সাংহাই: প্রতিদিনের গৎ বাঁধা জীবনে একটু আনন্দের স্বাদ পেতে পার্কে যাওয়া। আর এজন্য তারা যান চীনের বাণিজ্যিক রাজধানী সাংহাইয়ের হ্যাপি ভ্যালি পার্কে।
সেখানে তারা রোমাঞ্চ অনুসন্ধানে চড়ে বসেন রোলার কোস্টারে। কিন্তু তাদের জন্য যে অপেক্ষা করছিল আরও বড় রোমাঞ্চ তা যদি ঘুণাক্ষরে তারা জানতেন তাহলে হয়তো কখনোই এ পথ মাড়াতেন না।
পার্কে যাওয়া ও রোলার কোস্টারে উঠে বসা পর্যন্ত সব ঠিকভাবেই চলছিল। কিন্তু বিপত্তিটা বাধে রোলার কোস্টারে যান্ত্রিক ক্রটি দেখা দেওয়ার পর। এর পরের অবস্থাকে হয়তো কোনো বেরসিকও রোমাঞ্চকর বলবেন না। তা ছিল রীতিমতো গায়ে কাঁটা দেওয়ার মতো। কেননা যান্ত্রিক ক্রুটি দেখা দেওয়ায় রোলার কোস্টারে থাকা ২৫ জন ‘রোমাঞ্চ প্রিয়’ ব্যক্তি ভরশূন্য অবস্থায় বাতাসে ঝুলে ছিলেন পাক্কা আধা ঘণ্টা।
চলতে চলতে হঠাৎ রোলার কোস্টারটি থেমে যাওয়ার পর সেখানে চড়ে বসা মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কেননা তারা তখন মাটি থেকে ৬০ মিটার উপরে ঝুলে আছেন। ভয়ঙ্কর এ ঘটনাটির বর্ণনা দিয়েছে সাংহাই ডেইলি।
অতিরিক্ত ঠান্ডা আবহাওয়ায় নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা হিসেবে রোলার কোস্টারের স্বয়ংক্রিয় সেন্সর বন্ধ হয়ে যায় বলে পার্ক সূত্রে জানা যায়।
এসময় পুরো আধাঘণ্টা যাত্রীরা বাতাসে ভরশূন্য অবস্থায় ঝুলে থাকেন এবং জরুরি কাজে ব্যবহৃত মইয়ের সাহায্যে তাদের উদ্ধার করা হয়। হ্যাপি ভ্যালির পরিচালক ও শেসজান ভিত্তিক ওসিটি দলের সহকারী পরিচালক জিয়াও ডেজহঙ্গ এ তথ্য জানান।
ভয়াবহ এ অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে আতঙ্কিত এক যাত্রী বলেন, ‘এ থেকে উদ্ধার পেতে আমাদের ৩০ মিনিট সময় লেগেছে এবং তখন রোলার কোস্টারে অনেকেই ছিলেন। এখন আমি কল্পনাই করতে পারছিনা যে তখন কিভাবে আমরা সামনের আসন আঁকড়ে ধরে ছিলাম। ’
জিয়াও বলেন, ‘রোলার কোস্টারটি সর্বোচ্চ উঁচুতে উঠে এবং নিচে গড়িয়ে পড়ার জন্য যখন প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করে তখন হঠাৎ করে ওই উচ্চতায়ই এটা বন্ধ হয়ে যায়। ’
‘রোলার কোস্টারের সেন্সর যন্ত্রটি স্বয়ক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায় এবং আগাম সতর্কতা হিসেবে কোস্টারটি অচল করে দেয় বলে তদন্তে জানা যায়। ’
এর আগে গত বছরের ২১ মার্চ রোলার কোস্টার থেকে কেউ একটি সেল ফোন ফেলে দিলে স্বয়ক্রিয়ভাবে বিশ্বের অন্যতম উঁচু এ কোস্টারটি বন্ধ হয়ে যায়। এসময় ৩০ জন ওই অবস্থায় কোস্টারটিতে আটকা পড়েন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৭ ঘন্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০১১