ঢাকা: হাজতে থাকা তালেবানের সাবেক সেকেন্ড ইন কমান্ড মোল্লা আব্দুল গনি বারাদারকে শনিবার মুক্তি দিয়েছে পাকিস্তান। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওমর হামিদ এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
দেশটি আশা করছে এ মুক্তি তালেবান সমস্যার অচলাবস্থা নিরসনে ভূমিকা রাখবে।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শুক্রবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছিল যে, তালেবান সমস্যা সমাধানে শনিবার আটককৃত তালেবান নেতা মোল্লা গনিকে মুক্তি দেওয়া হবে।
সেনাপ্রধান জেনারেল আশফাক পারভেজ কায়ানি ও গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইর পরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল জহিরুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের সাথে এক বৈঠকের পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ ঘোষণা দেয়।
এর আগে প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র সম্পর্ক ও জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা সরতাজ আজিজ স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম ডনকে বলেছিলেন, ‘মোল্লা আব্দুল গনিকে মুক্তি দেওয়া হবে। তিনি অন্য কোথাও যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগ পর্যন্ত পাকিস্তানেই থাকবেন। তিনিও শান্তি প্রক্রিয়া শুরুর প্রয়োজনীয়তায় বিশ্বাস করেন। ’
তিনি আরও বলেন, ‘মোল্লা গনিকে আফগানিস্তানে হস্তান্তর করা হবে না। তাকে আফগানিস্তানে হস্তান্তর করা হলে তার মুক্তির উদ্দেশ্যই নষ্ট হয়ে যাবে। ’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় স্পষ্ট করে কিছু না বললেও খাইবার পাখতুনখাওয়ার তালেবান ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সূত্রে জানা গেছে, মুক্তির পর গনি করাচিতে তার পরিবারের সঙ্গেই থাকবেন।
মোল্লা গনি ১৯৬৮ সালে আফগানিস্তানের উরুজগান প্রদেশে জন্মগ্রহণ করেন। তালেবান আন্দোলনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হওয়ার আগে তিনি ১৯৮০’র সোভিয়েত যুদ্ধে সোভিয়েত সমর্থিত আফগান সরকারের বিরুদ্ধে আফগান মুজাহিদীনের পক্ষে লড়াই করেন।
গৃহযুদ্ধের পর কাবুলে ১৯৯৬ সালে তালেবানদের ক্ষমতা গ্রহণের সময় গনি মোল্লা ওমরের এক বিশ্বস্ত সঙ্গীতে পরিণত হন। তাকে বন্দর নগরী করাচি থেকে ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে গ্রেফতার করা হয়।
অভ্যন্তরীণ সম্পর্ক বিষয়ক বিশ্লেষক রহিমুল্লাহ ইসুফজাই জানিয়েছেন, মোল্লা গনির এ মুক্তিতে তালেবান সম্পর্কে খুবই অল্প প্রভাব পড়বে। কেননা সে আর তালেবানদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ কেউ নয়।
এদিকে আফগান সরকার পাকিস্তানের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। তারা মনে করছে এর মাধ্যমে ১২ বছরের যুদ্ধাবসানের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইয়ের মুখপাত্র আইমাল ফাইজি সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘আমাদের বিশ্বাস এর মাধ্যমে আফগান শান্তি প্রক্রিয়ায় সহায়তা হবে। আমরা এমন কিছুই চাইছিলাম। এ জন্যই আমাদের প্রেসিডেন্ট পাকিস্তান সফর করেছে। আমরা খুবই খুশি। ’
হামিদ কারজাই তার পাকিস্তান সফরে তালেবানদের সাথে একটি শান্তি আলোচনা আয়োজনে পাকিস্তান সরকারকে সহায়তার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১২১৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৩/আপডেটেড: ১৩৪০ ঘণ্টা
কেএইচকিউ/বিএসকে