প্যারিস: হাজার হাজার প্রতিবাদকারীর সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষের কারণে বিভিন্ন দেশ মিশর সফরের ব্যাপারে নতুন করে সতর্কতা জারি করেছে। শনিবার এ সতর্কতা জারি করার পর বিভিন্ন দেশের ট্রাভেল এজেন্সিগুলো মিশর সফর বাতিল করে।
এদিকে, চলমান বিক্ষোভের কারণে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ কর্তৃপক্ষ কায়রোতে তার ফাইটগুলোর সময়সূচির পরিবতর্ন করেছে। কায়রোর বাইরে ফ্লাইটগুলো উঠানামা করবে বলে জানিয়েছে।
ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ থেকে জানানো হয়েছে, কোনো যাত্রী তার সফরের সময়সূচি পরিবর্তন করতে চাইলে তা পারবে। যাত্রীরা অর্থ ফেরত নিতে পারবে অথবা অন্য কোনো গন্তব্যেও ভ্রমণে যেতে পারবে না।
বিমান প্রতিষ্ঠানটি আরও জানায়, একটি বিমান কায়রোর উদ্দেশে যাত্রা পথে রয়েছে। সেখানে অনেক যাত্রী ব্রিটেনের গ্যাটউইট বিমানবন্দরের আসার জন্য অপেক্ষা করছেন।
পর্যটন কোম্পানি টমাস কুক ইউকে অ্যান্ড আয়ারল্যান্ড জানিয়েছে, ‘লোহিত সাগর থেকে আমাদের অভিজ্ঞ দল জানিয়েছে, চলমান বিক্ষোভের কারণে সেখানে কোনো পর্যটন স্থানে প্রভাব পড়বে না। ’
এদিকে, জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, ‘যারা মিশর ভ্রমণ বা দেশটির কোনো অংশে অবস্থানের পরিকল্পনা করছেন তাদের তা বাতিলের পরামর্শ দিচ্ছে জাপানের সরকার। ’
একইসঙ্গে যারা এরইমধ্যে মিশরে অবস্থান করছেন তাদের সম্ভব হলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দেশটি ত্যাগের বা বিক্ষোভ-সমাবেশ থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘কখনোই বিক্ষোভকারী বা পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে ছবি তুলবেন না। ’
অস্ট্রেলিয়াও মিশর বিষয়ে নতুন করে নিরাপত্তা সতর্কতা জারি করে। এক্ষেত্রে মিশর সফরের আগে পর্যটকদের দ্বিতীয়বার ভাবার আহ্বান জানানো হয়।
দেশটির পর্যটন পরামর্শদাতারা মিশর সফরের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে, যাতে বলা হয়েছে, ‘আপনার ভ্রমণের প্রয়োজনীয়তা পুনর্বিবেচনা করুন। ’ বর্তমানে তিউনিসিয়া ও লেবাননেও এ সতর্কতা জারি আছে। অস্ট্রেলিয়ার প্রথম পর্যায়ের সতর্কতায় বলা হয়, ‘ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকুন। ”
এদিকে, ইউরোপের বেলজিয়ান ট্রাভেল এজেন্টরা আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত মিশরে পূর্ব নির্ধারিত সব প্যাকেজ ভ্রমণ বাতিল করেছে। তবে যারা এরইমধ্যে সেখানে আছেন তাদের ফিরে আসার কোনো পরিকল্পনা করেননি।
মূলত কায়রো ও আলেকজান্দ্রিয়ায় ভ্রমণের বিষয়ে সতর্ক করা হচ্ছে বলে জাতীয় ট্রাভেল এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন থেকে জানানো হয়। তবে মিশরের লোহিত সাগরের পাশ্ববর্তী অবকাশ যাপন কেন্দ্রের পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে বলে জানানো হয়।
বর্তমানে মিশরে ৪ হাজার বেলজিয়ান পর্যটক আছেন এবং তাদের অধিকাংশই অবকাশ যাপন কেন্দ্রে অবস্থান করছেন বলে অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান ভেরলে ডি বোয়েক জানান।
এর আগে শুক্রবার থেকেই মিশর ভ্রমণের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করে ফ্রান্সের ট্রাভেল এজেন্টরা। পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য শনিবার আবারও তারা বৈঠকে বসবেন বলে জানা যায়।
এছাড়াও অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, ব্রিটেন, বুলগেরিয়া, ডেনমার্ক, ফ্রান্স এবং সুইডেনসহ যুক্তরাজ্য ও ইসরায়েলও মিশর সফরের ওপর সতর্কতা জারি করেছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১১