কলকাতাঃ ভারতীয় সেনাবাহিনীর ইস্টার্ন কমান্ড পরিচালিত কলকাতার “কমান্ড হাসপাতাল” সৌহার্দের নজির গড়ল। বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর সদস্যদের জন্য চিকিৎসার দরজা খুলে দিল কমান্ড হাসপাতাল।
দুইদেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে চিকিৎসা নিয়ে এই ধরনের প্রয়াস আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে বিরল দৃষ্টান্ত।
দুই প্রতিবেশী দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে নতুন প্রয়াসের খবর পেয়ে বাংলানিউজ হাজির সেনাবাহিনী পরিচালিত কলকাতার কমান্ড হাসপাতালে।
ভারতের ৬৫তম প্রজাতন্ত্র দিবসের চূড়ান্ত ব্যস্ততার মধ্যেও প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধির জন্য সময় বার করে বিস্তারিত জানালেন কমান্ড হাসপাতালের মুখ্য জনসংযোগ কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন তরুণ কুমার সিঙ্গা।
ইতোমধ্যেই সেনাবাহিনীর এই হাসপাতালে বাংলাদেশের ৫ সেনা কর্মকর্তাকে চিকিৎসা করেছেন। তারা চিকিৎসা শেষে স্বদেশে ফিরেও গেছেন। এদের মধ্যে এক জন মহিলা অফিসার ছিলেন। সেনাবাহিনীর ইস্টার্ন কম্যান্ডের সদর দপ্তর বেঙ্গল হেড কোয়ার্টারে বসে এ কথা জানালেন কমান্ড হাসপাতালের মুখ্য জনসংযোগ কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন তরুণ কুমার সিঙ্গা।
দ্বিতীয় দলটি অল্প কিছুদিনের মধ্যেই চিকিৎসা করাতে হাজির হবে। সেই দলটিতে একজন ক্যান্সার রোগির আসার কথা। উল্লেখ্য সেনাবাহিনীর পরিচালিত এই হাসপাতালটি ক্যান্সার চিকিৎসায় অন্যতম অগ্রণী চিকিৎসা কেন্দ্র।
পূর্ব ভারতের সেনাবাহিনীর সব থেকে বড় চিকিৎসা কেন্দ্র কলকাতার কমান্ড হাসপাতাল। ২৫০ বছরের পুরানো এই হাসপাতাল ১৮৭০ সালে তৈরি হয়।
ক্যাপ্টেন তরুণ কুমার সিঙ্গা জানান, দু’দেশের মধ্যে ‘অপারেশন মৈত্রী’ নামের একটি চুক্তি সম্পাদিত হয়। সেই চুক্তির পরিপ্রেক্ষিতেই ভারতীয় সেনা বাহিনী অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে বাংলাদেশের সেনা কর্মকর্তাদের চিকিৎসা করছেন।
ক্যাপ্টেন তরুণ কুমার জানান, এই হাসপাতালে বিভিন্ন বিভাগের জরুরি পরিসেবাসহ অতি আধুনিক চিকিৎসা প্রদান করা হয়। শুধু কলকাতা বা পশ্চিমবঙ্গ নয়- উড়িষ্যা, বিহার, ঝাড়খণ্ড, আন্দামান নিকোবর দীপপুঞ্জ সহ ভারতের উওর-পূর্বের সবকটি রাজ্যের সেনাবাহিনীর সদস্যরা এই হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করেন।
রয়্যাল ভূটান সেনাবাহিনীর চিকিৎসার গুরুদায়িত্বটি পালন করে সেনাবাহিনীর ইস্টার্ন কমান্ড পরিচালিত কলকাতার কমান্ড হাসপাতাল। আর এই গোটা হাসপাতালের নেতৃত্বে আছেন চিকিৎসক মেজর জেনারেল বি এন বি এম প্রসাদ।
ক্যাপ্টেন তরুণ কুমার সিঙ্গা আরও জানান, বাংলাদেশের কর্মকর্তারা চিকিৎসা পরিসেবায় সন্তুষ্ট হয়ে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন। তারা জানিয়েছেন প্রয়োজনে আগামীতে তারা আবার এই হাসপাতালে চিকিৎসা করতে আসবেন। তরুণ কুমার জানান সৌহার্দ এবং সুসম্পর্কের নজির হিসাবে তারা আগামী দিনেও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের চিকিৎসা করতে উৎসাহী এবং আগ্রহী।
দুই দেশের সেনাবাহিনীর এই সুসম্পর্কে দুই দেশের সম্পর্ক আরও উন্নতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন ক্যাপ্টেন তরুণ কুমার সিঙ্গা।
শ্রী সিঙ্গা জানান, তিনি আশাবাদী যে আগামী দিনে দুই দেশের সেনাবাহিনীর সম্পর্ক আরও সুন্দর হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০১৪