ঢাকা: পদার্থবিদ্যায় অনন্য গবেষণার স্বীকৃতি স্বরূপ যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন ব্রিটিশ বিজ্ঞানী পিটার ওয়ের হিগস ও বেলজিয়ামের বিজ্ঞানী ফ্রাঁসোয়া এংলার্ট।
সোমবার সুইডেন সময় সকাল ১২টা ৪৫ মিনিটে (বাংলাদেশ সময়: বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটে) সাংবাদিকদের সামনে তার নাম ঘোষণা করে রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস।
নোবেল কমিটি জানায়, অতিপারমাণবিক কণার ভর উৎপত্তি খুঁজতে গিয়ে ‘হিগস বোসন’ বা ঈশ্বর কণার অস্তিত্বের তাত্ত্বিক ধারণা দেওয়ায় তাদের এই পুরস্কার দেওয়া হলো।
ঈশ্বর কণা’র অস্তিত্ব থাকার ব্যাপারে হিগস ও এংলার্টের এই তাত্ত্বিক ধারণা সম্প্রতি সুইজারল্যান্ডভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইউরোপিয়ান অর্গানাইজেশন ফর নিউক্লিয়ার রিসার্চ’র (সার্ন) বিজ্ঞানীদের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়।
‘হিগস বোসন’ কণা সম্পর্কে এমন ধারণা, যা ব্যাখ্যা করে, কীভাবে কোনো বস্তুর ভর সৃষ্টি হয়। এছাড়া এই তত্ত্ব ব্যাখ্যা করে, ‘ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফোর্স’র তুলনায় কেন ‘উইকফোর্স’র ব্যাপ্তি ক্ষুদ্র। এর ফলে মহাবিশ্বের সৃষ্টি রহস্য সম্পর্কে ধারণা পেতে সাহায্য করবে।
১৯৬৪ সালে প্রথমবারের মতো ‘ঈশ্বর কণা’ তত্ত্বের ধারণা দেন প্রফেসর পিটার হিগস। এরপর এই তত্ত্ব অনুযায়ী গবেষণা কাজ চালিয়ে যান হিগস ও এংলার্ট। হিগস বোসন তত্ত্বানুযায়ী, ৪৮ বছর পর ‘ইশ্বর কণা’ নামে পরিচিত ‘হিগস পার্টিকেল’র খোঁজ পান সার্ন’র বিজ্ঞানীরা।
নোবেল কমিটি জানিয়েছে, সম্মাননা বাবদ একটি করে মেডেল, ডিপ্লোমা ও ৮০ লাখ সুইডিশ ক্রাউন (প্রায় সাড়ে সাড়ে ১২ লাখ মার্কিন ডলার) পাবেন হিগস ও এংলার্ট।
উইকিপিডিয়ার তথ্য মতে, ১৯২৯ সালে ২৯ মে স্কটল্যান্ডের এডিনবার্গে জন্মগ্রহণ করেন হিগস। ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন, কিংস কলেজ লন্ডন, ইমপেরিয়াল কলেজ লন্ডন ও ইউনিভার্সিটি অব এডিনবার্গ থেকে পড়াশোনা করেছেন তিনি। বর্তমানে ইউনিভার্সিটি অব এডিনবার্গেই এমিরেটাস প্রফেসর হিসেবে অধ্যাপনা করছেন তিনি।
১৯৩২ সালের ৬ নভেম্বর বেলজিয়ামে জন্মগ্রহণ করেন এংলার্ট। ১৯৫৫ সালে ইউনিভার্সিটি লিবার দ্য ব্রাসেলস থেকে ইলেকট্রিক্যাল-মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক পাস করেন। ১৯৫৯ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই পদার্থবিজ্ঞানে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। বর্তমানে ইউনিভার্সিটি লিবার দ্য ব্রাসেলসে কর্মরত আছেন এই নোবেলজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী।
উল্লেখ্য, গত বছর এ শাখায় নোবেল পুরস্কার লাভ করেন ফ্রান্সের বিজ্ঞানী সার্জ হারোশে এবং যুক্তরাষ্ট্রের ডেভিড ওয়াইনল্যান্ড। আলোর মৌলিক একক (ফোটন) বিশুদ্ধ কোয়ান্টাম অবস্থা পরিমাপের পদ্ধতি আবিষ্কারের স্বীকৃতি হিসেবে তাদের দু’জনকে পদার্থ বিজ্ঞানের গবেষণার ক্ষেত্রে সবচেয়ে সম্মানজনক এ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।
১৯০১ সাল থেকে নিয়মিত নোবেল পুরস্কার প্রদান করা হচ্ছে। চিকিৎসা, পদার্থ, রসায়ন, সাহিত্য, শান্তি ও অর্থনীতি- মোট এ ছয়টি খাতে বিশেষ অবদান রাখার জন্য পুরস্কারে ভূষিত করে আন্তর্জাতিক নোবেল কমিটি।
পদার্থে প্রথম নোবেল পুরস্কার পান জামার্ন পদার্থবিদ উইলহেম রনজেন। এক্স-রে আবিস্কারের জন্য তাকে এ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৮, ২০১৩/আপডেট: ১৮০৪ ঘণ্টা
এইচএ/আরকে