ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

প্রবাসীদের প্রত্যাশা পূরণের অঙ্গীকার এনআরবি ব্যাংকের

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৭, ২০১৩
প্রবাসীদের প্রত্যাশা পূরণের অঙ্গীকার এনআরবি ব্যাংকের

এনআরবি ব্যাংক প্রবাসীদের সবার, এই ব্যাংকের মাধ্যমেই সফল হবে অনেক প্রবাসীর প্রত্যাশা। শুক্রবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে বাংলাদেশে সদ্য প্রতিষ্ঠিত এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের একটি পরিচিতি সভায় বক্তারা একথা বলেন।

তারা বলেন, এনআরবি একটি স্বপ্নের সূচনা, সকলের আন্তরিক প্রচেষ্টায় এই স্বপ্নের দ্রুত বাস্তবায়নও হবে।

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ। জাতিসংঘে শান্তির সংস্কৃতি ও অহিংসা বিষয়ক একটি কর্মসূচিতে অংশ নিতে এসে নিউইয়র্কে অবস্থান করছেন তিনি। সংস্কৃতিমন্ত্রী বলেন, বিদেশে কষ্টার্জিত অর্থ বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুন্দর সুযোগ তৈরি হচ্ছে। বাংলাদেশের ব্যাংকে অর্থ গচ্ছিত রাখলে তার সুদও বিদেশের যেকোনো ব্যাংকের চেয়ে বেশি।

বাংলাদেশে বেশি বেশি বিনিয়োগে প্রবাসীদের আহ্বান জানান তিনি। দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির পাশাপাশি সামাজিক ও সাংস্কৃতিকভাবেও ব্যাপক অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরেন সংস্কৃতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার খাদ্যে দেশকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তুলেছে। শিক্ষায় ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে, স্কুলে শিক্ষার্থীদের হাতে বছরের প্রথম দিনেই বই তুলে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে, বিদ্যুতে লোডশেডিং কমেছে, বিদ্যুৎ উৎপাদন উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। এসময় সরকারের ইতিবাচক অর্জনগুলো সংবাদমাধ্যমে গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরতে সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান সাবেক এই তথ্যমন্ত্রী।

সম্মানিত অতিথি নিউইয়র্ক সফররত মানবাধিকার নেতা শাহরিয়ার কবীর বলেন, বাংলাদেশ এখন অমিত সম্ভাবনাময় একটি দেশ। সবচেয়ে বিনিয়োগ বান্ধব একটি দেশ। বিশ্বের অনেক দেশ থেকেই এখন বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখানো হচ্ছে। প্রবাসী বাংলাদেশিরাও এখন নির্বিঘেœ দেশে বিনিয়োগ করতে পারবেন। এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের উদ্যোক্তাদের প্রতি গ্রাহকের আস্থা অর্জনে গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। শাহরিয়ার কবীর বলেন, কেবল মুনাফা নয়, মানুষের কল্যাণে কিছু করার সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে এই ব্যাংকের মাধ্যমে।    
 
নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল মনিরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে ক্রমেই একটি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র হয়ে উঠছে। প্রবাসীরাও এখন দেশে তাদের ব্যাংক চালু করার সুযোগ পাচ্ছেন। তবে এটি কেবলই মুনাফার জন্য যেনো না হয়, এর গ্রাহকরা যাতে সত্যিকারের ব্যাংকিং সেবা পান তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান তিনি। কনসাল জেনারেল যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসীদের যারা এদেশের নাগরিকত্ব পেয়েছেন তাদের প্রতি দ্বৈত নাগরিকত্বের আবেদন করে পুনরায় বাংলাদেশের নাগরিক হওয়ার আহ্বান জানান।

এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুজিবুর রহমান বলেন, স্বাধীনতার বেয়াল্লিশ বছর পর প্রবাসীদের একটি স্বপ্নের সূচনা হয়েছে। তবে এই স্বপ্নের বাস্তবায়নে এনআরবি’র উদ্যোক্তা হিসেবে আমরা মোটেই সময় নেই নি। এরই মধ্যে ব্যাংকের তিনটি শাখার কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে জানান তিনি।

উত্তর আমেরিকার মোট ৫৩ জন ব্যক্তিত্বের অর্থায়নে এই এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক চালু হয়েছে এদের মধ্যে ৩৮ জনই যুক্তরাষ্ট্রের বলে জানান মুজিবুর রহমান। ব্যাংকের মূলধন সাড়ে চার শ’ কোটি টাকা যার পুরোটাই প্রবাসীদের অর্থায়ন বলে জানান এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

ব্যাংকের পরিচালক ড. নূরন্নবী বলেন, প্রবাসে আমরা যারা বাস করছি এই ব্যাংকের মাধ্যমে তাদের দেশের প্রতি ঋণশোধ করার একটি সুযোগ তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশকে একটি এমার্জিং অর্থনীতির দেশ হিসেবে উল্লেখ করে ড. নবী বলেন, দেশকে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিতে প্রবাসে আমরা যারা অবস্থান করছি তাদেরও আরও কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির বিভিন্ন চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, শিগগিরই বাংলাদেশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির ৭% ক্লাবে যোগ দিতে যাচ্ছে। এই ব্যাংকের মাধ্যমে এরই মধ্যে ২০০ বিলিয়ন ডলার দেশে পাঠানো হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন ড. নবী।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের অন্যতম উদ্যোক্তা জনপ্রিয় সাংবাদিক মঞ্জুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, এনআরবি প্রবাসী প্রতিটি মানুষের ব্যাংক। এর মাধ্যমেই পূরণ হবে প্রবাসীদের সকল প্রত্যাশা। দ্রুততার সঙ্গে সবচেয়ে কম খরচে দেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর সুযোগের পাশাপাশি নির্বিঘœ বিনিয়োগের অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠবে এই ব্যাংক। এনআরবি হবে প্রবাসীদের বিনিয়োগের সবচেয়ে বড় ভরসার স্থান, অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তিনি। ধন্যবাদ জ্ঞাপনে ব্যাংকের অপর উদ্যোক্তা আবদুর রহিম বাদশাহ, ব্যাংকটির পরিচালনায় প্রবাসের সকলের সহযোগিতা চান। প্রবাসীদের যেকোনো প্রয়োজনে ব্যাংক সহযোগিতা করবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।
 
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত ঠিকানা পত্রিকার সম্পাদক ফজলুর রহমান, বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি কামাল আহমেদ, যুক্তরাষ্ট্রের মূলধারার রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নেতা মোরশেদ আলম, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব বেলাল বেগ প্রমুখ। বক্তারা এই ব্যাংককে রাজনৈতিক চাপের উর্দ্ধে থেকে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ সময় ১০৩২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৭, ২০১৩
এমএমকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।