ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা-এনএসএ জনসাধারণের ফোনোকলে নজরদারির মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহের যে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে সেটাকে অসাংবিধানিক বলে রায় দিয়েছেন দেশটির একজন বিচারপতি।
একজন মোবাইল ফোন গ্রাহক ও মানবাধিকারকর্মীর দায়ের করা মামলার শুনানিতে সোমবার ওয়াশিংটন ডিসির প্রাদেশিক আদালতে ফেডারেল ডিস্ট্রিক্ট বিচারপতি রিচার্ড লিওন এ রায় দেন।
বিচারপতি লিওন বলেন, গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর এ ধরনের ইলেকট্রনিক কার্যক্রম জনসাধারণের ফোনোকলের ওপর ‘বিধিবহির্ভূত আক্রমণ’।
বিচারপতি তার দেওয়া রায়ে বলেন, এনএসএ’র নজরদারি কার্যক্রম ‘বিধিবহির্ভূত’ এবং এক ধরনের অরওয়েলীয় (রাজনৈতিক ব্যঙ্গার্থে ব্যবহৃত) প্রযুক্তির ব্যবহার, যেটা যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত জনসাধারণের প্রত্যেকটি ফোনোকলের তথ্য সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করতে প্রশাসন সক্ষম করেছে।
আদালতের রায়ের প্রতিক্রিয়ায় এনএসএ’র সাবেক একজন কাউন্সেল জেনারেল সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে চাপ কাটিয়ে ওঠা সরকারের জন্য কঠিনই হবে।
সংবাদ মাধ্যমগুলো জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বৃহৎ মোবাইল অপারেটর ভেরিজন’র গ্রাহক ও মানবাধিকারকর্মী ল্যারি ক্ল্যামানের দায়ের করা মামলার শুনানিতে এ রায় দেন আদালত।
মোবাইল অপারেটরগুলোর কাছ থেকে জোর করে ‘মেটাডাটা’ (গ্রাহকদের ফোনোকলের সময়, তারিখ ও আধেয় রেকর্ড থাকে এমন একটি ডিভাইস) আদায় করে জনসাধারণের ফোনোকলের তথ্য সংগ্রহে এনএসএ’র এ ধরনের নজরদারির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করেন ক্ল্যামান।
ক্ল্যামান তার মামলার অভিযোগে বলেন, এনএসএ যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বৃহৎ মোবাইল কোম্পানি ভেরিজনের কাছ থেকে জোরপূর্বক ‘মেটাডাটা’ সংগ্রহ করে এর লাখো গ্রাহকের তথ্য জব্ধ করার কার্যক্রম চালাচ্ছে।
এনএসএ’র সাবেক জেনারেল কাউন্সেল স্টেওয়ার্ট বাকার বলেন, আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রেহাই পাওয়া যাবে, কিন্তু লিওনের বিস্তারিত ব্যাখ্যা ও অভিমত মার্কিন প্রশাসনের ওপর যথেষ্ট চাপ ফেলবে এতে কোনো সন্দেহ নেই।
এদিকে, এই রায়ের পর নিজের ঘনিষ্ঠ সাংবাদিক গ্লেন গ্রিনওয়াল্ডের মাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে আদালতের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন এডওয়ার্ড স্নোডেন।
এনএসএ’র ‘মেটাডাটা’ সংগ্রহের তথ্যটি প্রথম ফাঁস করে দেন গোয়েন্দা সংস্থাটির সাবেক কর্মকর্তা এডওয়ার্ড স্নোডেনই।
তথ্যটি ফাঁস করার পর কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ সহ মার্কিন প্রশাসনের রোষানলে পড়ার আশঙ্কায় যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করেন স্নোডেন। কয়েকটি দেশে অস্থায়ীভাবে আশ্রয় নেওয়ার পর বর্তমানে রাশিয়ায় অবস্থান করছেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১০০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৩
সম্পাদনা: হুসাইন আজাদ, নিউজরুম এডিটর