ঢাকা: শাসককে নিজের দুঃখের কথা জানাতে অভিনব এক নাটক সাজিয়েছিলেন এক নারী। দাবি আদায় না হলে পরনে থাকা ‘বিস্ফোরক বেল্টের’ বিস্ফোরণ ঘটানোর হুমকি দেন তিনি।
আত্মসমর্পন করলে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা যায়, নারীর পরনের বেল্টটি ছিল তার সাধারণ বেল্ট, বিস্ফোরকের নাম-গন্ধই ছিলনা বেল্টে। ঘটনাটি ঘটেছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই শহরে।
নিজের দুঃখের কথা কর্তৃপক্ষের কাছে শোনানোর জন্যই তিনি বিস্ফোরক দ্রব্যসমেত ওই বেল্ট পড়েছিলেন। প্রায় ১৩ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে দুবাই সময় সোমবার দুপুর ১টা ২০ মিনিটের দিকে ওই নারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
রোববার দুবাই সময় দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটে তিনি দুবাই সরকারি আইনজীবী (পাবলিক প্রসিকিউশন) ভবনে প্রবেশ করেন এক নারী। ভবনটি ওই সময় জনগণে ভর্তি ছিল। পরনের কাপড়ের ওপর একটি কালো আবায়া ও শায়লা (আচ্ছাদন) ছিল। পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্য নিয়ে ভবনের অভ্যর্থনা কক্ষে প্রবেশ করে তিনি ভাঙ্গা ভাঙ্গা আরবিতে কিছু বলছিলেন কিন্তু তা স্পষ্ট ছিল না।
নিজের দাবির কথা জানিয়ে আচ্ছাদন সরিয়ে তিনি বিস্ফোরকবাহী বেল্টটি দেখান অভ্যর্থনা কক্ষের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের। দাবি না মেনে নিলে বিস্ফোরণের হুমকি দেন তিনি । এসময় তার সঙ্গে তার পাঁচ বছর বয়সী একটি শিশু ছিল।
জানা গেছে, রুশ ভাষায় কথা বলা ওই নারী তার দুঃখের কথা সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী এবং দুবাইয়ের সাংবিধানিক শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুমের কাছে জানাতে চান।
পুলিশ জানায়, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও জনগণের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং পালিয়ে যায়। সরকারি আইনজীবীদের ভবন এবং সংলগ্ন দুবাই আদালত দ্রুত খালি করা হয় এবং পুলিশ ওই এলাকা ঘিরে ফেলে।
সরকারি কর্মকর্তারা তাদের পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে ভাবছিলেন। অবশেষে ওই নারী আত্মসমর্পন করেন এবং বিস্ফোরক হস্তান্তর করেন।
পুলিশের ভাষ্যমতে, সংযুক্ত আরব আমিরাতে আগে কখনও এমন ঘটনা ঘটেনি।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, উজবেক ওই নারী অবৈধ অভিবাসী এবং ১০ বছর যাবৎ দুবাইয়ে বাস করছেন। তার ছেলেও অবৈধ এবং তার পাসপোর্ট নেই।
পুলিশ জানায়, ওই উজবেক নারীর হাতে একটি রিমোট ছিল। রিমোটের বোতামে চাপ দেওয়ার জন্য সময়ে সময়ে হুমকি দিচ্ছিলেন তিনি।
তবে আত্মসমর্পনের পর দেখা যায়, ওই বেল্টে কোনো বিস্ফোরক ছিল না। মিথ্যা ভয় দেখিয়েছেন তিনি।
ওই নারী প্রায় সরকারি আইনজীবী ভবনে আসতেন এবং কারাগারে তার স্বামী নানা সমস্যার ভুগছে বলে অভিযোগ করতেন। তবে কেন তার স্বামী জেলে রয়েছে এ সম্পর্কে কোনো তথ্য জানাতে পারেনি সরকারি কর্মকর্তারা। পরিবারে তার কি সমস্যা রয়েছে তাও জানা যায়নি।
ওই নারীর আইনজীবী জানিয়েছেন, তার স্বামীর আর্থিক সমস্যা রয়েছে।
তার সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা চালান নিরাপত্তা বাহিনীর চার সদস্যের একটি দল। তবে তার দাবি মেনে নেওয়া হয়েছি কিনা তা জানানো হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০২, ২০১৩
এসএফআই/জেসিকে