ঢাকা: তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে অবস্থা এমন হয়েছে যে ২৪ ঘণ্টার বেশিরভাগ সময়টা কারও কাটে অনলাইনে। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেউ ঘুমানোর আগে স্ট্যাটাস দেন ‘ঘুমাতে যাচ্ছেন’, ঘুম থেকে উঠেই নতুন স্টাটাস, ‘ঘুম থেকে উঠলাম’।
এরপরে দৈনন্দিন কাজের ফাঁকে ফাঁকে তো চলে ফেসবুক, টুইটার, লিঙ্কডইন, ইউটিউবসহ নানা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে।
আধুনিক যুগে অনলাইনে সময় ব্যয় না করলে তাদের যেন নিজেকে আনস্মার্ট মনে হয়! কিন্তু অনলাইনআসক্ত মাঝে মাঝে আপসোস করেন, কেন এতো সময় অনলাইনে ব্যয় করলাম।
তাদের এ আপসোসের শেষ এখানেই নয়। অনলাইনআসক্তদের সতর্কবাণী শোনাচ্ছেন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যারা অনলাইনে অতিরিক্ত সময় ব্যয় করেন, তাদের স্মৃতিশক্তি লোপ পায়। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো ব্রাউজিংয়ে অতিরিক্ত সময় ব্যয় করলে তা স্মৃতিকে আঘাত করে, এমনকি ব্যক্তি তার গুরুত্বপূর্ণ তথ্যটিও ভুলে যেতে পারেন বা হারাতে পারেন।
বিশেষজ্ঞদের এ বক্তব্য কখনও অনলাইনআসক্তদের মুখেই শোনা যায়। মাঝে-সাঝে তাদের বলতে শোনা যায়, হ্যাঙ হয়ে গেছি! মাথা কাজ করছে না।
তথ্যে ভারাক্রান্ত আজকের এই সময়ে নিজেকে সুস্থ রাখতে নিয়মিতভাবে অফলাইনে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন স্টকহোমের কেটিএইচ রয়্যাল ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজির গবেষক এরিক ফ্রানসেন। তিনি স্বল্পস্থায়ী স্মৃতি ও স্নায়ুরোগের চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা করেছেন।
এরিক ফ্রানসেন বলেছেন, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো ব্রাউজ করতে করতে এক সময় ব্যবহারকারীর মস্তিষ্ক তথ্যের ভারে জবুথবু হয়ে যায়। আর এ কারণে খুব কম তথ্যই তার মস্তিষ্কে জমা হয়।
এই সমস্যাটা দেখা দেয় মস্তিষ্ক ব্যবস্থায় যা ওয়ার্কিং মেমোরি বলে পরিচিত। অনেকে একে আবার স্বল্প-স্থায়ী স্মৃতি হিসেবে জানেন। যোগাযোগের ক্ষেত্রে প্রয়োজন পড়ে মস্তিষ্কের এ ব্যবস্থার।
এরিক ফ্রানসেন বলেন, ‘তথ্য ছাকতে (ফিল্টার করতে) এবং কোনটি যোগাযোগের ক্ষেত্রে প্রয়োজন তা নির্বাচনে সহায়তা করে ওয়ার্কিং মেমোরি। এটি চলমানভাবে কাজ করতে ও চলমান যোগাযোগের কোনটি প্রয়োজনীয় তা সংগ্রহে সহায়তা করে কিন্তু এটি সীমিত।
মানুষের ওয়ার্কিং মেমোরি তিন থেকে চারটি আইটেম ধারণ করতে পারে। কিন্তু যখন ওয়ার্কিং মেমোরিতে ঠাসাঠাসি করে তথ্য রাখতে চেষ্টা করি, তখনই তা আর কাজ করে না।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৩
এসএফআই/এসআরএস