ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

দিল্লির রাজ্য সরকার-পুলিশ মুখোমুখি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০১৪
দিল্লির রাজ্য সরকার-পুলিশ মুখোমুখি

ঢাকা: ভারতের রাজধানী দিল্লিতে রাজ্য সরকার ও পুলিশের সংঘাত চরমে পৌঁছেছে। পুলিশের অসদাচারণের প্রতিবাদ ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে অপসারণের দাবিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল কুমার সিনধের কার্যালয়ের সামনে অনশন বসতে যাওয়ার সময় রাজ্য সরকারের মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালসহ তার মন্ত্রিসভার সদস্য ও বিধায়কদের গাড়ি আটকে দিয়েছে পুলিশ।



পুলিশের এ আচরণে বেশ ক্ষেপে গেছেন আম আদমি পার্টির (এএপি) নেতা কেজরিওয়াল।

তিনি নিজেকে ‘নৈরাজ্যবাদী’ ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, ‘তারা (বিরোধীরা) বলে আমি নাকি নৈরাজ্যকারী, হ্যাঁ, আমি নৈরাজ্যকারী। আজ আমি ঘোষণা দিচ্ছি, সিনধের কারণে আমি নৈরাজ্য করবো’।

রাজ্য সরকারের দাবিতে একাত্মতা জানিয়ে আগামী ১০ দিনের অনশনে যোগ দেওয়ার জন্য রাজধানীবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন কেজরিওয়াল।

তবে, সুশীল কুমার সিনধের কার্যালয় এলাকায় যাতে অনশনকারীরা প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য ওই এলাকা ঘিরে রেখেছে পুলিশ।

স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছে, কেজরিওয়াল ও তার মন্ত্রী-বিধায়করা বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের কার্যালয় ও প্রেসিডেন্ট ভবনের কাছে রেল ভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছেন। ওই এলাকা ঘিরে রেখেছে দিল্লি পুলিশের বিশেষ বাহিনী ‘ৠাপিড অ্যাকশন ফোর্স’।

স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছে, দিল্লির এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অসহযোগিতার আভিযোগ এনে তার অপসারণের দাবিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল কুমার সিনধের নর্থ ব্লক কার্যালয়ের সামনে অনশনে বসার কথা ছিল দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল ও তার মন্ত্রিসভার সদস্য এবং বিধায়কদের।

রাজ্য সরকারের আইনমন্ত্রী সোমনাথ ভারতীর অভিযোগ, দিল্লির দক্ষিণাঞ্চলে আফ্রিকান বসতিতে মাদক ও যৌন ব্যবসা চলে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তিনি দিল্লি পুলিশের এক কর্মকর্তাকে ওই বসতিগুলোতে তল্লাশি চালানোর নির্দেশ দেন।

কিন্তু অভিযোগের কোনও তথ্য-উপাত্ত ছিল না বিধায় কেবল আইনমন্ত্রীর নির্দেশে তল্লাশি চালানোর নির্দেশ মানতে অপারগতা প্রকাশ করেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।

পরে যদিও অনেকটা জোর করেই ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে আফ্রিকান বসতিতে তল্লাশি চালাতে বাধ্য করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে।

দিল্লি পুলিশ পাল্টা অভিযোগ করে, আইনমন্ত্রী ও তার দলবল পুলিশ নিয়ে গিয়ে ওই আফ্রিকান বসতিতে তল্লাশি চালান। মাঝরাতে নারীদের জোর করে বাড়ির বাইরে বের করে দেন।

অভিযানের সময় ওই নারীদের উদ্দেশ্য করে আইনমন্ত্রী ও তার দলবল কটূক্তি এমনকি বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্য করেছেন বলেও অভিযোগ করা হয়। ওই নারীরাও শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনেছেন বলে জানায় সংবাদ মাধ্যমগুলো।

দিল্লির গভর্নরের কাছে এ ঘটনার বিস্তারিত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এদিকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সিনধে জানিয়েছেন, পুরো ঘটনার তদন্ত চলছে। তদন্ত প্রতিবেদন আসার আগে এ বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়।

স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো আরও জানিয়েছে, আইনমন্ত্রীর কথা মতো কাজ করতে অস্বীকার করায় দিল্লি পুলিশের ওই কর্মকর্তার অপসারণ বা বদলির দাবিতে ১০ দিনের অনশনে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কেজরিওয়াল ও তাঁর মন্ত্রী-বিধায়করা।

তবে, ইতোমধ্যেই মধ্যদিল্লিতে ১৪৪ ধারা জারি করেছে পুলিশ। এছাড়া, চারটি মেট্রো স্টেশন বন্ধেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।