ঢাকা: সৌরজগতের দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম গ্রহ মঙ্গলে জীবনের সম্ভাবনা ক্ষীণ! বিজ্ঞানীরা মঙ্গলে জীবাণুর যে উপস্থিতি আশা করেছিল তা নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে।
নাসার বিজ্ঞানীরা বলছেন, তাদের কিউরিওসিটি রোভারে ধরা পড়েনি লাল গ্রহের পাতলা বায়ুমণ্ডলে মিথেন গ্যাসের উপস্থিতি।
মঙ্গল এক সময় বসবাসের যোগ্য ছিল তার প্রমাণ সংগ্রহে মঙ্গলে বিচরণ করছে নাসার ৯০০ কেজি ওজনের কিউরিওসিটি। গত বছরের আগস্টে মঙ্গলে অবরতরণ করে কিউরিওসিটি।
মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলে স্থির মাত্রার মিথেন গ্যাস সেখানকার পাথরের ভেতরে আর ধূলিতে থাকা জীবন্ত জীবাণুর উপস্থিতি ইঙ্গিত হতে পারত কিন্তু এই গ্যাসের অনুপস্থিতি জীবাণুর উপস্থিতির আশায় ভাটা ফেলে দিয়েছে।
পৃথিবীতে মল হিসেবে অনেক জীবাণু মিথেন হিসেবে ছাড়ে যা বায়ুমণ্ডলের সঙ্গে মিশে যায়। মানুষ, গরু আর শূকরের মল থেকেও প্রচুর পরিমাণে মিথেন গ্যাস উৎপন্ন হয়ে বায়ুমণ্ডলে মিশে যায়। কিন্ত সব জীবাণুই মিথেন গ্যাস ছাড়ে না। অধিকাংশ জীবাণু অন্যান্য গ্যাস ছাড়ে।
ব্রিটিশ পত্রিকা গার্ডিয়ানকে নাসার বিজ্ঞানী চেরিস ওয়েবস্টার জানান, কিন্তু সেখানে অন্যান্য জীবাণু রয়েছে যারা মিথেন গ্যাস উৎপন্ন করে না।
নাসার জেট প্রপালসন ল্যাবরেটরির বিশ্লেষক দলের প্রধান ওয়েবস্টার বলেন, মঙ্গলে ভিন প্রজাতির জীবনের সন্ধানে ক্ষান্ত দেওয়াটা খুবই আগাম হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, মঙ্গলে জীবনের অনুসন্ধান শেষ হতে এখনও অনেক বাকি। এর জন্য বিশেষত দুই ধরনের প্রচেষ্টা চলছে। প্রথম জীবাণুর কর্মতৎপরতার ওপর দৃষ্টি রাখা এবং দ্বিতীয় এক সময় মঙ্গলের পরিবেশ যে জীবের বসবাসের জন্য সহায়ক ছিল তা দেখতে পাথর বিশ্লেষণ করা। আমরা এখন সেটিই (দ্বিতীয়টি) করছি।
তিনি জানান, এমন এক সময় ছিল যখন মঙ্গলের ভূত্বকে পানি ছিল, বৈচিত্র্যপূর্ণ রাসায়ণিক পদার্থ ছিল। সেখানে হৃদের রেখা এবং প্রাচীন নদীর উপস্থিতির প্রমাণ পেয়েছি আমরা। তাই সেখানে অনেক বছর আগে জীবের অস্থিত্ব থাকার সম্ভাবনার বিষয়টি এখনও রয়েছে।
এর আগে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছিল, তারা মঙ্গলে মিথেন গ্যাসের উপস্থিতি পেয়েছে, এমনকি অনেক সময় মঙ্গলের ভূত্বক থেকে মিথেনশিখা উঠতে দেখেছে।
২০০৯ সালে ওয়াশিংটন ডিসিস্থ সদর দফতরে নাসা এক সংবাদ সম্মেলনে জানায়, তারা মঙ্গলের বিভিন্ন ভূতাত্ত্বিক উপাদানের চারপাশে মিথেন উদগীরিত হতে দেখেছেন।
তবে তাদের এ সাম্প্রতিক প্রমাণ ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সির মঙ্গল যাত্রায় সমস্যা সৃষ্টি করবে না বলে জানিয়েছে নাসা কর্তৃপক্ষ। ২০১৮ সালে মঙ্গলে মহাকাশ যান পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে খেয়াযান ইউরোপীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার। এক্সোমারস নামের রোভারটি মঙ্গলে বিদ্যমান জীবনের অস্থিত্ব খুঁজবে।
ওয়েবস্টার জানান, নাসার সর্বশেষ ফলাফলে ইউরোপের মিশনকে শঙ্কার মুখে ফেলা উচিত হবে না। এক্সোমারস খুবই শক্তিশালী একটি মিশন। এটি মিথেনের উপস্থিতি শনাক্তের ওপর মনোযোগ দিচ্ছে না। এটি মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলে সবগুলো রাসায়নিক পদার্থের ওপর নজর রাখবে।
বাংলাদেশ সময়: ১২১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৩
এসএফআই/জিসিপি