ঢাকা: কাগজের পাতা ভরে যে সংবাদগুলো আসে সেগুলো একেকটি ইতিহাসের সাক্ষী। কিন্তু কাগজের পত্রিকা নিজেই একদিন ইতিহাস হয়ে যাবে- গণমাধ্যম বিশারদদের এমন আশঙ্কা দিনকে দিন সত্য প্রমাণিত হচ্ছে।
ওয়াশিংটন পোস্ট, সিয়াটল পোস্ট-ইন্টেলিজেন্সার, ক্রিশ্চিয়ান সায়েন্স মনিটরের মতো বড় বড় পত্রিকা ও নিউজউইক, ইউএস নিউজ, ওয়ার্ল্ড রিপোর্টের মতো নামকরা সাময়িকীগুলো অনলাইনের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। এদের কোনোটি ছাপা সংস্করণের পাশাপাশি অনলাইনে চলে গেছে, আবার কোনোটি পুরোপুরি অনলাইনে গেছে।
এবার বিশ্বের পুরোনো পত্রিকাগুলোর একটি ‘লয়েড’স লিস্ট’ অনলাইনের চাপে বাধ্য হয়েই ছাপা সংস্করণ বন্ধ করে দিচ্ছে। লন্ডনের কফি শপে ২৭৯ বছর আগে যে ঐতিহ্যবাহী পত্রিকাটি যাত্রা শুরু করেছিল তা আর পাঠকের হাতে পৌঁছাবে না- ভাবতেই জানি কেমন লাগছে। কিন্তু এটাই সত্য।
বিবিসি, গার্ডিয়ান, টেলিগ্রাফ, ইউপিআই জানায়, পত্রিকাটির শেষ প্রিন্ট কপি মানুষের হাতে আসবে ২০ ডিসেম্বর। এরপরই ‘লয়েড’স লিস্ট’ শুধুই ইতিহাস হয়ে থাকবে।
নৌ পরিবহনের সংবাদ বিষয়ক পত্রিকাটি অবশ্য আগে থেকেই অনলাইন সংস্করণ চালু করেছে। চলতি বছরের জুনে ব্রিটেনে পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, ৯৭ ভাগের বেশি মানুষ অনলাইনে তথ্য পেতে চায়। আর ‘লয়েড’স লিস্ট’ এর মোট পাঠকের মাত্র ২৫ ভাগ প্রিন্ট সংস্করণ ব্যবহার করে থাকেন।
সম্পাদক রিচার্ড মিড এটাকে ‘বর্তমান বিবর্তনের অংশ’ বলে মেনে নিয়েছেন। তিনি স্বীকার করেছেন, ব্যাপকভাবে বিকাশমান অনলাইনই লয়েড’স লিস্টকে ৩০০ বছরের ইতিহাস না ছুঁয়ে এ সিদ্ধান্ত নিতে প্রভাবিত করেছে।
লয়েড’স লিস্টের গড় পাঠক নৌ পরিবহনের মাঝারি থেকে ঊর্ধ্বতন নির্বাহীরা। এসব পাঠক একদিন শাংহাইয়ের নদী বন্দরে থাকলে পরের দিন হামবুর্গের কনফারেন্সে যোগ দেন। পাঠকরা আইফোন, আইপড, ব্লাকবেরি থেকে প্রয়োজনে সংবাদ জেনে নেন। তারা ছাপা সংস্করণের জন্য অপেক্ষা করেন না।
তবে তিনি জানান, লয়েড’স লিস্টের পরবর্তী বিবর্তনে যেতে পেরে তারা গর্বিত।
রিচার্ড বলেন, ১৭৩৪ সালের লয়েড’স লিস্ট এর উদ্দেশ্য এখন আর আগেই মতো নেই। সবকিছুতেই পরিবর্তন এসেছে তাই ‘লয়েড’স লিস্ট’এ পরিবর্তন আসছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১৩
কেএইচ/এসএফআই/আরআইএস