ঢাকা: মাত্র দু বছরের শাসনকালে নানা আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন। সবকিছুই সামলে নিয়েছেন নিজের মতো করে।
বলা হচ্ছে, দিদি মমতা ব্যানার্জির কথা। দিদিকে নিয়ে কাতারভিত্তিক আল-জাজিরার একটি বিশেষ প্রতিবেদনে তাকে বলা হয়েছে ‘ইন্ডিয়া’স আল্টিমেট পপুলিস্ট’।

পশ্চিমবঙ্গের ৮ কোটি জনসংখ্যার মধ্যে ১০ লাখ বেকার। রাজ্যের প্রতি ৮ জনের একজন নিজেকে বেকার হিসেবে নিবন্ধিত করেছেন। বেকারদের জন্য ‘ভাতা কর্মসূচি’ চালু করেছেন তিনি। কর্মসংস্থান খুব বেশি একটা সৃষ্টি হয়নি। বিনিয়োগও তেমন আকৃষ্ট করতে পারে নি পশ্চিমবঙ্গ।
রাজ্যের অর্থনৈতিক উন্নয়নে তবুও অনঢ় দিদি। এরই মধ্যে কল্যাণমূলক কিছু কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন তিনি।
বাঙালি হিন্দুদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গা পূজার আগে এসব কর্মসূচির ঘোষণা দেন তিনি। একটি কর্মসূচি হচ্ছে ‘যুবশ্রী’। এ কর্মসূচির আওতায় অস্টম শ্রেণী পাস করার বেকার তরুণ ও তরুণিরা মাসে দেড় হাজার রুপি থেকে এক লাখ হাজার রুপি পাবেন। এ কর্মসূচিতে মমতার সরকারের প্রতি বছর ব্যয় হবে ১৮০ কোটি রুপি।
এ কর্মসূচি সমুদ্রের বুকে এক ফোটা জল হলেও সবার মনে জায়গা করে নিয়েছে যে, সরকার গরিব আর হতভাগ্যদের জন্য কিছু একটা করছে বলে মন্তব্য করেন ‘পশ্চিমবঙ্গ: পরোক্ষ বিপ্লব’ (ওয়েস্ট বেঙ্গল: দ্য প্যাসিভ রেভুল্যুশন) গ্রন্থের লেখক রণবীর সাম্মাদার।

তিনি বলেছেন, মমতা গণমানুষের কাছে থাকার জন্য ব্যাকুল। পূর্বসূরী কমিউনিস্টদের মতো নন তিনি।
‘যুবশ্রী’ কর্মসূচির আগে কয়েকদিন আগে ‘কণ্যাশ্রী’ কর্মসূচির ঘোষণা দেন মমতা। বাল্যবিবাহ বন্ধে এ কর্মসূচি ঘোষণা দেন দিদি। দিদির এ কর্মসূচির আওতায় গরিব পরিবারের মেয়েরা পড়াশোনার জন্য মাসে নগদ ৫০০ টাকা পাবেন। এর বিনিময়ে পরিবারকে প্রতিশ্রুতি দিতে হবে, মেয়েকে ১৮ বছরের আগে বিয়ে দিয়ে দেবেন না তারা। বিয়ের জন্য মেয়ের পরিবারকে এককালীন ২৫ হাজার ডলারও দেবে মমতার সরকার। এ কর্মসূচিতে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের বছরে ব্যয় হবে এক হাজার কোটি রুপি।
চলতি বছরের শুরুতে সরকারি অনুদান প্রাপ্তদের তালিকায় নতুন করে ৩ হাজার ৭শ কমিউনিটি গ্রুপের নাম অন্তর্ভুক্ত করেছেন। এসব গ্রুপের প্রতিটি ভচরে ২ লাখ রুপি করে পাবে। এতে রাজ্য সরকারের ১০০ কোটি রুপি ব্যয় হবে।
গেল দুর্গা পূজায় অনেকে মণ্ডপে পৃষ্ঠপোষকতা করার জন্য সরকারের বিভিন্ন বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। যারা খুব জমকালো করে দুর্গা পূজার আয়োজন করে তাদের ‘সংকুচিতভাবে’ করার আহ্বান জানান তিনি।

বিরোধীরা বলছে, ভোট কিনতেই এ কর্মসূচি চালু করেছে মমতা। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
মমতা ব্যানার্জির এসব কর্মসূচির কারণে রাজ্যের ঋণ ঢের বেড়ে যাবে বলে অর্থনীতিবিদরা আশঙ্কা করছেন।
মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে তৃণমূল নেত্রী রাজ্যের রাজধানী কলকাতা থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরের সিঙ্গুরে মোটর প্রস্তুত কারখানা নির্মাণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে খেটে খাওয়া মানুষের সমর্থন আদায় করেছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০১৩
এসএফআই/আরআইএস