ঢাকা: বিশ্ব শান্তি আন্দোলনের অগ্রদূত ও দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট নেলসন ম্যান্ডেলার রাষ্ট্রীয় স্মরণানুষ্ঠান মঙ্গলবার। স্মরণানুষ্ঠানের পর ১৫ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিক শেষকৃত্য শেষে শৈশবের স্মৃতিবিজড়িত গ্রাম কুনুতে চির নিদ্রায় শায়িত করা হবে মহাকালের এই মহানায়ককে।
মঙ্গলবার জোহানেসবার্গের সোবেতোর এফএনবি (সকার সিটি) স্টেডিয়ামে ম্যান্ডেলার জাতীয় স্মরণানুষ্ঠান সম্পন্ন হবে। তিন দিন প্রেসিডেন্ট ভবনে রাখার পর ১৫ ডিসেম্বর রোববার পারিবারিক সমাধিস্থলে সমাহিত হবেন তিনি। এর আগে সম্পন্ন হবে রাষ্ট্রীয় শেষকৃত্য এবং পারিবারিক ও ধর্মীয় শেষকৃত্য।
ম্যান্ডেলার স্মরণানুষ্ঠান ও শেষকৃত্যে যোগ দিচ্ছেন বিশ্বের সবচেয়ে ব্যস্ততম ব্যক্তিত্বরা। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ছাড়াও মঙ্গলবারের স্মরণানুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ, বিল ক্লিনটন, জিমি কার্টার, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওঁলাদে, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন, জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুন, জার্মান প্রেসিডেন্ট জোচিম গ্যঁক, ইউরোপীয় ইউনিয়ন কমিশনের প্রেসিডেন্ট জোসে ম্যানুয়েল বারোসো, ডাচ রাজা উইলেম আলেক্সান্ডার, স্পেনের যুবরাজ ক্রাউন প্রিন্স ফিলিপ, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট দিলমা রৌসেফ, ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস, ভারতীয় প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জী প্রমুখ। স্মরণানুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেন ইরানি প্রেসিডেন্ট হাসান রৌহানিও।
বিবিসি অনলাইন জানিয়েছে, ইতোমধ্যে ৫৯টি রাষ্ট্রের সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধান ম্যান্ডেলার স্মরণানুষ্ঠান বা শেষকৃত্যে উপস্থিত হওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত করেছেন।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নেতা ও তারকাদের আগমন এবং ম্যান্ডেলার শেষ বিদায়ের অনুষ্ঠানগুলো সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ইতোমধ্যে বিশেষ বিশেষ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। সোমবার রাতে কর্মসূচির ব্যাপারে বিস্তারিত জানিয়ে দেওয়া হবে।
তবে ইতোমধ্যে গৃহীত কর্মসূচিগুলো হলো-
• ১০ ডিসেম্বর জোহানেসবার্গের সোবেতোর সকার সিটি স্টেডিয়ামে জাতীয় স্মরণানুষ্ঠান সম্পন্ন হবে। স্মরণানুষ্ঠানে দেশের জনগণের পক্ষে ভাষণ দেবেন প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা। ম্যান্ডেলার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখবেন বিশ্ব নেতারাও।
• সকার সিটি স্টেডিয়ামের এই স্মরণানুষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার ওরলান্ডো স্টেডিয়ামসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে বিশাল পর্দায় প্রদর্শিত হবে।
• স্মরণানুষ্ঠানের পর ১১ থেকে ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রিটোরিয়ায় প্রেসিডেন্টের বাসভবন ‘ইউনিয়ন বিল্ডিংয়ে’ রাখা হবে ম্যান্ডেলার মরদেহ। এই তিন দিন বিশ্ব সম্প্রদায়ের নেতা ও আগত ভিআইপি অতিথিরা ম্যান্ডেলার মরদেহ পরিদর্শন করতে পারবেন।
• ১১ ডিসেম্বর দুপুর ১২টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত এবং ১২ ও ১৩ ডিসেম্বর সকাল ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত এ ম্যান্ডেলার মরদেহ পরিদর্শনের সুযোগ পাবেন সাধারণ জনগণ।
• ১৪ ডিসেম্বর শনিবার প্রিটোরিয়ার ওয়াটারক্লুপ বিমান বাহিনীর ঘাঁটি থেকে বিমানে চড়িয়ে পূর্বাঞ্চলীয় ক্যাপে প্রদেশের কুনু গ্রামে নিয়ে যাওয়া হবে ম্যান্ডেলার মরদেহ। সেখানে রাষ্ট্রীয় ও ঐতিহ্যবাহী শেষকৃত্য শেষে পারিবারিক সমাধিস্থলে চির সমাহিত করা হবে ম্যান্ডেলাকে।
• ম্যান্ডেলাকে সমাহিত করার পর ১৬ ডিসেম্বর জাতীয় ‘পুনির্মিলন দিবসে’ প্রেসিডেন্টের বাসভবনে ম্যান্ডেলার একটি মানবমূর্তি উদ্বোধন করা হবে।
• গৃহীত সবক’টি কর্মসূচি পালনের সময় সেগুলো পরিদর্শনের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকাজুড়ে ৯০টি বড় বড় প্রজেক্টর পর্দা স্থাপন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৯, ২০১৩