ঢাকা: স্নায়ু যুদ্ধ চরম পর্যায়ে। কিউবায় আক্রমণ চালাবে যুক্তরাষ্ট্র।
চুক্তিতে পৌঁছালো যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া। অনেকেই কূটনীনৈতিক প্রচেষ্টাকে কৃতিত্ব দেন পরমাণু যুদ্ধের কবল থেকে বিশ্ববাসীর রেহাই পাওয়ার জন্য। আসলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি ও সোভিয়েত নেতা নিকিতা ক্রুশ্চেভের বন্ধুত্বই থামিয়েছে যুদ্ধ! তাদের বন্ধুত্বের সম্পর্ক আরও জোড়ালো করেছিল একটি কুকুর!
চরম বৈরিতা সত্ত্বেও জন এফ কেনেডি ও নিকিতা ক্রুশ্চেভ নিয়মিত চিঠি চালাচালি ও উপহার আদান প্রদান করতেন। একবার কেনেডিকে একটি কুকুর উপহার হিসেবে পাঠান ক্রুশ্চেভ।
কুকুরটি অন্যান্য কুকুরের মতো ছিল না। ‘পুশিনকা’ নামের কুকুরটি সৌভাগ্যবান। প্রথম যে দুটি কুকুর মহাকাশ অভিযানে গিয়েছিল ও জীবন্ত ফেরেছিল তাদের একটি ছিল তার মা ‘স্ট্রেলকা’।
ভিয়েনায় চলছে সংকট নিরসনে আলোচনা। একদিন ভিয়েনায় রাষ্ট্রীয় ভোজে পাশাপাশি বসেছিলেন ক্রুশ্চেভ ও কেনেডির স্ত্রী। ক্রুশ্চেভের কাছে ‘স্ট্রেলকা’র নিয়ে খোশগল্প শুরু করেন কেনেডির স্ত্রী। মার্কিন ফার্স্ট লেডির কথা মনে রাখেন ক্রুশ্চেভ।
কয়েকমাস পর হঠাৎ একদিন একটি কুকুর ছানা হোয়াইট হাউজে আসল। কোথা থেকে কুকুর ছানাটি কে পাঠিয়েছে সে সম্পর্কে কেউ জানেন না।
‘পুশিনকা’ পাওয়ার ইতিবৃত্ত জানিয়েছেন কেনেডির মেয়ে ক্যারোলিন কেনেডি। পুশিনকা খুবই সন্দুর ও নরম-তুলতুলে পশমওয়ালা ছিল। রুশ শব্দ পুশিনকার অর্থই হচ্ছে ‘নরম পশম বা চুলওয়ালা।
জানার পর ‘পুশিনকা’ পাঠানোয় ক্রুশ্চেভের কাছে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে একখানা চিঠি লেখেন কেনেডি। ওই চিঠিতে কেনেডি বলেন, ‘আমি ও মিসেস কেনেডি পুশিনকা পেয়ে খুবই খুশি। পুশিনকার সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসাটা তার মায়ের মতো নাটকীয় না হলেও সে দীর্ঘপথ ভ্রমণ করেছে, সে এখন ভালো আছে। ব্যস্ততার মাঝেও এসব বিষয় মনে রাখায় আমরা তোমার প্রতি মুগ্ধ। ’
ক্রুশ্চেভের ছেলে সার্গেই ক্রুশ্চেভ বলেছেন, তার বাবা মার্কিন প্রেসিডেন্টের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগকে রাজনীতির জন্য ‘শুভকর’ হিসেবে দেখতেন।
তিনি বলেন, ‘বাবা মানুষের মধ্যে সম্পর্কের সেতু গড়তে চেয়েছিলেন...তারা নিয়মিত যোগাযোগ করতেন কেননা উভয়ই উত্তেজনা কমাতে ও পরমাণু পরীক্ষা থামাতে চাইতেন। ’
ক্রুশ্চেভ কেনেডিকে ‘দুর্বল, অনভিজ্ঞ’ বলতেন-গণমাধ্যমের এমন অভিযোগও নাকচ করে দিয়েছেন সার্গেই ক্রুশ্চেভ।
ইতিহাসবেত্তা মার্টিন স্যান্ডলার বলেছেন, দুই নেতার যোগাযোগ, কুকুরসহ বিভিন্ন সামগ্রী উপহার হিসেবে আদান-প্রদানই বিশ্বকে পরমাণু যুদ্ধ থেকে রক্ষা করেছে।
বাংলাদেশ সময়: ০০০৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০১৪
সম্পাদনা: শরিফুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর