ঢাকা: শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় পাইলিন ভারতের উড়িষ্যার গোপালপুরে ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার বেগে আঘাত হেনেছে। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
শনিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে ঝড়টি আঘাত হানে।
পাইলিন আঘাত হানার আগে সৃষ্ট ঝড়ে উড়িষ্যায় ৭ জন নিহত হয়েছে। আঘাতের পর তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। আঘাত হানার আগে ধারণা করা হয়েছিল, পাইলিনে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ।
পাইলিন প্রথমে উড়িষ্যার গোপালপুরে আঘাত হানে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করেছিলেন, ২৪০ কিলোমিটার বেগে আঘাত হানবে পাইলিন।
পাইলিনের ছোবল থেকে বাঁচাতে উড়িষ্যা ও অন্ধ্র প্রদেশের প্রায় ৬ লাখ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়। ভারতের ২৩ বছরের ইতিহাসে এটি সবচেয়ে বড় আকারে মানুষকে নিরাপদস্থানে সরিয়ে নেওয়ার ঘটনা।
উদ্ধার তৎপরতার জন্য জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা উদ্ধার বাহিনীর (এনডআরএফ) ২ হাজার ৩০০ সদস্য মাঠে নামানো হয়েছে। এছাড়া সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীকে উদ্ধার কাজে নামানো হয়েছে।
উদ্ধার কাজের জন্য বিমান বাহিনীর ১৮টি শপার, ১২ টি বিমান প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ত্রাণ কাজে উড়িষ্যায় ৬ কলাম ও অন্ধ্র প্রদেশে ৪ কলাম সৈন্য পাঠানো হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে নৌ বাহিনীর দুটি জাহাজ। নৌবাহিনীর ৬০টি দলও প্রস্তুত রয়েছে।
ক্যাটাগরি ৫ হারিকেন পাইলিনকে উড়িষ্যায় ১৯৯৯ সালে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড়ের চেয়ে ভয়াবহ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। ১৯৯৯ সালে ঘূর্ণিঝড়ে কমপক্ষে ১০ হাজার মানুষ নিহত হয়।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় পাইলিনের প্রভাবে সৃষ্ট ঝড়ে উড়িষ্যার গোপালপুর, অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীকাকুলামে শুক্রবার রাত থেকে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন হয়ে পড়ে। পাইলিন আঘাত হানার আগে থেকেই দুই প্রদেশের উপকূলীয় জেলাগুলোতে প্রচণ্ড বৃষ্টিপাত হয়।
এ মাসের শুরুতে থাইল্যান্ড উপসাগরে উৎপত্তি নেওয়া ঝড়টি বঙ্গোপসাগরে এসে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়। ৯ অক্টোবর ভারতীয় আবহাওয়াবিদরা ঘূর্ণিঝড়টির নাম দেন পাইলিন।
ভিয়েতনামের হো চি মিন সিটির পশ্চিমে থাইল্যান্ড উপসাগরে সৃষ্ট ঝড়টি মালয় উপদ্বীপ অতিক্রম করে, ওয়েস্টার্ন প্যাসিফিক বেসিনের ওপর দিয়ে বয়ে যায় ৬ অক্টোবর। ৭ অক্টোবর আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে নতুন রূপে দেখা দেয় ঝড়টি এবং পশ্চিম-উত্তরাঞ্চলের দিকে এগিয়ে যায়। ৯ অক্টোবর ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে আবহাওয়াবিদরা এর নাম দেয় পাইলিন। পাইলিন আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের ওপর দিয়ে বঙ্গোপসাগরে স্থানান্তরিত হয়।
বঙ্গোপসাগের অবস্থান নেওয়ার পর ঘূর্ণিঝড়টির দ্রত শক্তিশালী হতে থাকে এবং চোখের মতো রূপ নেয়। ১০ অক্টোবর খুবই শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়। ওই সময় আবহাওয়াবিদরা ঝড়টিকে হারিকেন ১ ক্যাটাগরিভুক্ত করেন। ১১ অক্টোবর পাইলিনের মাত্রা বাড়লে একে হারিকেন ৪ ক্যাটাগরিভুক্ত করেন আবহাওয়াবিদরা। এর আগে ঝড়টি নতুন রূপ নেয়। ১১ অক্টোবর দিনের শেষ ভাগে পাইলিনের শক্তির মাত্রা বাড়লে ৪ থেকে বাড়িয়ে ৫ ক্যাটাগরির হারিকেন ভুক্ত করা হয়।
সাফির-সিম্পসন হারিকেন স্কেল মতে, হারিকেনের ক্যাটাগরি ৫ হচ্ছে ভয়াবহতার দিকে দিয়ে দ্বিতীয়তম। এরপরের ক্যাটাগরিটি হচ্ছে ৬।
বাংলাদেশ সময়: ২১১০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০১৩/আপডেট: ১০২৭
এসএফআই/জেডএস/আরআইএস/আরকে