কায়রো: মিশরজুড়ে চতুর্থ দিনের মতো শুক্রবার গণবিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। জুমার নামাজের পর এই বিক্ষোভ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
টানা চারদিন ধরে চলা সরকার বিরোধী আন্দোলনে মিশরে ইন্টারনেট এবং মোবাইলে এসএমএস বিঘিœত হওয়ার পর এই হুঁশিয়ারি দেওয়া হলো।
এদিকে অব্যাহত গণ আন্দোলনের মুখে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, সহিংসতা কোনো সমস্যার সমাধান হতে পারে না। তিনি সেখানকার সব পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
তাছাড়া দেশটির রানৈতিক সংস্কারের ব্যাপারেও প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারকের ওপর চাপ সৃষ্টি করছেন।
মিশরের সবচেয়ে বড় বিরোধী দল মুসলিম ব্রাদারহুড শুক্রবারের বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে।
গণবিক্ষোভকে সামনে রেখে রাতজুড়ে ধরপাকড়ে মুসলিম ব্রাদারহুডের ২০ সদস্যকে আটক করা হয়েছে বলে এএফপিকে জানিয়েছেন সংগঠনটির আইনজীবী আবদেল মুনিম আবদেল মাকসুদ।
মিশরের নোবেলজয়ী মোহাম্মেদ এল বারাদিও বৃহস্পতিবার ভিয়েনা থেকে দেশে ফিরে শুক্রবারের বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
এর আগে তিনি ভিয়েনায় বলেছেন, আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে তিনি প্রস্তুত রয়েছেন।
তবে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, সরকারবিরোধী আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে চুড়ান্ত ব্যবস্থা নিতে পারেন তিনি।
গত তিন দশকের মধ্যে এবারই প্রথমবারের মতো মিশরজুড়ে তীব্র সরকার বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়।
গত তিন দিনের বিক্ষোভে চার আন্দোলনকারী ও দুই পুলিশ সদস্যসহ মোট সাত জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে শতাধিক।
আন্দোলন শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় এক হাজার আন্দোলনকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ অবশ্য জানিয়েছে, কায়রো, সুয়েজ আলেকজান্দ্রিয়াসহ বিভিন্ন শহরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আট আন্দোলনকারী এবং এক জন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছে।
এদিকে দেশটির ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা জানিয়েছেন, ইন্টারনেট সার্ভিস নেই বললেই চলে। একইভাবে মোবাইলের এসএমএস সার্ভিসও পাওয়া যাচ্ছে না।
এর আগে বুধবার আন্দোলনের ওপর নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা সত্ত্বেও রাজপথে থাকার ঘোষণা দেয় গণতন্ত্রীপন্থী যুবদল এপ্রিল সিক্স মুভমেন্ট।
আন্দোলনকারীরা মোবাইল এসএমএস এবং ফেসবুকের মাধ্যমে জনগণের কাছে আন্দোলনের ব্যাপারে সামাজিক যোগাযোগ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছে।
অনদিকে রাজপথের আন্দোলনের প্রভাব পড়েছে দেশটির অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডেও। বৃহস্পতিবার মিশরের স্টক এক্সচেঞ্জে সূচক ৬ দশমিক ২ শতাংশ কমে গেলে লেনদেন বন্ধ করে দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার শাসক দলের সেক্রেটারি জেনারেল সাংবাদিকদের জানান, আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের সঙ্গে আলোচনার দরজা খোলা রয়েছে।
আন্দোলকারীদের বিভিন্ন দাবির মধ্যে রয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ, দীর্ঘদিন ধরে জারি থাকা জরুরী অবস্থা প্রত্যাহার এবং ন্যূনতম মুজুরি বৃদ্ধি।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১১