ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

স্বাস্থ্যবিমা’র অনিশ্চয়তায় শঙ্কিত জনগণ, মাঠে নেমেছে ডেমোক্রেটরা

শিহাবউদ্দীন কিসলু, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০১ ঘণ্টা, অক্টোবর ৬, ২০১৩
স্বাস্থ্যবিমা’র অনিশ্চয়তায় শঙ্কিত জনগণ, মাঠে নেমেছে ডেমোক্রেটরা

নিউইয়র্ক: যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে ‘ওবামা কেয়ার’ বিতর্কে সরকার অচল করে দিতে রিপাবলিকান স্পিকার জন বোহেনা যে একরোখা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাতে স্বাস্থ্যবিমা’র অনিশ্চয়তায় শঙ্কিত হয়ে পড়েছে দেশটির দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর জনগণ।

তবে স্পিকারের এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারে মাঠে নেমেছে ক্ষমতাসীন দল ডেমোক্রেট পার্টি।

সরকার অচলের এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে ১০ লাখ লোকের স্বাক্ষর সংগ্রহে মাঠে নেমেছে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার দল।

ডেমোক্রেট দলীয় সূত্র জানিয়েছে, সরকার অচলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই ৬ লাখেরও বেশি স্বাক্ষর সংগ্রহ করা গেছে। তবে স্বাক্ষরের পরিমাণ ১০ লাখে উন্নীত করতে চান তারা।

সরেজমিনে, ইমেল, ফেসবুক,  টুইটারসহ বিভিন্ন সামাজিক গণমাধ্যমে এই স্বাক্ষর গ্রহণ অভিযান চলছে। প্রত্যেক স্বাক্ষরকারীকেই অনুরোধ করা হচ্ছে, তারা একেকজন যেন আরও পাঁচ জনকে স্বাক্ষর প্রদানে উৎসাহিত করেন।

প্রেসিডেন্ট ওবামার দল ডেমোক্রেট পার্টির মিডিয়া সেল থেকে বলা হয়েছে, এটা প্রায় অবিশ্বাস্য, টেড ক্রুজের নেতৃত্বে ওবামা কেয়ার’র বিরুদ্ধে কংগ্রেসের রিপাবলিকান সদস্যরা সরকার অচলে সমর্থন জানিয়েছেন। এ পরিস্থিতিতে রিপাবলিকান পার্টির কট্টরপন্থিদের কথা না শুনতে এবং ‘ওবামা কেয়ার’র ব্যাপারে স্পিকার জন বোহেনার সম্মতি আদায় করতে যত বেশি সম্ভব আমেরিকান নাগরিকদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

এদিকে সরকারের সেবাখাতের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র সরকার ও জনজীবনে প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। সরকার ও সরকারের ব্যয়ে যেমন কাটছাঁট হয়েছে তেমনি স্বাস্থ্যবিমা সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রেও ভোগান্তির অভিযোগ পাওয়া গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি রাজ্যে ‘ওবামা কেয়ার’ আইন ১ অক্টোবর থেকে কার্যকর হওয়ায় নতুন অনলাইন রেজিস্ট্রেশন শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশিসহ হাজারো কর্মজীবীর আগেকার মেডিকেইড সাপোর্টেড (ফেডারেল সরকারের সহায়তা) স্বাস্থ্যবিমা অকার্যকর হয়ে গেছে। ফলে স্বাস্থ্যবীমা’র অনিশ্চয়তায় দরিদ্র ও সাধারণ মধ্যবিত্ত মানুষ শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।

‘ওবামা কেয়ার’ অনুযায়ী যেসব প্রতিষ্ঠানে ১৫ জনের অধিক পে-রোলভিত্তিক কর্মচারি রয়েছেন, সেসব প্রতিষ্ঠানে মেডিকেইড সাপোর্টেড স্বাস্থ্যবিমা বাতিল হবে এবং ওই প্রতিষ্ঠানকেই তার কর্মচারিদের জন্য নতুন করে বাধ্যতামূলকভাবে স্বাস্থ্যবিমা নিশ্চিত করতে হবে।

তবে এক্ষেত্রে নতুন সমস্যাও দেখা দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাধ্যতামূলকভাবে কর্মচারিদের স্বাস্থ্যবিমা নিশ্চিত করতে এক বছর সময় বেধে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি প্রয়োজনে আবেদন করে আরও অতিরিক্ত সময় বাড়াতে সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এতে আগেকার স্বাস্থ্যবিমা বাতিলের পর প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নতুন করে করা স্বাস্থ্যবিমা চালু হওয়া পর্যন্ত মধ্যবর্তী অনির্দিষ্ট সময়ের চিকিৎসা সেবা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। আগেকার স্বাস্থ্যবিমা বাতিল হয়ে যাওয়ায় নতুন বীমা চালু হওয়া পর্যন্ত পকেট থেকেই অর্থ ব্যয় করতে  হবে হাজারো দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষকে।

তবে এখানে একটি স্বস্তির খবর হলো যারা ‘সেলফ এমপ্লয়মেন্ট’ হিসেবে ট্যাক্স ফাইল করেন বা যাদের বার্ষিক আয় ১১ হাজার ৫শ ডলারের নিচে তাদের ক্ষেত্রে মেডিকেইড সাপোর্টেড স্বাস্থ্যবিমায় সেবা পেতে কোনো সমস্যা নেই এখন পর্যন্ত।

সরকারি স্বাস্থ্যবীমা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, শুক্রবার থেকে ‘ওবামা কেয়ার’ কর্মসূচি বিষয়ে তাদের প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। তবে সবকিছুই স্থিতিশীল পর্যায়ে আসতে কিছুটা সময় নেবে বলে স্বীকার করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৬, ২০১৩
এইচএ/বিএসকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।