ঢাকা: বসনীয় যুদ্ধের হোতা রাদোভান কারাদজিকের পক্ষে সাক্ষী দিতে গিয়ে হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে ‘শয়তানের আদালত’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন সাবেক বসনিয়া-সার্বিয়ার সামরিক প্রধান রাতকো ম্লাদিচ।
মঙ্গলবার বক্তব্য দেওয়ার আগে শপথ না নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি এই ঘৃণিত আদালতকে মানিনা।
সাবেক বসনীয়-সার্ব প্রেসিডেন্ট কারাদজিকের পক্ষের সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দিতে আদালতে হাজির হওয়ার তলবানামা জারির পর ম্লাদিচকে আদালতে হাজির করা হয়।
শপথ না নিয়ে তিনি বলা শুরু করেন, ‘আমি এই আদালত মানিনা। এটা ন্যাটোর তৈরি। এটা শয়তানের আদালত। ’
প্রথমে সাক্ষ্য দিতে অস্বীকৃতি জানালেও ট্রাইব্যুনালের বিচারককে তিনি বলেন, ‘আপনার তলবনামা, আপনার মন্তব্য, আপনার মিথ্যা অভিযোগ কোনোটাই আমি মানিনা। ’
আদালত অবমাননা ঠুকে দেওয়ার সর্তকবাণী শোনানোর পর নিজের নকল দাঁত মেরামতের কথা বলেন ম্লাদিচ। এ জন্য আদালত কিছু সময়ের জন্য মূলতবি ঘোষণা করা হয়।
পুনরায় বিচারকাজ শুরু হলে বিচারক ম্লাদিচকে বলেন, যদি কোনো প্রশ্নের উত্তর নিজের দোষ প্রমাণিত হয়, সেসব প্রশ্নের উত্তর চাইলে নাও দিতে পারেন তিনি।
মঙ্গলবার কারাদজিচের আইনজীবী আদালতকে অবগত করেন, বসনিয়া যুদ্ধে আসলে কী ঘটেছিল তা পুরো বিশ্বের মধ্যে একজনই ভালো জানেন। তিনি হচ্ছেন ম্লাদিচ।
কারাদজিচের কিছু প্রশ্নের উত্তর দেন এবং কিছু প্রশ্ন এড়িয়ে যান ম্লাদিচ। গুরুতর অপরাধের প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে নিজের অসুস্থতার প্রসঙ্গ সামনে আনেন ‘বসনিয়ার কসাই’ খ্যাত ম্লাদিচ।
ম্লাদিচের আইনজীবী আদালতকে জানান, তার মক্কেলের স্বাস্থ্য খারাপ। আংশিকভাবে তার শরীর পক্ষাঘাতগ্রস্ত হওয়ায় তিনি সত্য ও কল্পনাকে আলাদা করার সক্ষমতা হারিয়েছেন।
বসনিয়া যুদ্ধের অবসানের পর মঙ্গলবার প্রথমবারের মতো গণহত্যায় দায়ে অভিযুক্ত এ দুজনকে এক সঙ্গে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
১৯৯২-১৯৯৫ সালে বসনিয়ান যুদ্ধের সময় ১০ লাখ মানুষ নিহত হয়। এ হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা মনে করা হয় কারাদজিচ ও ম্লাদিচকে। হেগের পৃথক পৃথক ট্রাইব্যুনালে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে বিচার চলছে। উভয়ই নিজেদের সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ১৯৯৫ সালের জুলাইয়ে স্রেব্রেনিসায় গণহত্যা চালানোর অভিযোগসহ ১১টি অভিযোগ রয়েছে কারাদজিকের বিরুদ্ধে।
২০০৮ সালে পলাতক অবস্থায় কারাদজিচকে বেলগ্রেড থেকে গ্রেফতার করা হয়। নিউ এজ হিলারের ছদ্মবেশে বেলগ্রেডে বাস করছিলেন তিনি। ১৬ বছর পলাতক থাকার পর ২০১১ সালে সার্বিয়ার উত্তরাঞ্চল থেকে গ্রেফতার হন ম্লাদিচ।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১৪