কলকাতা: কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার ৩৫তম আয়োজন মঙ্গলবার স্থানীয় সময় ৪টা ৩০ মিনিটে শুরু হয়েছে। তবে জাতীয় জাদুঘরের অনুকরণে নির্মিত বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নের কাজ এখনো শেষ হয়নি।
কলকাতার নিযুক্ত বাংলাদেশি উপহাইকমিশনার মোহাম্মাদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আজ (মঙ্গলবার) প্যাভিলিয়নের কাজ শেষ হবে। ’
বইমেলার ৯০ শতাংশ স্টলের কাজ শেষ হলেও সাড়ে তিন হাজার বর্গ ফুটের বাংলাদেশের বিশাল প্যাভেনিয়নটি সম্পূর্ণ হয়নি। এটি তৈরি হচ্ছে ঢাকায় অবস্থিত জাতীয় জাদুঘর ভবনের অনুকরণে। এখনও বাইরের দেওয়ালে রঙের কাজ চলছে। আলোর ব্যবস্থা এখনও হয়নি।
পাবলিশার্স অব বুক সেলার্স গিল্ডের আয়োজিত এই বইমেলার ইউবিআই অডিটোরিয়ামে ঘণ্টা বাজিয়ে উদ্বোধন করেন যুক্তরাষ্ট্রের কথাসাহিত্যিক পুলিৎজার বিজয়ী রিচার্ড ফোর্ড। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, ভারতে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত টিমোথে জে রোমেয়ার, বিশিষ্ট কথা সাহিত্যিক অতীন বন্দোপাধ্যায়, গিল্ডের সম্পাদক ত্রিদীপ চট্টোপাধ্যায় ও সভাপতি সুপ্রকাশ বসু।
গিল্ডের পক্ষ থেকে সভাপতি সুপ্রকাশ রায় এদিন অনুষ্ঠানের শুরুতে সবাইকে ধন্যবদ জানিয়ে বলেন, ‘৫৬টি স্টল নিয়ে এই বইমেলার সূত্রপাত। আজ যা আন্তর্জাতিক বইমেলা। দর্শকের সমাগমের দিক থেকে বিশ্বের বৃহত্তম বইমেলা। ’
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত টিমোথে জে রোমেয়ার এদিন তার বক্তব্যে বলেন, ‘আমার ৪ ছেলেমেয়েকে আমি সব সময় বই পড়তে বলি। ভারত তথা বাংলার সাহিত্য চর্চাকে আমি শ্রদ্ধা করি। এবারের মেলায় যুক্তরাষ্ট্রকে যে থিম করা হয়েছে তার জন্য ধন্যবাদ। এদেশের মানুষ মহাত্মা গান্ধীর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে আন্দোলন করেছিলেন মার্টিন লুথার কিং। আমাদের দেশের বর্তমান প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও তার আর্দশ মেনে চলেন। আসুন বইকে হাতিয়ার করে আমরা সামনের দিকে এগোই। ’
কথা সাহিত্যিক অতীন বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘এখানে এসে প্রমাণ পেলাম আমি একটু লিখিটিখি। আগে কখনও প্রথম দিন আসিনি। আমি বাংলায় বলব, কারণ আমি বাংলা ও ইংরেজি দুটোর কোনোটাই ভাল জানি না। আমার কাছে পুরস্কার আর তীরস্কার দুটোই সমান অর্থ বহন করে। পুরস্কারের বিষয়টিই কেমন গোলমেলে। তাই আমি এ ধরনের অনুষ্ঠানে বিশেষ আসি না। ’
কথাসাহিত্যিক রিচার্ড ফোর্ড বলেন, ‘এখানে আসতে পেরে কৃতজ্ঞ। বাংলার সাহিত্যের মধ্যে আমি যুক্তরাষ্ট্রের সাহিত্যের স্বাদ পাই। রবীন্দ্রনাথ কী করে এতো লিখলেন তা আমাকে ভাবায়। তার সাহিত্য মানবতার কথা বলে, জীবনের কথা বলে। আমাদের দু’দেশ গণতন্ত্র নিয়ে গর্ব করে। তা সত্ত্বেও বলি লেখকদের কী স্বাধীনতা আছে? এটা ভেবে দেখা দরকার। আর আমাদের মতো ক্ষুধার্ত পাঠকের কাছে বইমেলার গুরুত্ব অপরিসীম। ’
মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য তার উদ্বোধনী ভাষণে বলেন, ‘আমরা সবাই স্বীকার করি এই শহরে বইমেলার গুরুত্ব। এটা এখন কলকাতায় শুধু নয়, এর প্রেরণায় জেলা শহর ও প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতেও বইমেলা হচ্ছে। এবারের বইমেলার থিম যুক্তরাষ্ট হওয়ার কারণে ওই দেশে প্রকাশিত বিভিন্ন বই কেনার সুযোগ পাওয়া যাবে এবার। ’
এতক্ষণ ইংরেজীতে বলার পর মুখ্যমন্ত্রী বাংলায় বলেন, ‘এবার ৫২২টি স্টল হয়েছে। আছে লিটল ম্যাগের বিপুল আয়োজন। ২৫টি দেশের বই এসেছে। এই ১২ দিনে অনেক মানুষ আসুন। অনেক বিক্রি বাড়–ক। এতে আমাদের জ্ঞানের দিগন্ত বাড়বে। ’
বাংলাদেশ সময়: ২০৫২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০১১