ঢাকা: আঘাত হানার পর উড়িষ্যা অতিক্রম করে ঘণ্টা ২০ কিলোমিটারের কম গতিতে ভারতের উত্তরদক্ষিণাঞ্চলে এগুছে পাইলিন। শনিবার রাতে পাইলিনের আঘাতে উড়িষ্যা ও অন্ধ্রপ্রদেশে কেউ মারা যায়নি বলে দাবি করেছে কর্তৃপক্ষ।
ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার গতিতে পাইলিনের আঘাতের পর তিনজন মারা গেছে বলে ভারতের কয়েকটি সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে। কিন্তু তাদের এ দাবিকে নাকচ করে দিয়েছে উড়িষ্যা সরকার ও ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর (আইএমডি)।
উড়িষ্যা সরকার ও আইএমডির বক্তব্য, পাইলিন আঘাত হানার পর কেউ মারা যায়নি। যে আটজন মারা গেছে তারা পাইলিনের আগে ঝড়ে গাছ পড়ে মারা গেছেন।
আইএমডির প্রধান এলএস রাঠোর বলেছেন, ‘সম্ভবত হতাহতের সংখ্যা শূন্য। ’
পাইলিনের কারণে ওড়িষ্যার উপকূলীয় জেলা গঞ্জমের গোপালপুরে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে। রাজ্যের অন্যান্য অংশেও ব্যাপক-বৃষ্টিপাত ও ঝড় হয়েছে।
ঝড় ও মুষলধারে বৃষ্টি কারণে যোগাযোগ ও বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ভারতীয় মিডিয়াগুলো আইলিনকে গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ হবে বলে আশঙ্কা করেছিল। ১৯৯৯ সালে ঘূর্ণিঝড়ের চেয়েও একে ভয়াবহ ভেবেছিলেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞেরা। ১৯৯৯ সালের ঘূর্ণিঝড়ে কমপক্ষে ১০ হাজার জন নিহত হয়।
১৯৯৯ সালের তিক্ত অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে হতাহতের সংখ্যা শূন্যতে রাখতে পেরেছে ভারত সরকার। ঝড় আঘাত হানার দুদিন আগ থেকেই নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয় উড়িষ্যা ও অন্ধ্র প্রদেশের উপকূলবাসীদের।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত উড়িষ্যার উচুভূমিতে অবস্থিত আশ্রয় কেন্দ্রে ৯ লাখ মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়। অন্যদিকে পার্শ্ববর্তী অন্ধ্রপ্রদেশে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয় লাখ খানেক মানুষ।
উদ্ধার তৎপরতা চলছে পুরোদমে। উদ্ধার তৎপরতাকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় হিসেবে দাবি করেছেন ওড়িষ্যার মুখ্যমন্ত্রী নাভিন পাতনায়েক।
তিনি বলেছেন, পাইলিনে হতাহতের নূন্যতম রাখতে সফল হলেও রাজ্য সরকারের জন্য পুনর্বাসন এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
তিনি বলেন, ‘আমরা সফলভাবে ৯ লাখ মানুষকে সফলভাবে সরিয়ে নিতে পেরেছি। দেশে মানুষ সরিয়ে নেওয়ার ইতিহাসে এটি সবচেয়ে বড় ঘটনা। ’
জাতীয় দুর্যোগ উদ্ধার বাহিনীর (এনডিআরএফ) প্রধান কৃষ্ণা চৌধুরি বলেন, আমাদের দল উড়িষ্যা ও অন্ধ্রপ্রদেশে উদ্ধার ও ত্রাণ বিতরণ কাজে নিয়োজিত রয়েছে। এখনও আমরা হতাহতের কোনো খবর পাইনি।
উদ্ধার তৎপরতার জন্য জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা উদ্ধার বাহিনীর (এনডিআরএফ) ২ হাজার ৩০০ সদস্য মাঠে নামানো হয়েছে। এছাড়া সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীকে উদ্ধার কাজে নামানো হয়।
উদ্ধার কাজের জন্য বিমান বাহিনীর ১৮টি শপার, ১২ টি বিমান ব্যবহার করা হচ্ছে। ত্রাণ কাজে উড়িষ্যায় ৬ কলাম ও অন্ধ্র প্রদেশে ৪ কলাম সৈন্য পাঠানো হয়েছে।
মানুষ মারা না গেলেও গাছপালা-বাড়িঘর উড়ে গেছে, ভেঙে গেছে। কর্মকর্তারা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করছে। আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়াদের খাদ্য সরবরাহ করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৩
এসএফআই/আরআইএস