ঢাকা: কারও সঙ্গে প্রণয়ে জড়িয়ে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন আকাশসম, শত-সহস্র পরিকল্পনায় এঁকে চলেছেন ভবিষ্যতের চলার পথ। অথবা প্রণয়কে পরিণয়ে রূপ দিয়ে সে পথেই হাঁটতে শুরু করেছেন দু’জনের মনোপূত গতিতে! দু’জন দু’জনের চাঁদমুখের হাসি ধরে রাখতে জীবন বাজিও রাখতে পারেন।
অথচ মুখ ফসকে বেরিয়ে পড়া একটি মাত্র শব্দই সংকীর্ণ করে দিতে পারে স্বপ্নাকাশ, রুদ্ধ করে দিতে পারে দু’জনের চলার পথ। এমনকি দু’টি হৃদয়ের বন্ধনও ছিন্ন হয়ে যেতে পারে। বন্ধন অটুট রাখতে তাই এ ক্ষেত্রে বেশি সচেতন থাকতে হয় পুরুষদেরই। কারণ কোনো ধরনের শব্দ-বাক্য সবচেয়ে বেশি ব্যথিত করে নারীদেরই।
মনোবিদদের উদ্ধৃতি দিয়ে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ায় এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে পুরুষ সঙ্গীদের সতর্ক থেকে ১০টি কথা কখনোই প্রেয়সীকে না বলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
* এই পোশাকে তোমায় একটু মোটা লাগছে!
কোনো মেয়েই আসলে কখনো নিজেকে স্থূলকায় মনে করে না! স্বভাবতই তাকে কেউ মোটা বলুক সেটা কখনোই সে শুনতে চাইবে না। আর তাকে মোটা লাগছে বলে বেফাঁস মন্তব্য যদি প্রেমিক অথবা স্বামী করে ফেলে, তাহলে তো রক্ষা নেই! পাল্টা প্রশ্নও চলে আসতে পারে, ‘তাহলে কোন চিকনি চামেলির দিকে নজর পড়েছে শুনি!’
* সাজগোজে কেন এতো বেশি খরচ করো?
অন্য ১০ জনের মতোই আপনার প্রেমিকা অথবা স্ত্রীও বিউটি পার্লারে একটু সময় বেশি কাটাবেন এবং এর পেছনে খরচও পড়বে। এই অর্থ যোগান দিলেও কখনোই মুখ ফসকে বরে ফেলবেন না, ‘সাজুগুজু করতে এতো সময় আর টাকা অপচয় কেন করো?’ ‘তোমার জন্যই তো এমন সাজুগুজু’ বলে যেমন পাল্টা উত্তর চলে আসবে, তেমনি বড় ধরনের কোনো কথাও আপনাকে হজম করতে হতে পারে!
* ওয়াও, মেয়েটা কতো হট!
হোন তিনি প্রিয়াংকা চোপড়া কিংবা অ্যাঞ্জেলিনা জোলি, অথবা তাদের চেয়ে কোনো সুন্দরী! নিজের প্রেমিকা বা স্ত্রীর সামনে কখনোই তার দিকে তাকানো যাবে না, তার রূপের প্রশংসা করা তো দূরের কথা!
* তোমার বন্ধুদের আমার ভাল লাগে না!
আপনি যেমন নিজের বন্ধুদের নিয়ে বেড়াতে পছন্দ করেন, তেমনি সঙ্গিনীও তার বন্ধুদের সঙ্গে বেড়াতে পছন্দ করেন। এটা না বুঝে কখনোই সঙ্গিনীর বন্ধুদের ব্যাপারে আপত্তিকর মন্তব্য করবেন না। খুব বিরক্তিকর না হলে কখনোই তাদের ভাল না লাগার বিষয়টি প্রকাশ করবেন না! তাছাড়া, বন্ধুত্বই তো জীবনের সঙ্গে বাস্তবতার পরিচয় করিয়ে দেয়।
* বন্ধুদের সঙ্গে অনেক ভালো সময় কাটালাম!
