ঢাকা: বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তান সহ বেশ কয়েকটি দেশের নাগরিকদের জন্য যুক্তরাজ্যের ভ্রমণ ভিসা লাভে নতুন নিয়ম কানুন নিয়ে খোদ যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিসভায়ই বিভক্তি দেখা দিয়েছে।
বন্ডের মাধ্যমে দেশটিতে ভ্রমনেচ্ছুদের প্রবেশের অনুমতি প্রদানের পদক্ষেপে উপমহাদেশসহ সংশ্লিষ্ট দেশগুলির সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্কের অবনতি হতে পারে- এমন আশঙ্কা থেকেই ভিসা বন্ড নামের নতুন এ নীতিমালার ব্যাপারে দ্বিমত পোষণ করেছেন কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী।
মন্ত্রিসভার এক পক্ষ আশঙ্কা করে বলছেন, তিন হাজার পাউন্ডের (প্রায় তিন লাখ ৭০ হাজার টাকা) এই বন্ডের কারণে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানসহ এই নিয়মের আওতাধীন দেশগুলোর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক খারাপ হয়ে পড়বে।
যুক্তরাজ্যের বিজনেস সেক্রেটারি এবং লিবারেল ডেমোক্রেট পার্টির নেতা ভিনস ক্যাবল সতর্ক করে দিয়ে বলেন, এই বন্ড নিয়মের নেতিবাচক প্রভাবে ভারতসহ উপমহাদেশের বন্ধুরাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক খারাপ হয়ে যেতে পারে।
বুধবার লন্ডনে ক্ষমতাসীন জোটের নেতা ক্যাবল সাংবাদিকদের বলেন, ভারতসহ যেসব বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে আমরা সম্পর্ক উন্নয়নে চেষ্টা করছি, তারা এই বন্ড নিয়ে উদ্বিগ্ন। এই বন্ডের শর্ত আরও শিথিল করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান ক্যাবল। মন্ত্রিসভার সহকর্মীদের এই বিষয়ে বোঝানোর চেষ্টা করবেন বলেও জানান তিনি।
ক্যাবল আরও বলেন, সারাবিশ্বে এই নিয়ম নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে। এর মাধ্যমে বিশ্ববাসীর কাছে যুক্তরাজ্য সম্পর্কে একটি ভুল বার্তা যেতে পারে।
এই প্রকল্পটি যুক্তরাজ্যের উপপ্রধানমন্ত্রী এবং লিবারেল ডেমোক্রেট নেতা নিক ক্লেগের হাত ধরে আলো দেখলেও ক্যাবল বলছেন, ক্লেগের দলের নেতাদের মধ্যেই এই বিষয়ে ভিন্নমত আছে।
তবে যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থেরাসা মে গত জুনে হাতে নেওয়া এই প্রকল্প পুনর্বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন।
অন্যদিকে, ভারতসহ সংশ্লিষ্ট দেশগুলি ইতোমধ্যে এই ভিসা বন্ড পদ্ধতি নিয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়েছে এবং তারা এই প্রকল্পের বিস্তারিত প্রকাশের জন্য যুক্তরাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছে।
নতুন এই ভিসা বন্ডের নিয়ম অনুযায়ী, তালিকাভুক্ত দেশের ১৮ বছর বা তদোর্ধ্ব নাগরিকদের ছয় মাসের ভ্রমণ ভিসার জন্য বাধ্যতামূলক ৩ হাজার পাউন্ড জামানত দিতে হবে। ছয় মাসের ভিসার মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পর যুক্তরাজ্য না ছাড়লে বন্ডের অর্থ কেটে নেবে সরকার।
নতুন নিয়মের কার্যকারিতা যাচাই করতে প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, নাইজেরিয়া, ও ঘানার নাগরিকদের জন্য নভেম্বর থেকে পাইলট প্রকল্প চালু করার কথা রয়েছে।
জানা যায়, ক্ষমতাসীন ডেভিড ক্যামরন সরকার ২০১৫ সাল নাগাদ বার্ষিক অভিবাসীর সংখ্যা এক লাখের নিচে কমিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে।
সে লক্ষ্যে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান এবং নাইজেরিয়াসহ বেশ কিছু দেশকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে যুক্তরাজ্য সরকার।
বাংলাদেশ সময়: ০০০৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৩
কেএইচ/এইচএ/এসআরএস