নিউইয়র্ক: তিউনিসিয়া এবং মিশরের সরকারের পতনের পর সামাজিক যোগাযোগের সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম ফেসবুকের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবে প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষ কর্মকর্তারা এ মুহূর্তে ঐতিহাসিক মুহূর্ত পার করছেন: মিশর, তিউনিসিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের গণতান্ত্রিক পরিবর্তনে সামাজিক যোগাযোগের এই ওয়েবসাইটটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে, এখনো রাখছে।
মিশর এবং তিউনিসিয়ায় সরকার বিরোধী বিক্ষোভ চলাকালীন দেশ দুটির সরকার ফেসবুক বন্ধ করে দেয়। কারণ বিক্ষোভকারীরা ফেসবুক ব্যবহার করে অন্যদের মধ্যেও বিপ্লরের দামামা ছড়িয়ে দেয়। ফলে সরকার বিরোধী বিক্ষোভকারীদের সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে যায়। পরিণতিতে গণবিস্ফোরণের মুখে মিশরের প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারক এবং তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট জাইন আল-আবেদিন বেন আলি ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
মানবাধিকার নিয়ে কাজ করেন এমন একজন আইনজীবি সুসানা লিলা বলেন, সাধারণ জনতা ফেসবুককে রাজনৈতিক আন্দোলনের প্লাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করছেন।
গত নভেম্বরে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ মিশরের একটি অন্যতম জনপ্রিয় পেজ বন্ধ করে দেয় এবং ওই পেজের প্রশাসক (অ্যাডমিনিস্ট্রেটর) ওয়েল ঘোনিমকে ১২দিন আটকে রাখে মিশরীয় সরকার। ঘোনিম গুগলের একজন নির্বাহী কর্মকর্তাও, যিনি ছদ্মনাম ব্যবহার করে ফেসবুকে ওই পেজ খোলেন, যা মিশরের সরকার বিরোধী বিক্ষোভকারীদের উস্কে দেয়। যদিও নাম ব্যবহার না করে ঘোনিমের ওই পেজ খোলা পুরোপুরিই ফেসবুকের নিয়ম বিরোধী।
গত সপ্তাহে ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের ডেমোক্রাট সিনেটর রিচার্ড জে ডারবিন ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী মার্ক জুকারবার্গের কাছে লেখা এক চিঠিতে অনুরোধ করেন, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারকর্মীদের রক্ষার ব্যাপারে ফেসবুকের তাৎক্ষণিক এবং কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া উচিৎ। বিশেষ করে, যারা এটা ব্যবহার করেন। তিনি আরও বলেন, মিশর এবং তিউনিসিয়ার সাম্প্রতিক ঘটনা ফেসবুকের গুরুত্ব আর বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু তিনি উদ্বিগ্ন এজন্য যে, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষা করার মতো পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ফেসবুকের নেই।
ফেসবুকের মতো টুইটার এবং ইউটিউবও মিশর এবং তিউনিসিয়ায় বিক্ষোভ ছড়াতে সমান ভূমিকা পালন করেছে। বর্তমানে আলজেরিয়া, সিরিয়া,মরক্কো, ইরান, বাহরাইনে যে সরকার বিরোধী বিক্ষোভ চলছে তাতেও ফেসবুকের ভূমিকার কথা স্বীকৃত।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১১