বন্ধুদের সঙ্গে আপনি সবচেয়ে ভাল সময় কাটাতেই পারেন, তবে এটা কখনোই প্রেমিকা বা স্ত্রীর সামনে প্রকাশ করবেন না বা তাকে বুঝতে দেবেন না। কারণ তিনি সবসময়ই চান, আপনার সবচেয়ে ভালো মুহূর্ত তার সঙ্গেই কাটুক! আপনার প্রেমিকা বা স্ত্রীর সবচেয়ে ভালো লাগার পাত্র হিসেবে নিজেকে ছাড়া আপনি যেমন অন্য কাউকে দেখতে চান না, তেমনি প্রেমিকা বা স্ত্রীও এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নন।
* এই ম্যাচ শেষ হওয়ার আগে বের হতে পারবো না!
আপনার সঙ্গিনী খেলার প্রতি বিরক্ত না হলেও তার আবদারের সামনে খেলাকে বাধা হিসেবে দাঁড় করাবেন না। তিনি আপনাকে নিয়ে বেড়াতে বের হওয়ার ইচ্ছে দেখালে কখনোই খেলা দেখার অজুহাতে বলবেন না, এই ম্যাচ শেষ হওয়া ছাড়া আমি বের হতে পারবো না!
* তুমি আগের সঙ্গিনীকে মনে করিয়ে দিলে!
হয়তো আপনার আগের প্রণয় বা পরিণয় জেনে বুঝে আপনার জীবনে নতুন করে প্রবেশ করেছেন তিনি। কিন্তু সব ব্যাপারেই আগের প্রেয়সীকে নিয়ে আসবেন না। নতুন প্রেয়সীর খাওয়া-দাওয়া, চলা-ফেরা, কথা-বার্তায় বলবেন না, ‘তোমাতে আমার আগের প্রেয়সীর প্রতিচ্ছবি ভাসে’! এতে আপনার জগতে ঘর বাঁধতে তিনি যে স্বপ্ন দেখেছেন সেটা ভাঙতে শুরু করতে পারে।
* আমার মায়ের হাতের রান্নাই সবচেয়ে সুস্বাদু!
যেকোনো নারীই নিজের রান্নার প্রশংসায় গর্ববোধ করেন। তাই কখনোই সঙ্গিনীর সামনে বলবেন না, ‘আমা মায়ের হাতের রান্না পৃথিবীর যে কোনো নারীর হাতের রান্নার চেয়ে সুস্বাদু’। এমনটি বলে প্রেয়সীর হাতের রান্নার অবজ্ঞা করায় পরবর্তী সময়ে আপনাকে কেবল পোড়া খাবারই হজম করতে হতে পারে।
* তোমার মাকে দেখতে তোমার বোনের মতো লাগে!
যেকোনো মেয়েই তার মাকে অনেক ভালবাসে। মায়ের প্রশংসাও শুনতে পছন্দ করে। তবে প্রশংসা করতে গিয়ে যেন মা-মেয়ের মধ্যে তুলনা না হয়ে যায়, অন্তত দেখতে কাকে কেমন লাগে এ দৃষ্টিকোণ থেকে!
*আমার একান্ত সময় দরকার
একজন মানুষের একান্ত সময় দরকার পড়তে পারে। তবে সেটা যেন প্রেয়সীর সামনেই প্রকাশ না হয়ে যায়। আপনি যদি স্ত্রীকে বলেন বা বোঝাতে চেষ্টা করেন, ‘আমার একান্ত সময় দরকার’! তবে তিনিও আপনাকে বুঝিয়ে দেবেন, ‘আমি কি তোমার বিরক্তির কারণ’! অতএব, সময় দরকার হলে সেটা কৌশলেই বের করে নিন!
বাংলাদেশ সময়: ০১২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২১০৪