ঢাকা: কারাগার থেকে ছাড়া পেয়েই সরাসরি রাজপথে জনতার কাতারে এসে দাঁড়ালেন ইউক্রেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইউলিয়া তিমশেনকো। চূড়ান্ত বিজয় অর্জন না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ না ছাড়ার জন্যও সমবেত হাজার হাজার মানুষের প্রতি আহ্বান জানান ইউক্রেনের অগ্নিকন্যা হিসেবে পরিচিত রুশবিরোধী এই সাবেক প্রধানমন্ত্রী।
শনিবার কারাগার থেকে ছাড়া পেয়ে প্রথমে সরকার বিরোধী আন্দোলনের প্রাণকেন্দ্র কিয়েভের ইন্ডিপেন্ডেন্স স্কয়ারে গিয়ে উপস্থিত হন। অর্ধলক্ষাধিক মানুষের সমাবেশে ভাষণ দেয়ার সময় হুইল চেয়ারে বসা তিমশেনকো এ সময় নিহত বিক্ষোভকারীদের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘আপনারা বীর, আপনারাই ইউক্রেনের সবচেয়ে সেরা’।
ক্ষমতা ছাড়ার পর গত ২০১১ সালে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত হন রুশ বিরোধী রাজনীতিক তিমশেনকো। এরপর থেকেই তিনি কারাগারে। কারা হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার সময় সেখানে জড়ো হয়ে তাকে স্বাগত জানান সমর্থকরা।
শনিবার ছাড়া পাওয়ার পর নিজের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে এক বিবৃতিতে তিমশেনকো বলেন, ‘স্বৈরতন্ত্রের পতন হয়েছে। ’ বিক্ষোভকারীদের প্রতি ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘যারা নিজেদের পরিবার এবং দেশকে রক্ষা করতে বেরিয়ে এসেছেন আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। ‘
ক্ষমতায় থাকার সময় রাশিয়ার সঙ্গে গ্যাসচুক্তিতে দুর্নীতি করার দায়ে কারাগারে পাঠানো হয় ৫৩ বছর বয়সী তিমশেনকোকে। তবে তার সমর্থক এবং পশ্চিমা বিশ্বের সরকারগুলো এ মামলাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে অভিহিত করেন।
শনিবার ইউক্রেনের পার্লামেন্ট তার মুক্তির বিষয়টি অনুমোদন করে। চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলনে তিমশেনকোর উপস্থিতি দেশটির চলমান রাজনৈতিক সঙ্কটে নতুন পালক যোগ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে ইউক্রেনের পার্লামেন্টে প্রেসিডেন্ট ভিক্তর ইয়ানুকোভিচকে তার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে শনিবার ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হয়। সহিংস বিক্ষোভের মুখে প্রেসিডেন্ট কিয়েভে অবস্থিত তার কার্যালয় ত্যাগের কয়েক ঘণ্টা পরই এ ভোট অনুষ্ঠিত হয়। ৪৪৭ জনের মধ্যে ৩২৮ জন ডেপুটি প্রেসিডেন্টের অপসারণকে সমর্থন করেন। ইয়ানুকোভিচ ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন বলে দাবি তাদের।
তবে পার্লামেন্টের সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েয়েছেন ইয়ানুকোভিচ। পূর্বাঞ্চলীয় খারকিভ শহর থেকে এক টেলিভিশন সাক্ষৎকারে তিনি বলেন, তিনি পদত্যাগ করছেন না কিংবা দেশও ছাড়ছেন না। পার্লামেন্টের সিদ্ধান্তকে তিনি বেআইনি হিসেবে অভিহিত করেন। একই সঙ্গে এ ঘটনাকে অভ্যুত্থান অভিহিত করে নাৎসীদের হাতে ১৯৩০ এর দশকে জার্মানির ক্ষমতা গ্রহণকে এর সঙ্গে তুলনা করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৪