ঢাকা: মহান সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্য পেতে যিশু খ্রিস্ট, গৌতম বুদ্ধের মতো মহামানবেরা আরাধনা করে গেছেন নির্জনে। সেই মহামানবদের পথ ধরে জগতে অনেকেই সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্য পেতে আরাধনা করে গেছেন এবং যাচ্ছেন, ভবিষ্যতেও করবেন।
তেমনি আরাধনা করে যাচ্ছেন ককেশাস অঞ্চলের দেশ জর্জিয়ার কাটশ্কি পিলারের বাসিন্দা ম্যাক্সিম কাভতারেজ। তবে পাহাড়ি অঞ্চলের সমভূমি থেকে ১৩১ ফুট উঁচুতে পিলার আকৃতির পাথুরে পাহাড়ের চূড়ায় বসবাস করলেও ৫৯ বছর ম্যাক্সিমের আরাধনাকে আধুনিকই বলা যায়।
কারণ, যিশু-বুদ্ধরা মানবগোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পূর্ণ যোগাযোগ ত্যাগ করে একদমই নির্জন এলাকায় সন্ন্যাসবাস করলেও ভক্তদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছেন ম্যাক্সিম, ভক্তদের পক্ষ থেকে বিশেষ টান যন্ত্রের মাধ্যমে খাবার ও পণ্য গ্রহণ করছেন। এমনকি ভক্তদের সঙ্গে প্রার্থনা করতে সপ্তাহে দু’বার নিচেও নামেন তিনি।
যিশু-বুদ্ধের মতো অন্য সন্ন্যাসীরা পাহাড়ের গুহায়, বটতলায় কিংবা অজ্ঞাত কোনো স্থানে আরাধনা করে গেলেও ম্যাক্সিম বাস করেন একটি সুগঠিত ছিমছাম ধরনের কুঠুরিতে।
ইতিহাসের কিছু মহামানবের মতো ম্যাক্সিমের পেছনেও রয়েছে অন্ধকারের গল্প। ১৯৯৩ সাল থেকে এই আরাধনা শুরু করার আগে তিনি মাদকসেবী এবং মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন। ম্যাক্সিমের নিজের ভাষায়, হেন অপরাধ নেই যা তিনি করেননি।
তবে শেষ পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে কারাভোগের পর সিদ্ধান্ত নেন জীবনের মোড় পাল্টানোর। সিদ্ধান্ত থেকেই ২০ বছর ধরে সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্য পাওয়ার আশায় আরাধনা করে যাচ্ছেন তিনি।
অবশ্য, ম্যাক্সিমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেন কেবল পূণ্যার্থীরাই। এই সংবাদ প্রতিবেদককেও অনেক কৌশল অবলম্বন করে ম্যাক্সিমের সাক্ষাৎ লাভ করতে হয়েছে।
আরাধনার শুরুটা বেশি ভালো ছিল না উল্লেখ করে ম্যাক্সিম জানান, খারাপ আবহাওয়া থেকে নিজেকে রক্ষা করতে প্রথম দু’বছর কেবল একটি পুরনো ফ্রিজে থাকতে হয়েছে।
তবে ধীরে ধীরে তিনি একটি সুপরিকল্পিত কুঠুরি নির্মাণ করেন। বাইরে থেকে তার কুঠুরিকে পুরনো এবং ভাঙাচোরা মনে হলেও ভেতরে দেয়ালের কারুকার্য, বুক শেল্ফ সাজানো এবং ওয়ালমেট গাঁথুনি দেখে ম্যাক্সিমের আরাধনাশ্রমকে একটি অভিজাত বাড়িই মনে হবে।
তবে আধুনিকই হোক, আর সেকেলেই হোক, ম্যাক্সিম বিশ্বাস করেন তিনি সৃষ্টিকর্তার অনুগ্রহ লাভ করতে এ পথ বেছে নিয়েছেন এবং তিনি সফল হবেন!
[ডেইলি মেইল অবলম্বনে]
বাংলাদেশ সময়: ০৪১৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৭, ২০১৩
এইচএ/এমজেএফ/জেসিকে