লন্ডন: একটি যৌন হয়রানী মামলায় দুই পাকিস্তানি যুবকের দণ্ড লাভের পর ব্রিটেনের সাবেক বিচার মন্ত্রী ও লেবার পার্টির প্রবীণ নেতা জ্যাক স্ট্রর একটি মন্তব্য নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
জ্যাক স্ট্র ওই মামলার রায় সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেছেন, পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত পুরুষরা যৌন হয়রানির ক্ষেত্রে শ্বেতাঙ্গ মেয়েদের খুবই সহজলভ্য মনে করে।
একজন শ্বেতাঙ্গ তরুণীকে যৌন হয়রানীর দায়ে শুক্রবার দুই পাকিস্তানি যুবকের কারাদণ্ডের রায় ঘোষণার পর বিবিসি২ এর নিউজনাইট প্রোগামে জ্যাক স্ট্র এই মন্তব্য করার পর ব্রিটেনের এশীয় সম্প্রদায়সহ সর্বত্র এ নিয়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক সমালোচনা।
স্বগোত্রীয় যুবকদের মধ্যে কেন এই প্রবণতা কাজ করছে তা খতিয়ে দেখার জন্যে পাকিস্তানি কমিউনিটির প্রতি আহবান জানিয়ে জ্যাক ষ্ট্র বলেন, বিষয়টি একটি গুরুতর সমস্যার। পাকিস্তানিদের বিষয়টি নিয়ে আরও খোলামেলাভাবে কথা বলতে হবে। ব্রিটেনের সাবেক বিচার এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যাক ষ্ট্র বলেন, পাকিস্তানি যুবকরা যৌনকাঙ্কা মেটাবার জন্যে কেন শ্বেতাঙ্গ মেয়েদেরই টার্গেট করে তা খতিয়ে দেখতে অভিযুক্তদের স্বগোত্রিয় কমিউনিটিকেই এগিয়ে আসতে হবে। স্ট্র বলেন, অবস্থা এমন হয়েছে যে, শ্বেতাঙ্গ মেয়েদের দেখলে যেন পাকিস্তানি যুবকদের যৌনাকাঙ্কা বেড়ে যায়, যা তাদের স্বগোত্রিয় পাকিস্তানি মেয়েদের বেলায় দেখা যায় না। স্বগোত্রীয়দের েেত্র ঠিকই তাদের শ্রদ্ধাবোধ কাজ করে।
এদিকে, পাকিস্তানি কমিউনিটিকে টার্গেট করে জ্যাক স্ট্রর করা এই মন্তব্য নিয়ে ব্রিটেনে শুরু হয়েছে তোলপাড়। এই মন্তব্যের কারণে নিজ দলের নেতাদের প থেকেই কঠোর সমালোচনার সম্মুখিন হচ্ছেন জ্যাক স্ট্র।
ধারণা করা হচ্ছে সোমবার পার্লামেন্ট অধিবেশন বসলে স্ট্র এ বিষয়ে ব্যাপক সমালোচনার সম্মুখিন হবেন।
স্ট্রর ঘনিষ্ঠ সহকর্মী ও লেবার পার্টির নেতা কিথ এ মন্তব্য নিয়ে ইতোমধ্যে কড়া সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, স্ট্রর মন্তব্য বিপদজনক। কিথ ভাজের আশঙ্কা, সোমবার পার্লামেন্ট বসলে স্ট্রকে হয়তো তাঁর নিজ দলের এমপিদের সঙ্গেই এ নিয়ে কঠোর বিতর্কে জড়াতে হতে পারেন।
চ্যারিটি সংস্থা বার্নারডোর চিফ এক্সিকিউটিভ বার্টিন ন্যারি সমালোচনা করে বলেন, এই ধরনের যৌন হয়রানিমূলক অপরাধ অধিকাংশ শহরেই হয়ে থাকে। এগুলোর শিকার শ্বেতাঙ্গরা যেমন হয়, ঠিক তেমনি এশীয়সহ কৃষ্ণাজ্ঞরাও হয়ে থাকে। আমি মনে করি না যে এরজন্যে এককভাবে পাকিস্তানিরা দায়ী।
গত শুক্রবার শ্বেতাঙ্গ এক তরুণীকে যৌন হয়রানীর দায়ে ২৭ ও ২৮ বছর বয়সী দুই পাকিস্তানী যুবকের কারাদণ্ড ঘোষণা করে রায় প্রদান করেন নটিংহাম ক্রাউন আদালত। রায়ে সাদিককে কমপক্ষে ১১ বছরের এবং লিয়াকতকে ৮ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। দু’জনই বিবাহিত ও সন্তানের জনক।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০১১