ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ক্রিমিয়ায় যেকোনো মুহূর্তে রুশ অভিযান!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩০ ঘণ্টা, মার্চ ১, ২০১৪
ক্রিমিয়ায় যেকোনো মুহূর্তে রুশ অভিযান!

ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রের হুমকি উপেক্ষা করে ইউক্রেনের স্বায়ত্তশাসিত ক্রিমিয়া দ্বীপে সেনা অভিযান চালাতে যাচ্ছে রাশিয়া। এর অংশ হিসেবে ইউক্রেনে সৈন্য পাঠাতে নিজ দেশের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষের অনুমতি নিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।



রুশ প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিন থেকে জানানো হয়েছে, ইউক্রেনের ক্রিমিয়া অঞ্চলে রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সেখানে ‍রুশ সৈন্য পাঠাতে শনিবার পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ ফেডারেশন কাউন্সিলের অনুমতি চেয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

ক্রিমিয়ার অবস্থা স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সেখানে সৈন্য মোতায়েন রাখার কথা বলেছেন সাবেক কেজিবি সদস্য পুতিন।

রুশ নৃ-গোষ্ঠী অধ্যুষিত ক্রিমিয়ার কাছে কৃষ্ণ সাগরে রাশিয়ার নৌ ঘাঁটি রয়েছে। এ নৌ ঘাঁটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সৈন্য পাঠানো হচ্ছে বলে দাবি মস্কোর।

মস্কোর এ পদক্ষেপে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে কিয়েভ। রাশিয়া ইউক্রেনের নতুন সরকারকে যুদ্ধে জড়াতে উস্কানি দিচ্ছে বলে অভিযোগ কিয়েভ।

রাশিয়ার এমন সিদ্ধান্তে নিজেদের করণীয় ঠিক করতে ইউক্রেনের অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট ওলেক্সজান্দ্রার তুরচিনোভ নিরাপত্তা প্রধানদের নিয়ে জরুরি বৈঠক ডেকেছেন।

ফেডারেশন কাউন্সিলকে পুতিন জানায়, ক্রিমিয়ায় রুশ নাগরিক ও রুশ সামরিক কর্মকর্তাদের জীবন হুমকির মুখে।

ক্রিমিয়ার রুশপন্থী নেতা উপদ্বীপের শান্তি নিশ্চিতে পুতিনের সহায়তা চাওয়ার পরই পুতিন এমন পদক্ষেপ নিলেন।

শনিবার রাতে পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষে সর্বসম্মতিক্রমে পুতিনের প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়। পুতিনের প্রস্তাবের ওপর বিতর্ক চলাকালে সংসদ সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার বিরুদ্ধে ‘চূড়ান্ত সীমা’ (রেড লাইন) অতিক্রম করার অভিযোগ তোলেন।

ক্রিমিয়ার দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দর শুক্রবার সকালে সামরিক পোশাকধারী অজ্ঞাত অস্ত্রধারীরা নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর ওবামা বলেন, ইউক্রেনে রাশিয়া সামরিক হস্তক্ষেপ চালালে দেশটির অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় যা কিছু করার তার সবকিছুই করবে যুক্তরাষ্ট্র।

এর আগে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আইগোর তেনইয়ুখ অভিযোগ করেন, ইউক্রেনের স্বায়ত্তশাসিত উপদ্বীপ ক্রিমিয়ায় রাশিয়ার ৬ হাজার সৈন্য ও ৩০টি সাঁজোয়া যান প্রবেশ করেছে।

শনিবার আইগোর তেনইয়ুখ পার্লামেন্টে জানান, ইউক্রেনের সম্মতি ছাড়াই বা সতর্কতা জারি না করেই শুক্রবার থেকে সৈন্য পাঠাতে শুরু করেছে রাশিয়া।

এর আগে শুক্রবার সকালে ক্রিমিয়ার দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সামরিক পোশাকধারী অজ্ঞাত অস্ত্রধারীদের টহল দিতে দেখা যায়।

বিমানবন্দর দখল নেওয়ার ঘটনাকে ইউক্রেনের অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট আন্তর্জাতিক নিয়ম লঙ্ঘন করে ক্রিমিয়ায় রাশিয়ার ‘সশস্ত্র আগ্রাসন’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

ক্রেমলিনপন্থী অস্ত্রধারীরা ক্রিমিয়ার বিমানবন্দর দখলে নেওয়ার পর ইউক্রেনের ভূখণ্ডগত সার্বভৌমত্ব রক্ষায় পশ্চিমাদের সহায়তা চায় দেশটির বর্তমান ক্ষমতাসীনরা।

এর কয়েকদিন আগে ইউক্রেন সীমান্তে সামরিক বাহিনীকে যুদ্ধের মহড়া চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট। ওই সময় রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সার্গেই শোইগু বলেছিলেন, দেশের সামরিক নিরাপত্তার হুমকি মোকাবেলায় সশস্ত্র বাহিনীর সক্ষমতা যাচাই করার নির্দেশ দিয়েছেন কমান্ডার-ইন-চিফ। ইউক্রেনের নিকটবর্তী কৃষ্ণ সাগরে নিজের নৌঘাঁটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তারা পদক্ষেপ নিচ্ছে।

আড়াই মাসব্যাপী সরকারবিরোধী আন্দোলনের মুখে রুশপন্থী প্রেসিডেন্ট ভিক্তর ইয়ানুকোভিচ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে উত্তেজনা কমলেও ক্রিমিয়ায় উত্তেজনা বেড়ে যায়। রুশপন্থীরা ক্রিমিয়ার পার্লামেন্টসহ সরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভবনের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে নির্ধারিত একটি বাণিজ্য চুক্তি না করায় ইয়ানুকোভিচের সরকারের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন রুশবিরোধী ইউক্রেনীয়রা। তাদের অভিযোগ, রাশিয়াকে সুবিধা দিতে চুক্তিটি করেনি ইয়ানুকোভিচের সরকার।

‘প্রাণে’ বাঁচতে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে মস্কোয় পালিয়ে গেছেন ইয়ানুকোভিচ। শুক্রবার রাশিয়া সংবাদ সম্মেলন করে নিজেকে ইউক্রেনের ‘বৈধ’ প্রেসিডেন্ট দাবি করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৯ ঘণ্টা, আপডেটেড: ২২২৩ ঘণ্টা, মার্চ ০১, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।