আগরতলা (ত্রিপুরা): প্রাইভেট প্র্যাকটিস বিষয়ে চিকিৎসকদের সতর্ক করে রায় দিয়েছেন ত্রিপুরা হাইকোর্ট।
বুধবার রাজ্যের সরকারি চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস বিষয়ে ত্রিপুরা হাইকোর্টের দেওয়া রায়ে বলা হয়েছে, সরকারি চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস এমনভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে যাতে সরকারি হাসপাতালের পরিসেবা বিঘ্নিত না হয়।
আদালতের এ রায়কে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে বিভিন্ন মহল। বলা চলে ডাক্তারদের পরিসেবা ও প্রাইভেট প্র্যাকটিস নিয়ে এবারই প্রথম সরাসরি কোনো মতামত দিলো উচ্চ আদালত।
গত বেশ কিছু দিন ধরেই রাজ্যের চিকিৎসা পরিসেবা নিয়ে গাফিলতির অভিযোগ উঠছে। সরকারি হাসপাতালে রোগীরা ঠিকভাবে ব্যবস্থাপত্র পাচ্ছেন না বলেও অভিযোগ রয়েছে। এমনকি চিকিৎসকদের হাতে রোগীর বাড়ির পরিজনরা আক্রান্ত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে রাজ্যে।
শেষ পর্যন্ত এসব বিষয় নিরসনে উদ্যোগী হয়েছে স্বয়ং হাইকোর্ট। রাজ্যে চিকিৎসা পরিসেবায় গাফিলতি নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত একটি অভিযোগ গ্রহণ করেছিলো ত্রিপুরা হাইকোর্ট।
এভাবে আদালত নিজ থেকে স্বাস্থ্য পরিসেবা নিয়ে অভিযোগ গ্রহণ করে মামলা চালানোর ঘটনাও একটি নজির। রাজ্যের মুখ্যসচিব, অতিরিক্ত মুখ্যসচিব, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, ভিজিল্যান্স কর্মকর্তা, আগরতলা সরকারি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ, জিবি ও আইজিএম হাসপাতাল সুপারদের আলাদা আলাদাভাবে ব্যক্তিগত হলফনামায় নির্দিষ্ট কিছু প্রশ্নের উত্তরও চেয়েছেন আদালত।
মামলাটি চলছে ত্রিপুরা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি দীপকগুপ্তা, ও শুভাশিস তলাপাত্রের ডিভিশন বেঞ্চ। আদালত যে পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশনা জারি করেছে তাও নজিরবিহীন।
আদালত বলেছে, দুর্নীতির ক্যান্সার ও লোভের ভাইরাস এই মহান পেশার একাংশকে গ্রাস করেছে। এটা দাবানল হয়ে ছড়িয়ে পড়ার আগেই তার নিরাময় জরুরি। এমনকি চিকিৎসকরাও দেহের কোনো অংশে নিয়ন্ত্রণহীন ক্ষত তৈরি হলে তা কেটে ফেলতে দ্বিধা করেন না।
চিকিৎসার সাথে জড়িত পেশায় যাদের সংশোধন করা যাবে না তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সময় এসেছে। যার অর্থ পরিষ্কার ভাষায় রাজ্যের চিকিৎসকদের তীব্র ভাষায় সমালোচনা করেছেন আদালত।
একইসঙ্গে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন। মামলার পরবর্তী শুনানি ২৪ সেপ্টেম্বর। ওই দিন হলফনামা জমা দিতে হবে সরকারি কর্মকর্তাদের।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৩
টিসি/এএ/এমজেডআর