ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

সন্ত্রাস দমনে নয়া কৌশল ব্রিটেনের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ৬, ২০১৩
সন্ত্রাস দমনে নয়া কৌশল ব্রিটেনের

ঢাকা: ব্রিটেনের সংগঠিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর এক চতুর্থাংশ নিয়ন্ত্রণ করে বিদেশি অপরাধীরা। বিদেশি অপরাধীদের সনাক্ত ও বিতাড়িত করতে নতুন কৌশল প্রয়োগ করতে যাচ্ছে দেশটি।



ব্রিটিশ একটি সংবাদ মাধ্যমের খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সংবাদ মাধ্যমটি জানিয়েছেন, ব্রিটেনের অপরাধ জগতের ওপর সরকারের অনুসন্ধানি প্রতিবেদন সোমবার প্রকাশিত হতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে, ওই প্রতিবেদনে বলা হবে, ব্রিটেনে ৫ হাজার ৫শ’র বেশি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে। আর এ সংখ্যার ২৫ শতাংশ পরিচালিত হয় আন্তর্জাতিক মাফিয়াচক্রের মাধ্যমে।

ব্রিটিশ গোয়েন্দারা নিজ দেশের জন্য আফ্রিকার নাইজেরিয়া, ইউরোপের রোমানিয়া, পোলাল্ড, লিথুয়ানিয়া এবং এশিয়ার পাকিস্তান ও ভিয়েতনামকে হুমকিস্বরূপ মনে করা হচ্ছে।   আলবানিয়া ও তুরস্ককেও নিজ দেশের নিরাপত্তার জন্য উদ্বেগের কারণ হিসেবে সন্দেহের চোখে দেখেন ব্রিটিশ গোয়েন্দারা।

এরই মধ্যে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নতুন কঠোর আইনের আওতায় বিদেশি অপরাধীদের দেশকে বিতাড়িত করার পরিকল্পনার ঘোষণা দিয়েছেন। তার এমন ঘোষণার পরই অনুসন্ধানীমূলক প্রতিবেদন প্রকাশ পেতে যাচ্ছে।

ব্রিটিশ পত্রিকা সানডে টাইমস জানিয়েছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হিসাব মতে ‘ব্রিটেনে হামলা  চালানোর’ ষড়যন্ত্রকারী সন্ত্রাসীদের সংখ্যা ৩৭ হাজার। এদের মধ্যে ৭ হাজার ৪শ বিদেশি অপরাধীকে ‘খুবই ক্ষতিকর’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

সোমবার সন্ত্রাস দমনে নতুন পদক্ষেপের ঘোষণা দেবেন ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থেরেসা মে। নতুন কৌশলে থাকতে পারে, সন্ত্রাসীদের ব্রিটেনে ঢুকতে না দেওয়ার জন্য প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা জোরদারের পাশাপাশি দেশটিতে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানো বন্ধ করতে বিদেশি অপরাধীদের চিহ্নিত করা, তাদের নিমূল করা এবং দেশ থেকে বিতাড়িত করা।

৪৫ কোটি পাউন্ড ব্যয়ে নতুন গোয়েন্দা সংস্থা ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (জাতীয় অপরাধ সংস্থা-এনসিএ) গঠন করেছে ব্রিটিশ সরকার। সোমবার এর উদ্বোধন  করবেন থেরেসা মে। ব্রিটেনের এফবিআই মনে করা হচ্ছে এনসিএ-কে।

থেরেসা জানিয়েছেন, সংগঠিত অপরাধের কারণে প্রতিবছর ব্রিটেনের ৩ হাজার ৪শ কোটি পাউন্ড ক্ষতি হচ্ছে। সাইবার অপরাধের কারণে আরও ২শ কোটি পাউন্ড ক্ষতি হচ্ছে দেশের।

জানা গেছে, নতুন পদক্ষেপে অভিবাসন কর্মকর্তাদের অফিস থাকবে পুলিশ স্টেশনগুলোতে। অভিবাসন কর্মকর্ত‍ারা বিদেশি অপরাধীদের সনাক্ত করবেন। বিদেশিরা দেশে বৈধ বা অবৈধভাবে প্রবেশে করেছেন কিনা তা দেখবেন তারা। অবৈধভাবে প্রবেশকারী কিংবা বিদেশে কোনো অপরাধ করেছেন-এমন অভিযুক্ত বা কারও বিরুদ্ধে কোনো দেশে গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকলে তারা বিতাড়িত হবেন।

এরইমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান চালু করেছে ব্রিটিশ সরকার। ‘নেক্সাস’ নামে লন্ডনে চালানো অভিযানে মাত্র ১৮ মাসে এক হাজার বিদেশি অপরাধীকে বিতাড়িত করেছে ব্রিটিশ সরকার।

কারও বিরুদ্ধে অপরাধের যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেলে বিতাড়িত করার আগে তার বিচার করতে পারবে ব্রিটিশ সরকার। আর প্রমাণ পাওয়া না গেলে ওই ব্যক্তি তার নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে।

কেউ বিতাড়িত হলে ব্রিটেনে তার প্রবেশের ওপর কমপক্ষে এক দশক নিষেধাজ্ঞা থাকবে।

নেক্সাস অভিযান সারা দেশে চালানোর অংশ হিসেবে নিরাপত্তা বাহিনীতে সদস্য নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। আন্তঃমহাদেশীয় অপরাধ চক্রগুলোকে দমন করতে ব্রিটিশ নিরাপত্তা সংস্থায় ইউরোপীয় পুলিশদেরও নিয়োগ দেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৬, ২০১৩
এসএফআই/জেসিকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।