ঢাকা: বাংলাদেশি কিশোরী ফেলানী হত্যার আসামিকে খালাস দেওয়ার প্রতিবাদে ভারতীয় পুলিশের সাইটসহ কয়েকশ সাইট হ্যাক করেছে বাংলাদেশের হ্যাকার গ্রুপ ‘সাইবার ৭১’।
এ বিষয়ে ‘সাইবার ৭১’ গ্রুপের দুই অ্যাডমিন রেড ফক্স ও এসিড খান তাদের বক্তব্যে জানান, নির্দোষ ফেলানীকে যারা হত্যা করেছে, সেই বিএসএফ সদস্য বিএসএফের বিশেষ আদালতে খালাস পেয়েছেন।
তারা বাংলানিউজকে জানান, কিশোরী ফেলানী বিয়ের পিঁড়িতে বসার জন্য কাঁটাতার পেরিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে আসার সময় ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) গুলিতে প্রাণ হারায়।
ফেলানীকে নির্মমভাবে হত্যার জন্য বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিএসএফের ১৮১ নম্বর ব্যাটালিয়নের সদস্য কনস্টেবল অমিয় ঘোষকে বিএসএফের বিশেষ আদালতে তোলা হয়। তিনিই ফেলানীকে গুলি করে হত্যা করেন।
অথচ বিচারে তাকে খালাস দেওয়া হয়। শুধু তাই-ই নয় ৫ সেপ্টেম্বর অমিয় ঘোষকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। ’
তারা বলেন, ‘এরই প্রতিবাদে আমরা প্রতিদিন শত শত ভারতীয় সাইটে আক্রমণ করে হ্যাক করে রাখছি। ফেলানী হত্যার সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা ভারতীয় বিভিন্ন সাইট হ্যাক করবো। ’
গ্রুপটির এক অ্যাডমিন রেড ফক্স বাংলানিউজকে বলেন, ‘এতদিন আমরা ভারতীয় বিভিন্ন সাধারণ সাইট হ্যাক করেছি। এরপর থেকে আমরা ভারতীয় সরকারি সাইট ও দূতাবাসের সাইট হ্যাক করবো। ’
তিনি বলেন, ‘ফেলানী হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত এ হ্যাকিং চলতেই থাকবে। ’
এদিকে, ভারতীয় পুলিশের দুটি সাইটে লগ অন করে দেখা যায়, তাতে লেখা রয়েছে- ‘স্টপ কিলিং অ্যান্ড ভায়োলেন্স বাই বিএসএফ ইন বাংলাদেশ বর্ডার। ’
সাইটের ওয়ালে কাঁটাতারে ঝুলন্ত ফেলানীর লাশ রয়েছে। এর নিচে লেখা- ‘সাইবার-৭১.. বাংলাদেশি হ্যাকার গ্রুপ’। এর নিচে লেখা- বিএসএফ..গো টু হেল। ’
এদিকে, হ্যাক করা শত শত সাইটের তালিকা বাংলানিউজের কাছে পৌঁছেছে। ‘সাইবার ৭১’ গ্রুপটি ফেলানী হত্যার আসামি খালাস হওয়ার পর থেকেই ভারতীয় সাইটগুলো হ্যাক করে আসছিল। হ্যাক করা সাইটের অন্যতম কয়েকটি এখানে তুলে ধরা হলো-
http://washimpolice.org/index.php, http://amravatiruralpolice.org/index.php’, http://bhandarapolice.org/index.php, http://hingolipolice.org/index.php
উল্লেখ্য, গত ১৩ আগস্ট ভারতের কুচবিহার জেলার সোনারি বিএসএফ ক্যাম্পে অবস্থিত সীমান্তরক্ষী বাহিনীটির নিজস্ব আদালত জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্সেস কোর্টে ফেলানী হত্যার বিচার শুরু হয়।
হত্যার জন্য দায়ী বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারায় অনিচ্ছাকৃত খুন এবং বিএসএফ আইনের ১৪৬ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।
অবশেষে ৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশি কিশোরী ফেলানী খাতুন হত্যার মামলায় অভিযুক্ত ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্য অমিয় ঘোষকে নির্দোষ বলে রায় দেয় আদালত।
পাঁচ জন বিচারকের সমন্বয়ে গঠিত বিচারক প্যানেলের নেতৃত্ব দেন বিএসএফের গুয়াহাটি ফ্রন্টিয়ারের ডিআইজি কমিউনিকেশনস সি পি ত্রিবেদী।
২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ি উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে কিশোরী ফেলানীকে গুলি করে হত্যা করে ভারতের ১৮১ ব্যাটালিয়নের চৌধুরীহাট ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৩
এবি/জেসিকে