ঢাকা: আফগানিস্তানে ভারতীয় বাঙালি লেখক ও মানবাধিকাকর্মী সুস্মিতা ব্যানার্জিকে গুলি করে হত্যা করেছে তালেবান। বুধবার আফগানিস্তানের পখটিয়া রাজ্যে খারানায় নিজ বাড়িতে খুন হন সুস্মিতা।
সুস্মিতা ব্যানার্জি সামাজিক কর্মকাণ্ড বিশেষ করে নারী শিক্ষা ও অধিকার নিয়ে সরব ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, এসব কারণেই তালেবানের চক্ষুশূলে পরিণত হন সুস্মিতা।
১৯৯০’র দশকে তালেবানের হাত থেকে নাটকীয়ভাবে নিজের মুক্তি নিয়ে বাঙালি লেখিকা সুস্মিতার ‘কাবুলিওয়ালার বাঙালি স্ত্রী’ শিরোনামে একটি স্মৃতিগ্রন্থ লিখেন। ওই বই অবলম্বনে ২০০৩ সালে বলিউডে ‘এসকেপ ফর দ্য তালিবান’ নামে একটি সিনেমা তৈরি হয়।
আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় পাকতিকা প্রদেশের পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে স্বামীর বাসভবনের কাছে ৪৯ বছর বয়সী সুস্মিতার গুলিবিদ্ধ মৃতদেহ পাওয়া যায়।
আফগান পুলিশ মনে করছে, ওই বইটির কারণে জঙ্গীরা তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে থাকতে পারে। তালেবান তার প্রতি এতটাই ক্ষুব্ধ ছিল যে, তাকে ২০ বার গুলি করে তারা এবং তার চুলের একাংশ টেনে ছিড়ে ফেলে।
সুস্মিতা ব্যানার্জি পাকতিকা প্রদেশের ব্যবসায়ী জানবাজ খানকে বিয়ে করেছিলেন। ১৯৮৯ সালে কোলকাতায় জানবাজের সঙ্গে তার পরিচয় ও বিয়ে হয়েছিল। সেবছরই জানবাজ তাকে আফগানিস্তানে নিয়ে যান।
আফগানিস্তানে তিনি নিজেকে সায়েদ কামালা নামে পরিচয় দিতেন।
অবশ্য পরবর্তীতে আফগানিস্তানে তালেবানের উত্থানের পর একবার স্বামীর বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। এ অবস্থায় কাবুলের কাছে তালেবানের হাতে ধরা পড়ে যান সুস্মিতা। স্বামীর বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার অপরাধে তাকে তালেবানরা হত্যা করতে চেয়েছিল। কিন্তু তিনি তাদেরকে একথা বোঝাতে সক্ষম হন যে, তিনি ভারতীয় নাগরিক এবং নিজের দেশে চলে যাওয়ার অধিকার তার আছে।
তালেবানরা ওই অবস্থায় তাকে কাবুলস্থ ভারতীয় দূতাবাসের কাছে হস্তান্তর করে এবং তিনি কোলকাতায় চলে যান।
কিন্তু আফগানিস্তানে ফিরে যাওয়া তার জীবনের জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। হত্যার কিছুদিন আগেই তিনি স্বামীসহ ভারতে থেকে আফগানিস্তানে ফিরেন। ডেইলি মেইল।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৬, ২০১৩
কেএইচ/আরআইএস