরিয়ার সরকারের বিরুদ্ধে জাতিসংঘে বেশ কয়েকবার নিষেধাজ্ঞা আরোপের চেষ্টা চালিয়ে চীন ও রাশিয়ার বিরোধিতার মুখে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের উদ্যোগ ব্যর্থ হয়।

এবার সিরিয়ার বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ এনে-সামরিক হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা। সিরিয়ার ঘনিষ্ট মিত্র রাশিয়া শুরু থেকেই বাশার আল-আসাদের সাফাই গেয়ে আসছে। সিরিয়ায় হামলা হলে তা ইতিহাসের ভুলের পুনরাবৃত্তি হবে বলে মন্তব্য রুশ কর্তৃপক্ষের।

বেসামরিক নাগরিকের মানবাধিকার রক্ষায় আসাদবাহিনীর বিরুদ্ধে হামলা চালাতে যাচ্ছে পশ্চিমারা। কিন্তু সম্ভাব্য হামলা প্রতিরোধে মুখে ‘যুদ্ধ’ চালালেও হাতে অস্ত্র ধরবে না রাশিয়া। তারা কারও পক্ষে যুদ্ধ করবে না। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্গেই ল্যাভরভই এ কথা বলেছেন।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানা যায়, সার্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, ‘কারও সঙ্গে তাদের যুদ্ধে জড়ানোর কোনো পরিকল্পনা নেই। ’

রাশিয়ার কর্মকর্তা ও গণমাধ্যমগুলো বলছে, সিরিয়া সামরিক হস্তক্ষেপ হলে তা যুগোস্লাভিয়া (১৯৯৯), ইরাক (২০০৩) ও লিবিয়ায় (২০১১) পশ্চিমা সামরিক বাহিনীর হস্তক্ষেপের পরিণতির পুনরাবৃত্তি হবে।

মস্কোর আশঙ্কা, পশ্চিমারা যুগোস্লাভিয়া, ইরাক আর লিবিয়ার তালিকায় ২০১৩ সালে সিরিয়াকে যুক্ত করার চক্রান্ত করছে।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পেন্টাগনের পূর্ব অভিজ্ঞতা রয়েছে যে রাশিয়া শুধু গলাই বাজাবে, কামান দাগাবে না। ক্ষোধ আর হুঁশিয়ারি প্রদানের মধ্যে আবদ্ধ থাকবে রাশিয়ার ‘থাবা’।

তবে অনেকের ধারণা, সরাসরি যুদ্ধের লেবাস না পড়লেও যুদ্ধের তরবারি হাতে নেবে রাশিয়া, এ কাজটি তারা করবে পেছনে থেকে, খেলবে প্রক্সি যুদ্ধ। দামেস্ককে অস্ত্র সরবরাহ বাড়িয়ে দিতে পারে মস্কো। একই সঙ্গে রাশিয়া ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার ও ওয়াশিংটনকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা দেয়া থেকে হাত গুটিয়ে নিতে পারে।

এদিকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ভূমধ্য সাগরে দুটি যুদ্ধ জাহাজ পাঠাচ্ছে রাশিয়া। কয়েক দিনের মধ্যে জাহাজ দুটো গন্তব্যে পৌঁছে যাবে। সিরিয়ায় পশ্চিমাদের হামলার আশঙ্কার পরিপ্রেক্ষিতে রুশ কর্তৃপক্ষ এমন পদক্ষেপ নিচ্ছে কিনা তা স্পষ্ট নয়।

দেশটির নৌ বাহিনী জানিয়েছে, তাদের এ জাহাজ মোতায়েন দীর্ঘ দিনের পরিকল্পনার অংশ, এর সঙ্গে সিরিয়ার সঙ্গে কোন সম্পর্ক নেই।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯
এসএফআই/জেসিকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।