নয়াদিল্লি: নির্বাচনে ভারতে সব রাজনৈতিক দলেরই অর্থের জোগান আসে কালো টাকার উৎস থেকে বলে এ মন্তব্য করেছেন ভারতের মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান। খবর এনডিটিভির।
বুধবার ইন্ডিয়ান অব দ্য ইয়ার অনুষ্ঠানে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, সব রাজনৈতিক দলই নির্বাচনী ব্যয় বহন করে অবৈধ টাকা থেকে।
ভারতের ইতিহাসে সম্ভবত তিনিই প্রথম কোনো রাজনীতিক যিনি এ অপ্রীতিকর সত্যটি স্বীকার করলেন।
চৌহান আরো বলেন, পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচন প্রতি ৫ বছর পর পর একই সময় অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত। সেই সঙ্গে নির্বাচনে ব্যয় বহনের জন্য একটি সরকারি তহবিল রাখারও বিধান রাখা উচিত। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, নির্বাচনের সময় আমাদের সবারই অনুদানের প্রয়োজন হয়। আর এ অনুদানের টাকা যারা দেন তারা তাদের স্বার্থেই দিয়ে থাকেন। আর নিশ্চয় সেটা সাদা টাকা নয়। কোন দলই টাকা ছাড়া নির্বাচনে লড়তে পারে না।
সম্প্রতি দেশের বাইরে রাখা ভারতীয়দের কালো টাকার ব্যাপারে যথেষ্ট তথ্য না থাকায় সর্বোচ্চ আদালত এবং বিরোধী দলগুলোর ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে সরকার।
সাবেক আইনমন্ত্রী রাম জেঠমালানিসহ একদল সাধারণ নাগরিক সুপ্রিম কোর্টে একটি পিটিশন দাখিল করেছে। বিদেশি ব্যাংকে ভারতীয়দের রাখা প্রচুর পরিমাণ কালো টাকা দেশে ফিরিয়ে আনতে তাগিদ দেওয়া হয় ওই পিটিশনে। জেঠমালানি মনে করেন, দেশের বাইরে থাকা কালো টাকার পরিমাণ এক লাখ কোটি মার্কিন ডলার পর্যন্ত হতে পারে।
আদালতের আদেশের পর সরকার সুপ্রিম কোর্টে ২৬ জন ভারতীয়ের একটি তালিকা দিয়েছে যাদের জার্মানির লিখটেনস্টেইন ব্যাংকে ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট রয়েছে। অবশ্য জার্মানির সঙ্গে করা চুক্তির শর্তের ব্যত্যয় ঘটবে এ যুক্তিতে তালিকাভুক্তদের নাম প্রকাশ করা হয়নি। তবে আদালত সরকারের এ পদক্ষেপে অসন্তোষ প্রকাশ করলে কেন্দ্রীয় সরকার এ বলে আশ্বস্ত করেছে যে, বিদেশি ব্যাংকে টাকা রয়েছে এ অভিযোগে কেউ যদি মামলা দায়ের করেন তাহলেই অভিযুক্তদের নাম প্রকাশ করা হবে।
এদিকে, বিচারপতি বি সুদর্শন রেড্ডির নেতৃত্বে গঠিত বেঞ্চের সামনে অ্যাটর্নি জেনারেল গোপাল সুব্রমনিয়াম বলেন, দেশের বাইরের ব্যাংকে যারা কালো টাকা রেখেছেন সরকার তাদের কারণ দর্শাও নোটিস দিয়েছে। আর এসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে কেউ মামলা দায়ের করলে জনসমক্ষে তাদের নাম প্রকাশ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪৯ ঘণ্টা ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১১