ঢাকা: বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়ছে, সমুদ্রকূলবর্তী দেশগুলো অদূর ভবিষ্যতে তলিয়ে যাবে পানির গর্ভে-এমন ভবিষ্যদ্বাণী করে আসছেন অনেক পরিবেশ বিজ্ঞানী। কিন্তু জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদন বিশ্ববাসীকে জানাচ্ছে সুসংবাদ! গত ১৫ বছর ধরে মোটেও পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়েনি!
শতাধিক বিজ্ঞানীর পরিশ্রমের ফসল ওই প্রতিবেদনটি ফাঁস হয়ে চলে গেছে সংবাদ মাধ্যমগুলোর হাতে।
জাতিসংঘের ইন্টারগর্ভমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেন্ট চেঞ্জ (আইপিসিসি) ছয় বছর পর্যবেক্ষণের পর প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।
ধারণা করা হচ্ছে, চূড়ান্ত প্রতিবেদনে ১৯৯৮ সালের পর বিশ্বের তাপমাত্রা বাড়েনি বলে উল্লেখ করা হবে। আর ওই বছরটি ছিল সর্বশেষ উষ্ণতম বছর।
বিজ্ঞানীদের আইপিসিসির প্রতিবেদন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বেলজিয়াম, জার্মানি, হাঙ্গেরি ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের রাজনীতিবিদরা।
আইপিসিসির ফলাফল প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে জার্মানি। জার্মানির বক্তব্য মাত্র ১০ থেকে ১৫ বছর সময়ের কথা বলে লাভ নেই, এটি ‘বিভ্রান্তিমূলক’। তাদের চোখ দেওয়া উচিত দশক বা শতাব্দির দিকে।
কিন্তু এর আগে জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে জোড়ালোভাবে হুঁশিয়ারি শুনিয়েছিল আইপিসিসি। হঠাৎ তাদের সুর নরম হওয়ায় বিভিন্ন পরিবেশবাদী দেশগুলো সমালোচনা করছে। হাঙ্গেরি শঙ্কা প্রকাশ করে বলছে, মানবসৃষ্ঠ জলবায়ু পরিবর্তন অস্বীকারকারীদের ‘গোলাবারুদ’ সরবরাহ করবে এ প্রতিবেদন।
আর তুলনার জন্য ১৯৯৮ সাল বেছে নেওয়ার সমালোচনা করেছে বেলজিয়াম। বেলজিয়াম বলছে, ১৯৯৮ সাল বৈশ্বিক উষ্ণতার একটি ব্যক্তিক্রমী বছর ছিল।
জলবায়ু নিয়ে আইপিসিসির সবশেষ ‘মূল্যায়ন প্রতিবেদন’ প্রকাশ হয়েছিল ২০০৭ সালে। ওই প্রতিবেদন বেশ সমালোচনার মুখে পড়েছিল। সমালোচনার মুখে ২০৩৫ সালের মধ্যে হিমালয় গলে যাবে এমন তথ্য সংশোধন করতে বাধ্য হয়েছিল আইপিসিসি।
১৯৯৮ সালের পর উষ্ণতার মাত্রা কেন বাড়েনি তার কারণ ব্যাখা করতে চাপের মধ্যে রয়েছেন বিজ্ঞানীরা। যদিও ২০০০ থেকে ২০১০ এ সময় উষ্ণতার মাত্রা রেকর্ড পর্যায়ে উঠেছিল।
দুই হাজার পাতার প্রতিবেদনটি আগামী সপ্তাহে স্টকহোমে ১৯৫টি দেশের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে। প্রতিবেদনে কোনো পরিবর্তন আনা হবে কিনা সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন সদস্য দেশগুলোর প্রতিনিধিরা।
তবে গত জুনে নিজের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর কাছে ২০ পাতায় প্রতিবেদনের সারাংশ পাঠায়। সারাংশ দেখেই অনেক দেশ সমালোচনা করেছিল।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৩
এসএফআই/আরআইএস