ওয়াইয়োমিং: বিশ্বের সবচেয়ে বড় আগ্নেয়গিরিতে ছয় লাখ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো অগ্ন্যুৎপাত ঘটনার আশংকা করা হচ্ছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াইয়োমিং রাজ্যের ইয়েলোস্টোন ন্যাশনাল পার্কের নিচে রয়েছে এ আগ্নেয়গিরিটি।
এ অবস্থায় যদি এ আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয় তাহলে ১৯৮০ সালে সেন্ট হেলেন পর্বতের আগ্নেয়গিরিতে যে শক্তিতে অগ্ন্যুৎপাত হয়েছিলো, এর চেয়ে হাজার হাজার গুণ বেশি শক্তিতে এখানে লাভার উদগিরণ হবে।
আকাশের সমান উঁচু লাভা, গাছ মেরে ফেলার মতো ছাইমেঘ আগ্নেয়গিরি থেকে এক হাজার মাইল দূর পর্যন্ত ১০ ফুট গভীর স্তর তৈরি করবে।
একইসঙ্গে বিষাক্ত বাতাসের কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দুই-তৃতীয়াংশ এলাকাই বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়বে। বিমানের হাজার হাজার ফাইট বাতিল করাসহ লাখ লাখ মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে যেতে বাধ্য হবেন।
শেষ ২১ লাখ বছরের মধ্যে ইয়েলোস্টোন ন্যাশনাল পার্কের এ আগ্নেয়গিরি থেকে তিনবার অগ্ন্যুৎপাত হয়েছিল। তবে আবারও এখানে আরও একবার অগ্ন্যুৎপাত হতে পারে বলে আগ্নেয়গিরিটি পর্যবেক্ষণ করা বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে দিয়েছেন।
তবে ৬ লাখ বছর পর প্রথমবারের মতো এ আগ্নেয়গিরি থেকে লাভার উদগিরণ শুরু হলে এবং বিজ্ঞানীরাদের অনুমান অনুযায়ী পরিস্থিতি সত্যিই এমন ভয়াবহ হলে তা হবে নিঃসন্দেহে একটি দুঃস্বপ্ন। তবে পর্যাপ্ত তথ্যের অভাবে পরবর্তী বিপর্যয় শুরুর সম্ভাব্য তারিখ বিজ্ঞানীরা জানাতে ব্যর্থ হন।
এ বিষয়ে উটাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইয়েলোস্টোন আগ্নেয়গিরি বিশেষজ্ঞ বব স্মিথ ন্যাশনাল জিওগ্রাফিককে বলেন, ‘এটা হবে একটি অস্বাভাবিক উদগিরণ, কারণ এটা একটি বড় এলাকায় ছড়িয়ে পড়বে এবং এ হার হবে খুবই বেশি। ’
‘তবে এ থেকে অগ্ন্যুৎপাত শুরু হবে বলে আমরা প্রথমে আশংকা করেছিলাম। কিন্তু দশ কিলোমিটার গভীরে গলিত পাথর দেখার পর এ নিয়ে এখন আর আমরা ততটা উদ্বিগ্ন নই। তবে তা যদি দুই তিন কিলোমিটার গভীরে থাকতো তাহলে তা উদ্বেগের বিষয় হতো। ’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কাছে সাক্ষ্যপ্রমাণ আছে, আগ্নেয়গিরির গভীরের ম্যাগমা চেম্বার ক্রমেই গলিত পাথরে রূপ নিচ্ছে। তবে এ প্রক্রিয়া কতদিন চলবে এ বিষয়ে আমাদের কোনো ধারণা নেই। এর ফলে অগ্ন্যুৎপাত শুরু হবে না পাথর গলার প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে তা আবার নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবে, এ বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা যাচ্ছে না। ’
ইয়েলোস্টোন ক্যালডেরা নামের এ আগ্নেয়গিরিটিকে বলা হয় প্রকৃতির দারুণ সৃষ্টি। এর নামের অর্থ ‘রান্নার পাত্র’ বা ‘বড় কড়াই’ এবং আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতে ভূমি ধসে এর সৃষ্টি হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২২০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০১১