ঢাকা: রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দিয়ে যুগোস্লাভিয়ার সাবেক নেতা মার্শাল টিটোর স্ত্রীর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করেছে সার্বিয়া। রাজধানী বেলগ্রেডের প্রশস্ত হাউজ অব ফ্লোয়ারস সমাধিক্ষেত্রে স্বামীর পাশেই সমাহিত করা হয়েছে জোভানকা ব্রজকে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসিবিরোধী যুদ্ধে অংশ নেওয়া সেনাদলের সম্মানিত সদস্য হিসেবে তাকে পূর্ণ সামরিক মর্যাদা দেওয়া হয়েছে বলে সার্বীয় কর্মকর্তারা জানান।
সার্বিয়ার প্রধানমন্ত্রী ইভিকা ডেকিক অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠানের নেতৃত্ব দেন। তিনি বলেন, ‘এ দিনটি (২৬ অক্টোবর) যুগোস্লাভিয়ার সবশেষ আইকনের বিদায় হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। ’
জোভানকা ব্রজের সঙ্গে সরকার যে আচরণ করেছে সে নিয়ে দুঃখও প্রকাশ করেন তিনি। তিনি বলেন, জোভানকা ব্রজের সঙ্গে তার স্বামীর মৃত্যুর পর যে আচরণ করা হয়েছে সেটি ছিল ‘পাপ’।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যে দলে থেকে তিনি লড়াই করেছিলেন সে দলের বেঁচে থাকা যোদ্ধারাও অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় উপস্থিত ছিলেন।
১৯৮০ সালে স্বামীর মৃত্যুর পর বেলগ্রেডে নিঃসঙ্গভাবে বাস করতে হয় ব্রজকে। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর । অভ্যুত্থানের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে এক সময় তাকে গৃহবন্দী হিসেবে জীবন কাটাতে হয়। তার পরিচয়পত্রও নিয়ে গিয়েছিলেন সরকারি কর্মকর্তারা।
বেলগ্রেডের উপকণ্ঠ দেদেনজিতে একলা থাকার সময় গণমাধ্যমেও সাক্ষাৎকার দিতেন না বললেও চলে। স্বামীর মৃত্যুর পর ২০০৯ সালে পলিটিকা পত্রিকাকে তিনি সাক্ষাৎকার দেন।
সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘রাতে পরা পোশাকে তারা আমাকে তাড়িয়ে দিয়েছে...কোন কিছুই নিতে দেয়নি...এমনকি দুজনের এক সঙ্গে একটি ছবি, একটি চিঠি বা একটি বইও। ’
গৃহবন্দীত্ব সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘আমি নিঃসঙ্গ ছিলাম এবং আমাকে অপরাধী হিসেবে মনে করা হতো...স্বশস্ত্র প্রহরী ছাড়া আমাকে বের হতে দেওয়া হতো না। ’
গত আগস্টে হার্টের সমস্যার কারণে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শেষ ইচ্ছানুযায়ী, হাউজ অব ফ্লোয়ারসে স্বামী মার্শাল টিটোর কবরের পাশে তাকে শায়িত করা হয়।
বর্তমানের ক্রোয়েশিয়ায় ১৯২৪ সালের ৭ ডিসেম্বর সার্ব নৃ-গোষ্ঠীর একটি কৃষক পরিবারে জন্ম নেন তিনি। মাত্র ১৭ বছর বয়সে নাৎসীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে নিতে যুদ্ধে যোগ দেন তিনি। ১৯৫২ সালে যুগোস্লাভিয়ার কর্তৃত্ববাদী নেতা মার্শাল জোসেফ ব্রজের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
বাংলাদেশ সময়: ২৩২৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১৩
এসএফআই/আরআইএস