ঢাকা: খুব কম ব্যক্তিই মারা যাবার পরও মানুষের অন্তরে বেঁচে থাকেন। শুধু নিজ পরিবার, গোষ্ঠী, জাতি, সমাজ বা দেশই নয়, নেলসন ম্যান্ডেলা বেঁচে থাকবেন সারা বিশ্বের মানুষের মনে।
বিশ্ব এ নেতার মৃত্যুর সময়টা ছিল অনন্য। পৃথিবী থেকে বিদায় নেওয়ার সময় তার পাশে ছিলেন স্ত্রী, সন্তান, নাতি-নাতনি সবাই।
বাবার এ সময়টাকে ‘চমৎকার’ শেষ সময় হিসেবে অভিহিত করেছেন মাকাজিউইয়ি ম্যান্ডেলা। বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, শেষ বিদায় জানানোর জন্য সেখানে (ম্যান্ডেলার পাশে) ছিলেন স্ত্রী গ্রাসা, সন্তানেরা ও নাতি-নাতনিরা।
মাকাজিউইয়ি বলেন, ‘যতক্ষণ তিনি আমাদের সঙ্গে ছিলেন..তার ছেলে-মেয়েরা, নাতি-নাতনিরা ছিলেন। গ্রাসাও সেখানে ছিলেন। আমরা সবাই তার চারপাশে ছিলাম, এমনকি শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত। বৃহস্পতিবার পুরো দিনজুড়ে আমরা তার সঙ্গে বসেছিলাম। ’
ম্যান্ডেলার প্রথম স্ত্রী এভিলিন মাসের মেয়ে মাকাজিউইয়ি বলেন, ‘আমি মনে করতে পারি শেষ সপ্তাহের শুক্রবার থেকে বৃহস্পতিবার, খুবই চমৎকার একটি সময় ছিল। কেননা আমরা সেখানে ছিলাম। ’
ম্যান্ডেলার প্রথম দাম্পত্য জীবনের চার সন্তানের মধ্যে একমাত্র জীবিত রয়েছেন মাকাজিউয়ি। অসুস্থতার পর থেকে ম্যান্ডেলার সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর রেখেছেন তার দ্বিতীয়তম সন্তান মাকাজিউয়ি।
তিনি বলেন, যখন চিকিৎসকেরা আমাদের বললেন, আমি বৃহস্পতিবার সকালের কথা মনে করতে পারি...তাদের আর কোনোকিছু করার নেই, এবং তারা আমাকে বললেন, ‘মাকি যারা তাকে দেখতে চান এবং বিদায় জানাতে চান তাদের সবাইকে ডাকো’।
স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে, নাতি-নাতনিদের চার দিকে ঘিরে থাকাকে রাজাকে সৈন্যদের গার্ড দেওয়ার মতো মনে হয়েছিল মাকাজিউয়ির।
বাবার জীবন থেকে তারা শিখেছেন দুষ্প্রাপ্য এক বিষয়। সেটি হচ্ছে অন্যকে ক্ষমা করার সৎসাহস।
তিনি বেলন, বাবা শুধু রাজনৈতিক স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন করেননি, আধ্যাত্মিক মুক্তির জন্যও করেছেন। আমি মনে করি, তিনি জানতেন, যদি তিনি ক্ষমা না করেন তাহলে আধ্যাত্মিকভাবে চিরতরের জন্য নিজে কারাবন্দী থাকবেন। অন্যকে ক্ষমা করার সাহস আমরা তার জীবন থেকে শিখেছি। ’
বাংলাদেশ সময়: ২০২৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৯, ২০১৩